Advertisement
E-Paper

দ্বন্দ্বের মারামারি জারি বাহিরীতে, জখম চার কর্মী

সেই দ্বন্দ্ব যে মিটছে না কিছুতেই, তা স্পষ্ট হয়েছে এ দিন ডোমনপুর গ্রামের ঘটনাতেও। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক ধরে ডোমনপুরে রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে গ্রামোন্নয়ন বিষয়ক নানা বিষয় নিয়ে গদাধর ও কাজল শিবিরের অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৬ ০৩:০৮
জখম তৃণমূল কর্মী। শুক্রবার বোলপুর হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

জখম তৃণমূল কর্মী। শুক্রবার বোলপুর হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

ভোটের প্রচার জোরকদমে শুরু করে দিয়েছেন দলীয় প্রার্থী। কিন্তু, নানুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটার কোনও লক্ষণ নেই।

শুক্রবার দুপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা, মারামারিতে জখম হলেন দু’পক্ষের চার জন। গুরুতর জখম অবস্থায় চার জনকেই বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’পক্ষের দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বোলপুর থানার বাহিরী-পাঁচশোয়া পঞ্চায়েতের ডোমনপুর গ্রামের এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও, রাত পর্যন্ত কোনও পক্ষই লিখিত অভিযোগ থানায় করেনি। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় গ্রামে পুলিশ টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

বাহিরী-পাঁচশোয়া অঞ্চলটি নানুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এবং বোলপুর-নানুর ব্লকের সীমানায়। ভোট ঘোষণার অনেক আগে থেকেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে তেতে রয়েছে এই এলাকা। এক দিকে নানুরের বিদায়ী বিধায়ক তথা এ বারের তৃণমূল প্রার্থী গদাধর হাজরা। অন্য দিকে রয়েছেন নানুরের দাপুটে তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। মাস কয়েক আগে থেকেই এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে বারবার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই নেতার অনুগামীরা। বোমা-গুলি কিছুই বাদ যায়নি। গদাধরবাবুর অনুগামী তিন তৃণমূল কর্মী খুনও হয়েছেন।

সেই দ্বন্দ্ব যে মিটছে না কিছুতেই, তা স্পষ্ট হয়েছে এ দিন ডোমনপুর গ্রামের ঘটনাতেও। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক ধরে ডোমনপুরে রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে গ্রামোন্নয়ন বিষয়ক নানা বিষয় নিয়ে গদাধর ও কাজল শিবিরের অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। অভিযোগ, এ দিন দুপুরে মসজিদ থেকে ফেরার পথে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ বাধে। প্রথমে বচসা।পরে মারপিটে জড়িয়ে যায় উভয় পক্ষ। গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে চলে বোমাবাজিও। চার জন জখম হন। বোলপুর হাসপাতালের বেডে শুয়ে স্থানীয় পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা এবং গদাধর-অনুগামী হিসাবে পরিচিত মীর আনোয়ার আলি বলেন, ‘‘এ দিন মসজিদ থেকে ফেরার পথে দুপুর দেড়টা নাগাদ গ্রামের কয়েক জন লাঠি, রড নিয়ে চড়াও হয়। ওই গ্রামের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দিন কয়েক আগে ওদের সঙ্গে বচসা হয়েছিল। সেই আক্রোশেই আমাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে।’’ কাজল শেখে অনুগামী পূর্বপাড়ার বাসিন্দা শেখ সামসুলের দাবি, কোনও কারণ ছাড়াই এ দিন তাঁদেরকে মারধর করেছে বিদায়ী বিধায়কের লোকজন।

ভোটের একেবারে মুখে নতুন করে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ, তাঁদের অভিজ্ঞতা বলছে, যুযুধান দুই শিবিরের লড়াইয়ে এর আগে এলাকার স্বাভাবিক জনজীবন বারবার বিপর্যস্ত হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা নিরাপদে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারবে কি না, তা নিয়েও সংশয় ছিল অভিভাবকদের মহলে। কেউ কেউ আবার এহেন আশঙ্কার কথা জানিয়ে লিখিত ভাবে পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে তৃণমূলের বোলপুর ব্লক সভাপতি রহিম চৌধুরী বলেন, ‘‘ডোমনপুরের ঘটনা সম্পূর্ণ গ্রাম্য বিবাদ। গ্রামের উন্নয়ন সংক্রান্ত কিছু কাজকর্ম নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যের ঝামেলা। এটি কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়।”

এ দিনই বোলপুরের বেজরা গ্রামে তৃণমূলের দলীয় পতাকা পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। এই মর্মে বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। এ দিন তৃণমূলের উদ্যোগে ওই গ্রামের ঠাকুরতলা এলাকায় দলীয় পতাকা লাগানো হয়। রহিম চৌধুরীর অভিযোগ, এ দিন সকালে এলাকার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা গদাধর হাজরার সমর্থনে ঠাকুরতলা এলাকায় দলীয় পতাকা লাগিয়েছিলেন। গোটা দশেক পতাকা সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা পুড়িয়ে দিয়েছে। সিপিএম অবশ্য অভিযোগ উডিয়ে দিয়েছে। অন্য দিকে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পাড়ুই থেকে ৫৬টি তাজা বোমা-সহ একটি পাইপগান ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত এবং শুক্রবার সকালে পাড়ুই থানার বেলপাতা গ্রাম-সহ আশপাশের এলাকায় পাড়ুই থানা ও কেন্দ্রীয় বাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে তা উদ্ধার করে। তাজা বোমাগুলিকে এ দিনই নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

clash injured election 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy