ফাইল চিত্র।
মহম্মদবাজারে প্রস্তাবিত ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি গড়ায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার, তা একাধিক বার স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিধানসভা দাঁড়িয়ে ফের ওই প্রস্তাবিত খনির কাজ দ্রুত শুরু করার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘যে জমিতে কেউ নেই (সরকারি জমি), সেখানেই কাজ শুরু হবে। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খনি হতে চলেছে। সেটা হলে কয়লা জোগান বাড়বে, বিদ্যুৎ সস্তা হবে।’’
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী এ দিন স্পষ্ট করেছেন, প্রস্তাবিত খনি অঞ্চলের যেখানে যেখানে মানুষ বাস করেন, তাঁদের কর্মসংস্থান, বাড়ির ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। সব রকম পুনর্বাসন দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘১৫০০ লোকের জন্য যেন প্রকল্প না আটকায়। রানা (লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ), চাঁদু (মন্ত্রী চন্ত্রনাথ সিংহ) তোমরা কেষ্টর (অনুব্রত মণ্ডল) সঙ্গে কথা বলে নেবে।’’ জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘প্রশাসন চেষ্টা করছেই। এত বড় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প শুরু করার জন্য দলের তরফে ওই এলাকার মানুষকে ঠিকমতো বোঝানো জরুরি। সেই দিকেই ইঙ্গিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’
মহম্মদবাজারের ব্লকের ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের যে ১১টি মৌজার মাটির নীচে সঞ্চিত প্রায় ২১০ কোটি টন কয়লা একক ভাবে তোলার অধিকার পেয়েছে এ রাজ্য। খনি গড়ার দায়িত্বে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম (পিডিসিএল)। অনেক আগেই খনি গড়ার প্রাথমিক কাজে হাত পড়েছে। প্রস্তাবিত প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর জমিতে বসবাসকারী পরিবারগুলি নিয়ে ‘সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট’ বা সামাজিক প্রভাব সমীক্ষা জমা পড়েছে। তবে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে প্রকল্পের গুরুত্ব আরও বাড়ল। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘যে ভাবে রাজ্য সরকার নির্দেশ দেবে, প্রশাসন সেই ভাবেই কাজ করবে।’’
সরকারের পক্ষে বারবার বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ১০০ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এ রাজ্যেকে কারও মুখাপেক্ষী থাকতে হবে না। হবে প্রচুর কর্মসংস্থানও। কিন্তু, শিল্পের জন্য যাঁদের ভিটেমাটি হারাতে হবে, তাঁদের মনে দোলাচল তৈরি হয়ে রয়েছে। রাজ্য সরকার কী শর্তে জমি নেবে, পুনর্বাসন কোথায় হবে, এমন নানা প্রশ্ন ও আশঙ্কা কাজ করেছে স্থানীয়দের মধ্যে। সেখানে প্রথমে সরকারের জমিতে কাজ শুরুর কথা এবং ভবিয্যতে জমি নিলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখার বার্তায় খানিকটা স্বস্তিতে এলাকাবাসী।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রস্তাবিত খনি এলাকায় ব্যক্তিগত মালিকাধীন জমি ছাড়াও খাস ও অন্যান্য সহভাগী দফতরের হাতে হাতে থাকা জমির পরিমাণ ৬০০ একরের ও বেশি। কিন্তু, সেই জমি এক লপ্তে নেই। তাই কোথায় কী ভাবে কাজ শুরু হবে, সেটা এখনও জেলা প্রশাসনের অজানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy