Advertisement
২১ মে ২০২৪

ভোটে তৃণমূলের হার কেন, দ্বন্দ্বকে দুষে প্রচারপত্র

পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে হারের কারণ নিয়ে তৃণমূলেরই জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বন্দ্বকে কাঠগড়ায় তুলে লিফলেট ছড়িয়েছে। ‘তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় তৃণমূল কর্মী’ উল্লেখ করা ওই লিফলেট নিয়ে বুধবার পুরুলিয়া শহরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা করা প্রচারপত্র।

তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা করা প্রচারপত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৭:৩০
Share: Save:

পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে হারের কারণ নিয়ে তৃণমূলেরই জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বন্দ্বকে কাঠগড়ায় তুলে লিফলেট ছড়িয়েছে। ‘তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় তৃণমূল কর্মী’ উল্লেখ করা ওই লিফলেট নিয়ে বুধবার পুরুলিয়া শহরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ওই লিফলেট ছড়ানোর পিছনে কারা রয়েছে তা অবশ্য তৃণমূলের নেতৃত্ব চিহ্নিত করতে পারেননি।

এই প্রচারপত্রে হারের পিছনে ন’টি কারণের উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে বিরোধীদের জোটে যেমন তাদের কর্মীদের মনোবল বেড়েছিল, উল্টে তৃণমূলে প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়। তেলেডি পাম্পের জল কেন শহরের মানুষকে ভোটের আগে দেওয়া গেল না তা নিয়ে শহরবাসী এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক কে পি সিংহদেও ও জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর মতান্তরকেই দায়ী বলে ভেবে নিয়েছিল। ভোটের কয়েক মাস আগে তৃণমূলের কিছু কাউন্সিলরের দলেরই পুরপ্রধান কে পি সিংহদেও-র বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসার চেষ্টা, পুরুলিয়া ২ ব্লকে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টিও হারের কারণ বলে মনে করা হয়েছে ওই প্রচারপত্রে। প্রশ্ন করা হয়েছে, খোদ জেলা সভাপতি এই কেন্দ্র নিয়ে কতটা আন্তরিক ছিলেন? কর্মীদের নির্বাচনের কাজে ঠিকমতো টাকাও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

দলের একটি সূত্রে খবর, প্রচারপত্রটি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও পাঠানো হয়েছে। আগামী শনিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোরে দলের রাজনৈতিক কর্মশালা রয়েছে। তার আগে পুরুলিয়া বিধানসভায় দলের বিপর্যয় নিয়ে এমন প্রচারপত্রে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব স্পষ্টতই অস্বস্তিতে পড়েছেন। তবে দলের বহু নেতা আড়ালে স্বীকার করছেন, লিফলেটে উল্লেখিত কারণগুলোর কয়েকটিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না।

পুরসভায় অনাস্থা-কাণ্ডে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল দলের পুরুলিয়া শহর কমিটির সভাপতি বৈদ্যনাথ মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তিনি এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘এখনও প্রচারপত্রটি হাতে পাইনি। কারা এটা প্রকাশ করেছেন বুঝতে পারছি না। তদন্ত করে দেখছি কে বা কারা এই প্রচারপত্রটি প্রকাশ করেছে। এই বিষয় নিয়ে এখন কোনও মন্তব্য করব না।’’

পুরুলিয়া ২ ব্লকের বাসিন্দা তথা দলের জেলা কোর কমিটির সদস্য হেমন্ত রজক দলে শান্তিরাম মাহাতোর অনুগামী হিসেবে পরিচিত। ভোটের আগে খবর ছড়িয়ে ছিল, শারীরিক অসুস্থতার কারণে কে পি সিংহ দেও প্রার্থী হতে না পারলে হেমন্তবাবুকে প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন জেলা সভাপতি। সেই হেমন্তবাবু দাবি করেছেন, ‘‘আমি পুরুলিয়া বিধানসভা কমিটির সদস্য। কিন্তু এই প্রচারপত্রের কথা জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।’’

দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘আমি কলকাতায় রয়েছি। সবে প্রচারপত্রের বিষয়টি জানলাম। না দেখে কোনও মন্তব্য করব না।’’ কে পি সিংহ দেও-ও জানিয়েছেন, তিনিও প্রচারপত্রের বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাই মন্তব্য করতে চাননি। তবে একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘জেলার ন’টি আসনের দায়িত্বই তো জেলা সভাপতির কাঁধে।’’

—নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Leaflet TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE