Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দখলদার গিলেছে রাস্তা, এ বার ভাবনা উচ্ছেদের

খাতায়-কলমে রাস্তার প্রস্থ গড়ে ৩০ থেকে ৩২ ফুট। রাস্তায় দখলদারির জেরে এখন তা মেরেকেটে অর্ধেক! কোথাও আবার তারও কম। এই পরিস্থিতিতে পূর্ত দফতর, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্তাদের উপস্থিতিতে সাঁইথিয়ার রাস্তা মাপজোক শুরু করল পুরসভা

সাঁইথিয়ায় মাপজোকের কাজ করছেন পূর্ত দফতরের কর্মী। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

সাঁইথিয়ায় মাপজোকের কাজ করছেন পূর্ত দফতরের কর্মী। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০২:২৬
Share: Save:

খাতায়-কলমে রাস্তার প্রস্থ গড়ে ৩০ থেকে ৩২ ফুট। রাস্তায় দখলদারির জেরে এখন তা মেরেকেটে অর্ধেক! কোথাও আবার তারও কম। এই পরিস্থিতিতে পূর্ত দফতর, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্তাদের উপস্থিতিতে সাঁইথিয়ার রাস্তা মাপজোক শুরু করল পুরসভা।

পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে জেলাশাসকের দফতর থেকে রাস্তা মাপজোক করার নির্দেশ আসে। তারপরেই সহযোগিতা চেয়ে পূর্ত দফতর ও স্থানীয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে আমরা চিঠি করি। তারপরেই বৃহস্পতিবার থেকে রাস্তা মাপজোপের কাজ শুরু হয়।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, মাপজোপের কাজ শেষ হলে রাস্তার দু’পাশের জায়গা দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। তখন রাস্তা থেকে উঠে যাওয়ার নোটিশও দেওয়া হতে পারে।

সাঁইথিয়াবাসীর মাথাব্যথার বড় কারণ যানজট। শহরের পশ্চিম থেকে পূবে চলে যাওয়া প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তাই এই শহরের ‘লাইফ-লাইন’। সেই রাস্তার দু’পাশের জায়গা দখল করে গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য দোকান। তার জেরে রাস্তা প্রস্থে যেমন কমে সমস্যা বাড়িয়েছে, উল্টো দিকে তেমনই বেড়েছে গাড়ির চাপ। এর উপরে রাস্তার উপরেই চলে মাল ওঠানো-নামানো, যাত্রী তোলা! যার ফলে যানজটে নাজেহাল শহরবাসী। বিপত্তি আরও বাড়ে দুটি গাড়ি পাশাপাশি চললে বা একে অপরকে পাশ কাটানোর সময়।

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, শহরের উপর দিয়ে চলে যাওয়া মেন রাস্তাটি গড়ে ৩০-৩২ ফুট বা ১০-১১ মিটার চওড়া। এতটা চওড়া রাস্তায় দুটি গাড়ি পাশাপাশি যাতায়াত করা বা পাশ দিয়ে পায়ে হেঁটে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা বা যানজট হওয়ার কথা নয়। কিন্তু, যাবতীয় বিপত্তির মূলে রাস্তা বেদখল হয়ে যাওয়া। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জায়গা বেদখল হয়েছে ইলেকট্রিক ও টেলিফোনের পোলকে ঘিরে। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শহরবাসীর স্বার্থেই রাস্তার জায়গা উদ্ধার হওয়া দরকার।’’

এটা দেরিতে হলেও ভাল উদ্যোগ, এক মত শহরবাসী। তাঁদের কথায়, ‘‘সত্যিই রাস্তার জায়গা শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা গেলে যানজট সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।’’ পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত জানাচ্ছেন, সেই মতোই কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে রেলব্রিজ লাগোয়া নিমতলা থেকে পশ্চিম দিকের ও মোহনবাগান মোড় থেকে স্টেশন যাওয়ার রাস্তা মাপার কাজ চলছে। এ দিকটা শেষ হলে পূর্ব দিকের রাস্তা মাপা হবে।

মাপজোপের পরেই কী তা হলে উচ্ছেদ করা হবে? সরাসরি উত্তর এড়িয়ে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘তেমন কোনও সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।’’

পূর্ত দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়র মণীশ মণ্ডল রাস্তার মাপজোক নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। সাঁইথিয়া ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক সুজিতকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষ জেলাশাসকের নির্দেশ মতো আমাদের জায়গা মেপে দেওয়ার আবেদন জানায়। সেই মতোই কাজ করেছি।’’ জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, ‘‘সাঁইথিয়ার রাস্তা দখল নিয়ে আমার কাছে অভিযোগ আসে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পুর প্রশাসনকে রাস্তা মাপার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং ওই কাজে পূর্ত দফতর এবং ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরকে সহযোগিতা করতেও বলা হয়েছে।’’

রোগ চিহ্নিত করা গিয়েছে, কাজের কাজ কী হয়— দেখার সেটাই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

eviction municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE