Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ছোটবেলায় ফিরলেন পড়ুয়াদের মায়েরাও

 স্কুল ছেড়েছেন সেই কবে। কিন্তু এক লহমায় ফেলে আসা মেয়েবেলা যেন ফিরে পেলেন আগমনী ঘোষাল, অনিতা চট্টোপাধ্যায়রা। সৌজন্যে, তাঁদের সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

প্রতিযোগী: ইন্দাসের স্কুলে খেলা মায়েদের। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

প্রতিযোগী: ইন্দাসের স্কুলে খেলা মায়েদের। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
লাভপুর শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১২
Share: Save:

স্কুল ছেড়েছেন সেই কবে। কিন্তু এক লহমায় ফেলে আসা মেয়েবেলা যেন ফিরে পেলেন আগমনী ঘোষাল, অনিতা চট্টোপাধ্যায়রা। সৌজন্যে, তাঁদের সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

বার্ষিক দেওয়াল পত্রিকা প্রকাশ উপলক্ষ্যে শুক্রবার ‘মা মেলা’র আয়োজন করেছিলেন লাভপুরের ইন্দাস প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি মেলায় তাদের মায়েদের জন্যও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়। ৪টি ইভেন্টে ৫০ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। পড়ুয়াদের ৮টি ইভেন্টে সামিল ছিল ১১০ জন।

একই চত্বরে ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি মায়েদের প্রতিযোগিতা ঘিরে স্কুলে আক্ষরিক অর্থেই মেলা বসে যায়। কখনও ছেলেমেয়েকে উৎসাহ দিতে দেখা যায় মায়েদের। মায়েদের জন্য গলা ফাটায় সন্তানরা।

২৫ বছরের মণি দাস নেমেছিলেন ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’-এর লড়াইয়ে। পাশে দাঁড়িয়ে মাকে উৎসাহ দিতে দেখা গেল চতুর্থ শ্রেণির চুমকিকে। মা প্রথম স্থান দখল করার পর মেয়ের আনন্দ তুঙ্গে। মাঠেই দু’বার ডিগবাজি খেল সে। মা-ই বা কম যান কীসে? টিপ পড়ানো প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হিসেবে মেয়ের নাম ঘোষিত হতেই আনন্দে হাততালি থামতেই চায় না মনিদেবীর।

একই ভাবে শঙ্খ বাজানো প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থানাধিকারী হিসেবে আগমনী ঘোষের নাম জানাতেই তৃতীয় শ্রেণির অর্ণব ‘‘আমার মা জিতেছে, আমার মা জিতেছে’’ বলে লাফিয়ে ওঠে। বল ছোড়া প্রতিযোগিতায় ছেলে তৃতীয় স্থান পেতেই আগমনীদেবীও উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন।

অনিতা চট্টোপাধ্যায়, ইতু হাজরার মতো অভিভাবকরা বলেন— ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। সেই কবে স্কুলে এ সব খেলেছি। আজ ফেলে আসা ছোটবেলার কথা মনে পড়ছে।’’

তৃতীয় শ্রেণির পল্লবী মণ্ডল, অর্ণব ঘোষ বলে— ‘‘মায়েদের ছোটাছুটি দেখে মনে হচ্ছিল যেন ওঁরা আমাদের মতোই স্কুলপড়ুয়া।। এ বার থেকে খেলার সঙ্গী না পেলে মায়ের সঙ্গেই খেলবো।’’

স্কুলের শিক্ষক শুভেন্দু মণ্ডল, শিউলি মণ্ডল বলেন, ‘‘মায়েদের এই অংশগ্রহণ আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। আগামী বছর পড়ুয়াদের বাবাদের নিয়ে এ রকম প্রতিযোগিতা করা যায় কিনা দেখবো।’’

প্রতিযগিতার পাশাপাশি শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয় ৫০টি দেওয়াল পত্রিকাও। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিহির কুমার শীল জানান, ওই সব পত্রিকায় ছেলেমেয়েদের লেখা এবং ছবি দেখে মায়েরা খুশি হয়েছেন। শিক্ষকদের আশা, এই রকম দেওয়াল পত্রিকা দেখার পর অভিভাবকরাই লেখাপড়ার পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের সৃজনশীলতা চর্চায় অনুপ্রেরণা দেবেন। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রাখহরি হাজরা, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কালী দাস, রাজেশ ঘোষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Parents Childhood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE