Advertisement
E-Paper

ধান বেচে মাওবাদী দম্পতির জামিনের টাকা

মামলাগুলিতে জামিন হয়ে গিয়েছিল প্রায় মাস ছয়েক আগেই। কিন্তু জামিনের জন্য বেল বন্ডের টাকাই জমা করতে পারা যাচ্ছিল না। তাই মাঝে মধ্যেই কলকাতা থেকে পুরুলিয়া আদালতে হাজিরা দিতে আনা হচ্ছিল মাওবাদী দম্পতিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০০:২৯

মামলাগুলিতে জামিন হয়ে গিয়েছিল প্রায় মাস ছয়েক আগেই। কিন্তু জামিনের জন্য বেল বন্ডের টাকাই জমা করতে পারা যাচ্ছিল না। তাই মাঝে মধ্যেই কলকাতা থেকে পুরুলিয়া আদালতে হাজিরা দিতে আনা হচ্ছিল মাওবাদী দম্পতিকে। অবশেষে মঙ্গলবার সেই টাকা আদালতে জমা পড়ায় জামিন পেলেন মাওবাদী দম্পতি বিকাশ ও তারা। তারা ওরফে ঠাকুরমণির বাবা গালু মুর্মু ধান বিক্রির টাকা মঙ্গলবার পুরুলিয়া আদালতে মেয়ে ও জামাইয়ের বেলবন্ডের জন্য জমা করলেন। যদিও মাওবাদী স্কোয়াডের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতানেত্রী আদালতে থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না বলে জানাচ্ছে পুলিশ। কারণ অন্যত্রও তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।

ওই দম্পতিকে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্কফোর্স গত বছরের ২ এপ্রিল কলকাতা থেকে গ্রেফতার করে। তারপর থেকে তাঁরা জেলেই রয়েছেন। বিকাশ ওরফে মনসারাম হেমব্রম রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে, আর তারা ওরফে ঠাকুরমণি হেমব্রমের বর্তমান ঠিকানা দমদম সংশোধনাগার। পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় থানা এলাকার মেটালা গ্রামের মনসারাম হেমব্রম নয়ের দশকের শেষের দিকে জনযুদ্ধে নাম লেখান। তারপরেই মনসারাম স্কোয়াডে বিকাশ নামে পরিচিত হন। পরবর্তীকালে জনযুদ্ধ ও এমসিসি মিলে গিয়ে সিপিআই (মাওবাদী) গঠিত হয়। পরে দলে বিকাশের গুরুত্ব বাড়ে।

২০০৯ সালে লালগড় আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন পশ্চিম মেদিনীপুরের বিনপুর থানার রঘুনাথপুর গ্রামের ঠাকুরমণি হেমব্রম ওরফে তারার সঙ্গে স্কোয়াডেই বিয়ে হয় বিকাশের।

তাঁদের পক্ষের আইনজীবী সাগর মণ্ডল বলেন, ‘‘এই দম্পতি পুরুলিয়ায় মোট পাঁচটি মামলায় অভিযুক্ত রয়েছেন। মাস ছয়েক আগ পাঁচটি মামলাতেই ওঁদের জামিন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জামিনের বেলবন্ডের টাকা এতদিন ওঁদের হয়ে কেউ দিতে পারছিলেন না। তাই জামিন মঞ্জুর হচ্ছিল না।’’

বিনপুরের রঘুনাথপুর থেকে এ দিন পুরুলিয়া আদালতে আসেন ঠাকুরমণির বাবা গালু মুর্মু। কোনওরকমে চাষ আবাদ করেই সংসার চলে। আদালতের বারান্দায় বসে বলছিলেন, ‘‘বেলবন্ডের হাজার ছয়েক টাকা কিছুতেই জোগাড় করতে পারছিলাম না। কোনও রকমে হাজার চারেক টাকা জুটিয়ে কিছু দিন আগে এসেছিলাম। কিন্তু ওই টাকা কাজে লাগেনি। ধান বেচে বাকি টাকাটা জোটালাম।’’

এ দিনই কলকাতা থেকে পুরুলিয়ায় নিয়ে আসা হয়েছিল বিকাশ ও ঠাকুরমণিকে। তিনি অবশ্য এ নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। মেয়ের সঙ্গে কথা হয়নি গালুবাবুরও। বিকাশও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

গালুবাবু বলেন, ‘‘আমি চাই মুক্তি পেয়ে ওরা সমাজের মূল স্রোতেই ফিরে আসুক। আমরা চাষবাস করে জীবন চালাই। ওরাও সেই কাজই করুক।’’

Maobadi Couple Paddy Bail
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy