ডিএ বৃদ্ধি, আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য স্মার্ট ফোন দেওয়ার ঘোষণা, নদী ভাঙন রোধে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ-সহ একাধিক বিষয় রয়েছে এ বারের রাজ্য সরকারের বাজেটে। তাতে উপকৃত হবে বীরভূম জেলাও।
এই জেলায় অঙ্গনওয়াড়ি ও আশাকর্মীদের সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। সকলকে কাজের প্রয়োজনে ফোন দেওয়া হলে সেটি অবশ্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করছেন আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও বলছে, কাজের চাপ আছেই, সঙ্গে নানাবিধ তথ্য সংগ্রহে রাখতে হয়। সে জন্য স্মার্ট ফোন আবশ্যক। প্রায়ই প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে যে সব দাবি তাঁরা জানিয়েছেন সেই তালিকায় স্মার্ট ফোন দেওয়ার দাবিও ছিল।
একই ভাবে মা ও শিশুদের পরিষেবা-সহ জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নানা পরিষেবা দেওয়া এবং তথ্য সংগ্রহ আশাকর্মীদের কাজের অঙ্গ। দীর্ঘদিন ধরে স্মার্ট ফোনের দাবি ছিল তাঁদেরও। তাঁদের বক্তব্য, নিয়োগের সময় থেকেই মোবাইলের দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। তখন রাত-বিরেতে প্রসূতিদের গর্ভযন্ত্রণা উঠলে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকা-সহ বিভিন্ন কাজ তাঁদের করতে হত। পরে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে নানা তথ্য (প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনার তথ্য, পরিবার পরিকল্পনায় গর্ভনিরোধক সরঞ্জাম দেওয়ার তথ্য ইত্যাদি) নথিভুক্ত করার কাজও তালিকায় যোগ হয়। অবশেষে একটি দাবি অন্তত পূরণ হল।
এবার আসা যাক নদীবাঁধে বরাদ্দের প্রসঙ্গে। গত বর্ষায়ও বীরভূমে কিছু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দুর্বল নদীবাঁধ ভেঙে। বীরভূমে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রেক্ষিতে জেলার নদ-নদীগুলির দুর্বল বাঁধগুলির জন্য বরাদ্দ হলে জেলা উপকৃত হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছরই নদীপাড় ভাঙন, বাড়ি ঘর তলিয়ে যাওয়া বা বহু মানুষের বাস্তুহারা হওয়ার মতো ঘটনা অন্যান্য জেলার মতো বীরভূমে তেমন ঘটে না। তবে দুর্বল নদীপাড় ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়া প্রায়ই হয় এ জেলায়। অজয়, হিংলো ময়ূরাক্ষী, ব্রাহ্মণী-সহ একাধিক বড় নদী ছাড়াও জেলায় আছে কুয়ে নদীও। সারা বছর নদীগুলিতে জল না থাকলেও বর্ষায় ছবিটা ভিন্ন। শুধু জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত নয়, ঝাড়খণ্ড থেকে প্রবাহিত নদীগুলি শুধু ওই রাজ্যের ভারী বৃষ্টিপাত হলেই উপচে উঠে। মাঝে মধ্যেই এলাকা প্লাবিত করে।
প্রতি বছর বর্ষার আগে দু’টি ভাগে টাকা পায় সেচ দফতর। নদী বাঁধ সংস্কারের ও খরিফে সেচের প্রয়োজনে সেচ নালাগুলি সংস্কারের। কিন্তু প্রতি বার সমান টাকা মেলে না। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক দফতরের এক আধিকারিক জানান, প্রতি কিলোমিটার নদীবাঁধ সংস্কারের জন্য মোটা টাকার প্রয়োজন। বরাদ্দকৃত টাকার অংশ পেলে অবশ্যই ভাল হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)