Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কাশীপুরে অনাস্থা স্থগিত, রানিবাঁধে অপসারিত প্রধান

অনাস্থার তলবি সভায় দুই িচত্র দেখা গেল। পুরুলিয়ার কাশীপুরের সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতে আদালতের নির্দেশে স্থগিত হল তলবি সভা। বাঁকুড়ার রানিবাঁধের রুদড়া পঞ্চায়েতে দলের সদস্যদের অনাস্থায় সরতে হল প্রধানকে। বুধবার দু’টি পঞ্চায়েতেই তলবি সভা ডাকা হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাশীপুর ও রানিবাঁধ শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৬ ০২:১১
Share: Save:

অনাস্থার তলবি সভায় দুই িচত্র দেখা গেল। পুরুলিয়ার কাশীপুরের সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতে আদালতের নির্দেশে স্থগিত হল তলবি সভা। বাঁকুড়ার রানিবাঁধের রুদড়া পঞ্চায়েতে দলের সদস্যদের অনাস্থায় সরতে হল প্রধানকে। বুধবার দু’টি পঞ্চায়েতেই তলবি সভা ডাকা হয়েছিল।

বুধবার সকালে সোনাইজুড়ির তলবি সভা স্থগিত রাখার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ব্লক প্রশাসনের কাছে পৌঁছয়। বিডিও (কাশীপুর) মানসী ভদ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সোনাইজুড়ির পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার তলবি সভা স্থগিত হয়েছে। বিষয়টি চিঠি দিয়ে সমস্ত সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

বিডিও-র কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ার পরেই স্থগিতাদেশ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান সুচিত্রা সহিস। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘অনৈতিক ভাবে অনাস্থা আনা হয়েছিল বলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই।’’ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের দশটি আসনের মধ্যে ছ’টিতে জয়ী হয় তৃণমূল। দু’টি আসনে জেতেন সিপিএমের প্রার্থী। বাকি দু’টি যায় এসইউসি, বিক্ষুব্ধ তৃণমূল এবং জেএমএমের মহাজোটের দখলে।

প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পরে পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়ে দলেরই একাংশের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় সুচিত্রাদেবীর। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তাঁর বিরুদ্ধে এক বার অনাস্থা এনেছিল দলের সদস্যেরা। সেই সময় সিপিএম এবং মহাজোটের সদস্যেরা সুচিত্রাদেবীকে সমর্থন করায় অনাস্থা খারিজ হয়ে যায়। তার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে সুচিত্রাদেবীর। তবে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের পথে হাঁটেনি তৃণমূল।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিপিএমের এক সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। নির্বাচনের ফল বেরোতেই ফের সুচিত্রাদেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন শাসকদলের ছয় সদস্য। গত ২০ জুন অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ে। এ দিন পঞ্চায়েতে গিয়ে কাশীপুরের যুগ্ম বিডিও সভা স্থগিত করার কথা ঘোষণা করার পরে উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে পুলিশ মোতায়েন থাকায় পরিস্থিতি হাতের বাইরে যায়নি।

অন্যদিকে, তলবি সভায় সরতে হয়েছে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের রুদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিখারানি মণ্ডলকে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিডিও (রানিবাঁধ)-এর কাছে শিখারানিদেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের আট জন সদস্য। তাঁদের অভিযোগ, প্রধান স্বেচ্ছাচারী ভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এ দিনের তলবি সভায় উপস্থিত সাত সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দেন। ব্লকের এক আধিকারিক বলেন, “আইন মাফিক নতুন প্রধান নির্বাচন হবে।’’

রুদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ টি আসনের সবক’টিতেই জিতেছিলেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। তৃণমূল সূত্রে খবর, সম্প্রতি নানা প্রসঙ্গে প্রধান এবং উপপ্রধান অঞ্চলা মান্ডির মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। উপপ্রধান অঞ্চলা মান্ডির অভিযোগ, “প্রধান কারও পরামর্শ না নিয়ে ইচ্ছে মতো কাজ করছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়।’’

যুব তৃণমূলের রুদড়া অঞ্চল সভাপতি সঞ্জয় ধবলদেবও বলেন, “শিখারানিদেবী কারও সঙ্গে আলোচনা করে কাজ না করায় ক্ষুব্ধ সদস্যেরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন।’’ দুর্নীতি বা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি শিখারানিদেবী। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে অনাস্থা আনা হয়েছিল। নিয়ম মেনেই যে কাজ হয়েছে সেটা সরকারি নথিপত্র দেখলেই প্রমাণ হয়ে যাবে।” দলের অন্দরে শিখারানিদেবী এবং অঞ্চলাদেবী— দু’জনেই রানিবাঁধ ব্লক সভাপতি সুনীল মণ্ডলের স্নেহধন্য বলে পরিচিত। সুনীলবাবু এ দিন বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যেরা প্রধানকে তাঁর পদ থেকে সরিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আমার কোনও ভূমিকা ছিল না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayet Pradhan Ranibandh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE