শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে খুন করে দেহ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। বুধবার রঘুনাথপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক নন্দন দেববর্মণ এই রায় দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত বিনোদ গড়াইয়ের বাড়ি রঘুনাথপুর থানার রামগড় গ্রামে। এ দিন বিচারক বধূ নির্যাতন, খুন ও অপরাধের স্বাক্ষ্য প্রমাণ লোপাটের দায়ে বিনোদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সঙ্গে ৯০০০ টাকা জরিমানা ধার্য করেন। অনাদায়ে আরও ছ’মাস সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত এই খুনের ঘটনার ১৮ বছর পরে সাজা পেল অভিযুক্ত।
সরকার পক্ষের কৌঁসুলী অমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১৯৯৭ সালের ১১ ফ্রেবুয়ারি শ্বশুরবাড়িতে খুন হন বধূ চিন্তা গড়াই। প্রথমে তাঁকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। পরে তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওইদিনই রঘুনাথপুর থানায় মেয়ের মৃত্যুর ঘটনার জামাই, শ্বশুর-সহ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির ছ’জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন চিন্তাদেবীর বাবা বৈদ্যনাথ গড়াই। ঘটনার তিন বছর আগে আদ্রা থানার জিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা বৈদ্যনাথবাবু মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন রঘুনাথপুর থানার রামগড়ের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর বিনোদের সাথে।
এ দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন বৈদ্যনাথবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার দিন সকালে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে আমাকে জানানো হয়েছিল আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে চিন্তার। খবর পেয়ে রামগড়ে গিয়ে দেখেছিলাম মেয়ের সর্বাঙ্গ আগুনে পুড়ে দিয়েছে। কিন্তু জিব বেরিয়ে রয়েছে। সেটা দেখেই সন্দেহ হয়। থানায় খুনের অভিযোগ জানিয়েছিলাম।’’ সরকারী কৌঁসুলী বলেন, ‘‘বিচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল চিন্তাদেবীর মৃতদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। তাতে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক উল্লেখ করেছিলেন শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই বধূকে।”
ঘটনার দিনই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ছয় অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের এক বছর চারমাস পরে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। রঘুনাথপুর আদালতে মামলা শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালের মার্চ মাস থেকে। ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। বিচার চলাকালীন সময়ে মৃত্যু হয়েছে সাজাপ্রাপ্ত বিনোদের বাবা শুকলাল গড়াইয়ের। এ দিন অবশ্য বাকি পাঁচ অভিযুক্তকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy