Advertisement
E-Paper

ভোটযুদ্ধে ছড়ার ছড়াছড়ি 

সাধারণ মানুষের চোখ টানছে ছড়াগুলি। রাস্তায় সাইকেল থামিয়ে দেওয়ালে ছড়া পড়তে দেখা যাচ্ছে অনেককেই। পড়ার পর ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিচ্ছেন তাঁরা।

রথীন্দ্রনাথ মাহাতো

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ১০:০৫
বরাবাজারের বেড়াদা বিজেপি’র দেওয়াল লিখন।  ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো

বরাবাজারের বেড়াদা বিজেপি’র দেওয়াল লিখন। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো

ভোট আসতেই ছড়ার ছড়াছড়ি বান্দোয়ানের দেওয়ালে-দেওয়ালে। তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি বা কংগ্রেস— ছড়ায় একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় কসুর করছে না কেউই।

নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের পাশে প্রতীক আঁকার পাশাপাশি এবার দেওয়াল লিখনে গুরুত্ব পাচ্ছে রাজনৈতিক টিপ্পনি ও ছড়া। আকর্ষণীয় ছড়া, টিপ্পনি এবং ব্যঙ্গচিত্রে কে কাকে কতটা বেশি বিদ্ধ করতে পারে, তার লড়াই চলছে দেওয়ালে। বলা বাহুল্য, সাধারণ মানুষের চোখ টানছে ছড়াগুলি। রাস্তায় সাইকেল থামিয়ে দেওয়ালে ছড়া পড়তে দেখা যাচ্ছে অনেককেই। পড়ার পর ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিচ্ছেন তাঁরা।

রবিবার বান্দোয়ানের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে চোখে পড়েছে বহু ব্যঙ্গ-রস মিশ্রিত রাজনৈতিক ছড়া। তৃণমূলের কর্মীরা বান্দোয়ানে একটি দেওয়ালে লিখেছেন, ‘হাত-হাতুড়ি কাস্তে তাড়া/ এবার হবে ভারত ছাড়া।’ তারপর বিজেপিকে বিঁধতে তৃণমূলের ব্যঙ্গ, ‘কালো টাকা ফিরিয়ে আনতে ১ টিপুন/ বছরে দু’কোটি চাকরির জন্য ২ টিপুন/ ফের মোদীর ঢপ শুনতে হ্যাস টিপুন’। পিছিয়ে নেই বাম-বিজেপিও। তৃণমূলের ওই দেওয়ালের অদূরের একটি দেওয়ালে তৃণমূলকে ব্যঙ্গ করে দেওয়াল লিখেছেন বিজেপি কর্মীরা। লেখা হয়েছে, বাড়িতে ঘাসফুল রাখলে ছাগলে খাবে/ পদ্মফুল রাখলে

লক্ষ্মী আসবে’।

ব্যঙ্গে বিরোধীদের কটাক্ষ করতে সিপিএমের জুরি মেলা ভার। সংখ্যার বিচারে শাসকদলের তুলনায় সিপিএমের দেওয়াল লিখন কম চোখে পড়লেও ব্যঙ্গাত্মক দেওয়াল লেখায় বামেরা বিরোধীদের থেকে এবারও অনেকটা বেশি এগিয়ে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। বাম প্রার্থীকে জেতানোর জন্য বান্দোয়ানেই সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াই এফের কর্মীরা লিখেছেন, ‘প্রধানমত্রী দিচ্ছে গুল, দেখছে সবাই সরষে ফুল। দিদির পায়ে হাওয়াই চটি, ভাই-ভাইপোরা কোটিপতি’।

দেওয়ালের ছড়া এবং ব্যঙ্গচিত্র মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করে অনেকে আপলোড করে দিচ্ছেন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক মাধ্যমে। ফলে কার্টুন, ব্যঙ্গচিত্র, ছড়া গ্রাম-শহরের সীমানা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ছে গোটা দুনিয়ায়।

ভোটের মরসুমে দেওয়াল লিছে দু’পয়সা রোজগার করেন শিল্পীরা। এ বছরেও দেওয়াল লেখার ডাক পাচ্ছেন বান্দোয়ানের নেপাল মাহাতো, মনোজ করের মতে শিল্পীরাও। খুশি তাঁরাও। দুই শিল্পী জানাচ্ছেন, ‘‘ভোটের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজন এসে দেওয়াল লেখার তাগাদা দেয়। এই সময় রোজগারও ভালো হয়। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও ভোটের দু’মাস খাওয়ার সময়ও পাওয়া যায় না।’’

দেওয়ালে আঁকা কার্টুন- ছড়ায় অনেকে যেমন প্রতিভার খোঁজ পাচ্ছেন, তেমনই অনেকে মনে করছেন, দেওয়ালে ‘কু-কথা’ লিখে বিরোধীকে আক্রমণ করা এখন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন বান্দোয়ানের বাসিন্দা তথা প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ভবতারণ মাহাতোর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বর্তমানে কু-কথার ছোড়াছুড়ি রাজনীতির অঙ্গ হয়ে দাড়িয়েছে। এখন সেই গুলি ফুটে উঠছে দেওয়ালে।’’

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা নির্বাচন ২০১৯ BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy