ঝালদা বাজারের আনাজ বিক্রেতা কমল কুইরির কথায়, ‘‘কয়েক দিনের মধ্যে টোম্যাটোর দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। পাইকারি বাজারে আলুর বস্তা আমরা ৪৪০ টাকায় কিনতাম। তা বেড়ে হয়েছে ৬০০ টাকা। স্বভাবতই প্রভাব পড়েছে খুচরো বাজারেও।’’
এ দিকে ফলের দরও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এ দিন বাঁকুড়ায় আপেল বিক্রি হয়েছে কেজিতে ৮০- ১০০ টাকা, আঙুর ১৫০-১৬০ টাকা কেজি, কলা ডজন প্রতি দর ছিল ৩০-৩৫ টাকা, কমলালেবু ৮০-১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। পুরুলিয়া বাজারে ফলের দর ছিল কেজিতে নাসপাতি ৬০ টাকা, আনারস ৭০ টাকা, কমলালেবু ১৪০-১৮০ টাকা, বেদানা ১০০ টাকা। পুরুলিয়ার ফল বিক্রেতা আবদুল সাত্তারের কথায়, ‘‘পাইকারি বাজারেই দাম চড়া। আমরা ন্যূনতম লাভ রেখেই বিক্রি করছি।’’
ফুলের দরও বেড়েছে অনেকটাই। বাঁকুড়ার বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, রজনীগন্ধার মালা কিছু দিন আগেও ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল। এ দিন সেটিরই দর দাঁড়িয়েছে ৫০-৬০ টাকা। হলুদ গাঁদার মালার দর ১৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮-২০ টাকা।
বাঁকুড়ায় ছাঁচের লক্ষ্মীপ্রতিমার দরও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। একেবারে ছোট মাপের লক্ষ্মী প্রতিমা যা গত বছরও ৫০-৬০ টাকায় মিলছিল, এ বার সে সবের দর উঠেছে ৮০-৯০ টাকা। একই ভাবে বেড়েছে মাঝারি বা বড় মাপের ছাঁচের প্রতিমার দরও। বাঁকুড়ার মাচানতলার প্রতিমা ব্যবসায়ী মিলন পাল, দুলাল দত্তেরা বলেন, “অন্য জেলা থেকে প্রতিমা নিয়ে এসে ব্যবসা করি। পরিবহণের খরচ বেড়েছে। তা ছাড়া, পুজো থেকেই টানা বৃষ্টির জন্য শিল্পীরা প্রতিমা খুব বেশি তৈরিও করতে পারেননি।”
পুরুলিয়ার প্রতিমা বিক্রেতা ফকির পাল, বিকাশ কর্মকার জানান, প্রতিমারও দাম বেড়েছে। ৫০০ থেকে ১,৫০০ টাকা দামে বিভিন্ন উচ্চতার প্রতিমা বিক্রি করা হচ্ছে। হাটেরমোড়ের প্রদীপ বিক্রেতা উত্তম নন্দী জানান, ১০-১৫ টাকা দরে ঘট, ১৫-২০ টাকায় পিলসুজ বিক্রি করছেন।
এই অবস্থায় হিসেব কষে পুজোর বাজার করা ছাড়া উপায় দেখছেন না বাঁকুড়ার বধূ ববিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাজার করতে বেরিয়ে পুরুলিয়া শহরের রথতলার বাসিন্দা স্বাতী সরকারও বলেন, ‘‘জিনিসপত্রের দাম দু’দিনেই এতটা বেড়ে যাবে ভাবিনি!’’ রঘুনাথপুরের বাসিন্দা বীণা চৌধুরীর কথায়, ‘‘দাম নাগাল ছাড়ালেও ধনদাত্রীর নৈবেদ্যে ফলমূল, খিচুড়ি-তরকারির ভোগ দিতেই হবে।’’