Advertisement
E-Paper

শ্যামের বিরুদ্ধেই প্রার্থী নেই বিজেপি’র

লোকসভা ভোটে গেরুয়া ‘উত্থানে’র পরেই সারদা-কাণ্ডে জেরায় ডাক পেয়ে বাঁকুড়া জেলার রাজনীতিতে তিনি ঘোর অস্বস্তিতে পড়েছিলেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বারবার সরব হত জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। এ বার রাজ্যের মন্ত্রী তথা পাঁচ বারের বিষ্ণুপুর পুরপ্রধান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডেই ঘোর অস্বস্তিতে বিজেপি। কারণ, অন্য বিরোধী দলগুলি পারলেও বিষ্ণুপুর পুরসভায় একমাত্র শ্যামের বিরুদ্ধেই প্রার্থী খাঁড়া করতে পারেনি বিজেপি!

স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৫ ০১:৩১
বিষ্ণুপুরে রাতেও চলছে দেওয়াল লিখন।—নিজস্ব চিত্র।

বিষ্ণুপুরে রাতেও চলছে দেওয়াল লিখন।—নিজস্ব চিত্র।

লোকসভা ভোটে গেরুয়া ‘উত্থানে’র পরেই সারদা-কাণ্ডে জেরায় ডাক পেয়ে বাঁকুড়া জেলার রাজনীতিতে তিনি ঘোর অস্বস্তিতে পড়েছিলেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বারবার সরব হত জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। এ বার রাজ্যের মন্ত্রী তথা পাঁচ বারের বিষ্ণুপুর পুরপ্রধান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডেই ঘোর অস্বস্তিতে বিজেপি। কারণ, অন্য বিরোধী দলগুলি পারলেও বিষ্ণুপুর পুরসভায় একমাত্র শ্যামের বিরুদ্ধেই প্রার্থী খাঁড়া করতে পারেনি বিজেপি!

বীরভূম ছাড়াও রাজ্যের যে ক’টি এলাকায় বিজেপি দ্রুত নিজের সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করছে, বাঁকুড়া তার অন্যতম। লোকসভা ভোটে শাসকদলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে তারা সমানে টক্করও দিয়েছিলেন। সেই জেলাতেই বিরোধী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থীই দিতে পারলেন না কেন? এ ব্যাপারে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতাকে আড়াল করতে পারেননি গত লোকসভায় দলের বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রার্থী তথা রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার। তিনি নিজেই বলছেন, “শ্যামবাবুরর বিরুদ্ধে প্রার্থী পাওয়া গিয়েছিল। আসলে প্রস্তাবক না জোটাতেই তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যায়নি।”

ঘটনা হল, মনোনয়নপত্র দাখিলের পরে দেখা যাচ্ছে বিষ্ণুপুরের ১৯টি ওয়ার্ডের সর্বত্রই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সমানে টক্কর দিয়ে প্রার্থী দিতে পেরেছে সিপিএম ও বিজেপি। ব্যতিক্রম ঘটেছে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে সিপিএমের প্রার্থী আছে। আছে কংগ্রেসেরও। কিন্তু, মন্ত্রীর ওই ওয়ার্ডেই প্রার্থীই খুঁজে পায়নি বিজেপি। তৃণমূলের নেতাদের দাবি, শ্যামবাবুর বিরুদ্ধে অন্য বিরোধীরাও তেমন জোরদার প্রার্থী দাঁড় করাতে পারেনি। তাই কার্যত ‘ফাঁকা মাঠে’ই মন্ত্রীর ওয়ার্ডে গোল দেওয়া যাবে বলে দাবি করছেন তৃণমূলের নেতারা। যদিও তাঁদের প্রার্থীকে ‘কমজোরি’ মানতে নারাজ সিপিএমের বিষ্ণুপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক অনিল পণ্ডিত। তিনি বলছেন, “সন্তোষবাবু স্বচ্ছ ভাবমূর্তির বাসকর্মী। দীর্ঘ দিন পার্টির সঙ্গে আছেন। ওই ওয়ার্ডে দু’বার আমরা জিতেছি। এ বারও জিতব।” তাঁদের প্রার্থী সুভাষ ক্ষেত্রপালকে নিয়ে একই রকম আশাবাদী কংগ্রেসও।

শ্যামবাবুর মতই পুরসভায় তৃণমূলের আর এক ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী পাঁচ বারের উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়ের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার লড়াই চতুর্মুখী। সেখানে সিপিএম, বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসও আছে। এ ছাড়াও দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের সঙ্গে চতুর্মুখী লড়াই হচ্ছে ৫, ৬, ৭, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডেও। ২, ১০ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে এক জন করে নির্দল প্রার্থী থাকায় ওই দুই ওয়ার্ডে লড়াই পঞ্চমুখী। সিপিএম ও বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের ত্রিমুখী লড়াই ১, ৩, ৪, ৮, ১১, ১২ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। বিজেপি তা হলে একমাত্র ১৩ নম্বরেই কেন প্রার্থী দিল না? উত্তরে দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ প্রকাশ্যেই স্বীকার করছেন, “শ্যামবাবুর মতো হেভিওয়েটের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মতো কাউকেই পাওয়া গেল না। ফলে হতাশ হয়েই দান ছেড়ে দিতে হয়েছে!”

গত পুরভোটে নিজের ওয়ার্ড ১১ নম্বরে সর্বোচ্চ ১,২৪১ ভোটে জিতেছিলেন শ্যামবাবু। এ বার প্রতিপক্ষের সংখ্যা কমে গেলেও লড়াইটাকে হালকা ভাবে নিচ্ছেন না তিনি। তাঁর নিজের কথায়, “আমি বরাবর লড়ে জেতার রাজনীতিতে করি। ফাঁকা মাঠে গোল দিতে ভাল লাগে না। প্রতিপক্ষ দু’জন হলেও তাই লড়াইটাকে হালকা ভাবে নিচ্ছি না।” তাঁর দাবি, নিজে জেতার পাশাপাশি শহরের ১৯টি ওয়ার্ডেই জেতাবেন দলকেও।

BJP Trinamool Election Shyamaprasad Bankura Municipal election Bishnupur Shyamapada Mukherjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy