Advertisement
E-Paper

পদত্যাগ করে জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন চিন্তা

অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটির একদিন আগেই পদত্যাগ করে দলের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে যোগ দিয়ে বিতর্ক উস্কে দিলেন নানুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চিন্তা মাঝি। একসময় কাজল অনুগামী হিসাবে পরিচিত পদত্যাগী সভাপতিকে নিজেদের পক্ষে টেনে তাঁকে আরও কোনঠাসা করারই বার্তা দেওয়া হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৬ ০২:২২
বোলপুরে সাংবাদিক বৈঠকে সভাধিপতির সঙ্গে চিন্তাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

বোলপুরে সাংবাদিক বৈঠকে সভাধিপতির সঙ্গে চিন্তাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটির একদিন আগেই পদত্যাগ করে দলের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে যোগ দিয়ে বিতর্ক উস্কে দিলেন নানুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চিন্তা মাঝি। একসময় কাজল অনুগামী হিসাবে পরিচিত পদত্যাগী সভাপতিকে নিজেদের পক্ষে টেনে তাঁকে আরও কোনঠাসা করারই বার্তা দেওয়া হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

একসময় দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল অনুগামীদের কোন ঠাসা করেই চিন্তা মাঝিকে সভাপতি করে পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গড়ে ছিলেন যুব নেতা কাজল সেখ এবং প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরার জুটি। পরবর্তীকালে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব তথা এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে দু’জনের মধ্যে সংঘাত বাঁধে।

সে ঘটনা অবশ্য বেশ পুরনো। গদাধর যোগ দেন অনুব্রত শিবিরে।

তখন থেকেই জেলা সভাপতির মদতে কাজলকে কোনঠাসা করতে উঠে পড়ে লাগেন গদাধর এবং তার অনুগামীরা। অন্যদিকে কাজলও এ বার বিধানসভায় গদাধরের প্রার্থীপদ আটকাতে মরিয়া চেষ্টা চালাতে থাকে। কিন্তু দল প্রার্থী করে গদাধরকেই। রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে তখন কাজল গোপনে সিপিএমের সঙ্গে হাত মেলান বলে অভিযোগ। তার ফলেই তৃণমূলের রমরমা বাজারেও গদাধরকে হারতে হয়।

জেলার রাজনৈতিকমহল বলছে, তার জেরেই ফল ঘোষণার পর থেকেই কাজলকে কোনঠাসা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। গদাধরকে দলের জেলা যুব সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। কাজলের নিয়ন্ত্রণে থাকা দলীয় কার্যালয় এবং গ্রামের দখল নিতে উঠে পড়ে লাগে গদাধর অনুগামীরা। ২৭ জুন কাজল অনুগামী হিসাবে পরিচিত চিন্তা মাঝির বিরুদ্ধে কাজে অনীহার অভিযোগ তুলে বোলপুর মহকুমা শাসকের কাছে সহ-সভাপতি, ৫ জন কর্মাধ্যক্ষ-সহ ১৭ জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন।

মঙ্গলবার ছিল ওই অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটির দিন।

এ দিন মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন চিন্তা। তারপরই জেলা কার্যালয়ে তাঁকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। পরে বিকাশবাবু বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণেই চিন্তাদেবী পদত্যাগ করেছেন। তবে উনি ভাল কর্মী। সংগঠনের কাজে তাঁকে কোনও পদে বসানো হবে।’’

চিন্তাদেবী বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত সমস্যার কারণেই পদত্যাগ করেছি।’’ তিনি কাজল অনুগামী বলেই কি তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে? এ প্রশ্নে চিন্তাদেবী বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলের কর্মী। সেটাই আমার একমাত্র পরিচয়।’’

গদাধর বলেন, ‘‘বর্তমানে আমাদের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির ৩১ জন সদস্যের মধ্যে ২৬ জন রয়েছেন। তাই অনাস্থায় হার নিশ্চিত জেনেই উনি পদত্যাগ করেছেন। দল বিরোধী কাজে যুক্ত থাকার জন্যই সদস্যরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন।’’

ঘটনা হল, এই পরিস্থিতিতে পরবর্তী সভাপতি নির্বাচন নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদটি তফঃ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। কাজলের নিয়ন্ত্রণে থাকার সময় পঞ্চায়েত সমিতির হাতে গোনা যে কয়েকজন সদস্য গদাধরের পক্ষে ছিলেন, তাঁদের অন্যতম হলেন জন স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ চামেলী হাজরা। তারই সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছেন তৃণমূলেরই একাংশ। যদিও চামেলীদেবী জানিয়েছেন, ‘‘দল যখন আমাকে যেমন দায়িত্ব দেবে তা পালন করব।’’

বোলপুরের মহকুমাশাসক শম্পা হাজরা বলেন, ‘‘ওই সভাপতির ইস্তফাপত্র পেয়েছি। এরপর নিয়ম মাফিক নতুন সভাপতি নির্বাচনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’

বাজ পড়ে। মাঠে কাজ করার সময়ে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। সোমবার বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে লোকপুর থানার রূপসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চুয়াগড়ে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম মহিত দে (৪৭)। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য সিউড়ি হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।

Chinta Majhi Panchayat Samiti President Resigned Nanoor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy