রানিবাঁধে। নিজস্ব চিত্র
বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ার ইচ্ছার কথা তিনি নিজেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানিয়েছিলেন বলে মঙ্গলবার দাবি করলেন ওই আসনের তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এদিন রানিবাঁধ ও খাতড়ায় কর্মিসভা করেন তিনি। বাঁকুড়া কেন্দ্রে বিরোধীদের শক্তিকে কার্যত ব্যঙ্গ করে বর্ষীয়ান সুব্রতবাবুর প্রশ্ন, ‘‘কার বিরুদ্ধে প্রচার করব? ময়দান তো ফাঁকা!’’
২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট প্রার্থী হিসাবে লড়াই করেছিলেন সুব্রতবাবু। সেবার সিপিএমের বাসুদেব আচারিচার কাছে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। তারপর গত ১০ বছরে রাজ্যের রাজনৈতিক চিত্র বদলেছে। সেকালের লালদূর্গ বাঁকুড়ায় বামেরা এখন কোণঠাসা। সেই বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকেই তৃণমূলনেত্রী এবার লড়তে পাঠিয়েছেন সুব্রতবাবুকে। বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণায় অবাক হয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্বেরই একাংশ।
কেন বাঁকুড়া আসনে তাঁকেই প্রার্থী করেছেন দলনেত্রী, এদিন তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুব্রতবাবু। কর্মিসভায় তিনি বলেন, ‘‘আমি একবার কংগ্রেস থেকে দাঁড়িয়েছিলাম। সেবার বেরেছিলাম। একবার যে হেরে যায়, সে আর আসে না। আমার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম।’’ অতঃপর তাঁর সংযোজন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যখন আমাকে প্রার্থী করার কথা বলেছিলেন, সেই সময় আমাকে বাঁকুড়ায় আর একবার লড়ার সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলাম। সেই মতো এখানে প্রার্থী হয়ে এসেছি।’’
তৃণমূল প্রার্থী এদিন কর্মিসভায় বিরোধীদের সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে কার্যত পরিহাস করেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাঁকুড়ায় আমি প্রার্থী হয়েছি শুনে কংগ্রেস তো প্রার্থীই দেয়নি। সিপিএম থেকে অমিয় পাত্রকে প্রার্থী করা হয়েছে। কিন্তু গত বিধানসভায় তালড্যাংরা কেন্দ্রে সমীর চক্রবর্তীর কাছে তো অমিয়বাবু হেরেছেন।’’ বিজেপি সম্পর্কে ব্যঙ্গের ছলে বলেন, ‘‘তারা তো তাকিয়ে আছে কে তৃণমূল ছেড়ে বেরবে। তাঁকে প্রার্থী করবে।’’
তৃণমূল জমানায় উন্নয়নই যে প্রচারের মূল অস্ত্র তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, ‘‘অন্যেরা, যাঁরা ভোট নিতে আসবেন, তাঁরা শুধু প্রতিশ্রুতি দেবেন। কিন্তু আমি একমাত্র প্রার্থী যে প্রতিশ্রুতি দেয় না। কাজ করে এসেছি। পানীয় জল, রাস্তাঘাটের কাজ করেছি। তারপর ভোট চাইতে এসেছি।’’
এ দিন দুপুরে রানিবাঁধ কালিতলায় কর্মিসভার পর রানিবাঁধ বাজারে ‘রোড শো’ করেন তৃণমূল প্রার্থী। বিকালে খাতড়া শ্মশানকালী মন্দিরে পুজো দিয়ে ৪ টে নাগাদ খাতড়ায় একটি বেসরকারি লজের সভা করেন।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এদিকে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সোরেন এদিন বান্দোয়ান ব্লকের চারটি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচার করেন। প্রচারে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ঝাড়গ্রামে আমি প্রার্থী হলেও আসলে এই আসনের প্রার্থী নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।’’
তবে ধাদকা গ্রামে ঢুকতেই তাল কাটে তাঁর ভোটপ্রচার। শুনতে হয় কর্মীদের ক্ষোভের কথা। ঝড়গ্রাম কেন্দ্রের বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ উমা সরেন এলাকায় বিশেষ দেখা যায়নি বলে বিরবাহার কাছে অভিযোগ জানান দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। এমনকি, জিতলে তিনি এলাকায় আসবেন কি না, সেই প্রশ্নও তৃণমূল প্রার্থীর দিকে ছুড়ে দেন দলের এক মহিলা কর্মী। তৃণমুল প্রার্থী কর্মী সমর্থকদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘যখন চাইবেন তখনই এসে হাজির হব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy