Advertisement
E-Paper

মাইকের অনুমতি নেই, বন্ধ পথসভা

মাইক ব্যবহারের অনুমতি নেই। এই কারণ দেখিয়ে ঝালদায় তৃণমূল এবং কংগ্রেসের পথসভা বন্ধ করে দিল প্রশাসন। বাঁকুড়াতেও বিজেপিকে মিছিলে মাইক বাজানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। প্রশাসন এ ভাবে মাইক বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা করায় ক্ষুদ্ধ শাসক-বিরোধী সকলেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০৯
মাইক নেই। শাঁখে ফুঁ দিয়েই বাঁকুড়ায় প্রচারে বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মী মাল।  বৃহস্পতিবারের নিজস্ব চিত্র।

মাইক নেই। শাঁখে ফুঁ দিয়েই বাঁকুড়ায় প্রচারে বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মী মাল। বৃহস্পতিবারের নিজস্ব চিত্র।

মাইক ব্যবহারের অনুমতি নেই। এই কারণ দেখিয়ে ঝালদায় তৃণমূল এবং কংগ্রেসের পথসভা বন্ধ করে দিল প্রশাসন। বাঁকুড়াতেও বিজেপিকে মিছিলে মাইক বাজানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। প্রশাসন এ ভাবে মাইক বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা করায় ক্ষুদ্ধ শাসক-বিরোধী সকলেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় ঝালদার বীরসা মোড়ে এবং আনন্দবাজার এলাকায় পথসভার আয়োজন করেছিল কংগ্রেস এবং তৃণমূল। মাইক বাজিয়ে দু’টি সভা চলছিল। সভা চলাকালীনই দুই দলের নেতৃত্বের কাছেই ফোন আসে যে এ ভাবে মাইক বাজিয়ে সভা করা যাবে না। এরপরেই অবশ্য মাইক বাজানো বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ঝালদার তৃণমূল নেতা বিজন ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা আনন্দবাজার এলাকায় একটি পথসভা করছিলাম। সভা চলাকালীন প্রথমে পুলিশের ফোন আসে, তারপরে বিডিও ফোন করেন। তাঁরা জানান, মাইক বাজিয়ে এ ভাবে সভা করা যাবে না।’’ তিনি জানান, তাঁদের পথসভা করার অনুমতি নেওয়ায় আলাদা করে মাইক ব্যবহারের অনুমতি নেননি। এই কারণ দেখিয়ে সভা বন্ধ করতে বলা হয়। তবে তাঁরা ওই ফোন আসার পরেই সভা বন্ধ করে দেন। কংগ্রেসের পথসভা ছিল বীরসা মোড়ে। ঝালদার কংগ্রেসের নেতা প্রদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘আমাদের সভায় মাইক বাজানোর অনুমতি নেই এই অজুহাতে প্রশাসন আমাদের সভা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু আমরা যে এ দিন সভা করব তা তো প্রশাসনকে আগেই জানিয়েছিলাম। ফোন পেয়ে সভা বন্ধ করে দেওয়া হয়।’’

তৃণমূল সূত্রে খবর, তাঁরা রিকশায় দু’টি সাউন্ডবক্স রেখে সভা করছিলেন। শব্দবিধি মেনেই তারা সভা করছিলেন বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। কেন সভা বন্ধ করে দেওয়া হল তা জানতে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব ঝালদা ১ এর বিডিওর কাছে যান। কিন্তু তিনি পুরুলিয়ায় ছিলেন, তাই তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি।

ঝালদা ১ বিডিও মৃন্ময় দাস বলেন, ‘‘আমরা সভার অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু মাইক ব্যবহারের কোনও অনুমতি আমরা দিতে পারি না। এই অনুমতি মহকুমা শাসকই দেন। ওই সভায় মাইক ব্যবহারের অনুমতি ছিল বলে কোনও খবর ছিল না। মডেল কোড অব কন্ডাক্ট টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে সভা বন্ধ করেছে।’’

প্রসঙ্গত গত সোমবার ১৩ এপ্রিল প্রচারে মাইক ব্যবহার নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। পরিবেশ আদালত জানিয়েছে, শব্দবিধি মেনে মাইক, লাউডস্পিকার ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে। আর বিধি ঠিকঠাক মানা হচ্ছে কি না তা পুলিশ ও প্রশাসন দেখবে। ২০০০ সালের শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধি অনুযায়ী, মাইক সকাল ছটা থেকে রাত দশটা পযর্ন্ত বাজতে পারে। বসতি এলাকায় শব্দের মাত্রা হবে ৫৫ ডেসিবেল, বাজার এলাকায় ৬৫ ডেসিবেল ও শিল্পাঞ্চলে ৭৫ ডেসিবেল।

বুধবারের ঘটনা সম্পর্কে প্রশাসন জানিয়েছে, দুই দলের কাছেই মাইক ব্যবহারের কোনও অনুমতিই ছিল না। পুরুলিয়ার মহকুমা শাসক (পশ্চিম) নিমাইচাঁদ হালদার বলেন, ‘‘ওরা মাইক ব্যবহারের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাই সভা বন্ধ করা হয়েছে।’’

এ দিকে বাঁকুড়া পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থীর প্রচার মিছিলে মাইক ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা মেলেনি। তাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাঁখ ফুঁকে নিজের ওয়ার্ডে ঘুরেলেন বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্ম মাল। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি জীবন চক্রবর্তী দাবি করেন, “প্রথমে পুলিশ আমাদের মাইকের অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু পরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কবে থেকে প্রচারে মাইক ব্যবহার করতে পারব তার সদুত্তর কোথাও পাচ্ছি না।” আধিকারিকদের মধ্যেও এ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। বাঁকুড়া পুরসভার রিটার্নিং অফিসার তথা বাঁকুড়া সদর মহকুমা শাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মাইক বাজানোর অনুমতি দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে সুনির্দিষ্ট করে কোনও নির্দেশ এখনও আসেনি। তাই কাউকেই অনুমতি দিতে পারছি না আমরা। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা পেলেই বলা যাবে কবে থেকে কী নিয়ম মেনে মাইক বাজানো যাবে।’’

Political candidate Trinamool municipal election Bankura rally mike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy