Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ছাউনি নেই, বর্ষায় বাজার নিয়ে ক্ষোভ

দিন দিন সবজি বাজারে নানা সমস্যায় জেরবার সাঁইথিয়া। শহরের ক্রেতারা নিত্য দুর্ভোগের শিকার হন এই বাজারে। দুর্ভোগ বিক্রেতাদেরও। কেন না, এই বাজারের কোনও ছাউনি নেই। বর্ষা আসতেই সমস্যা যেন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। কার্যত ক্ষোভে দেখিয়ে এ বার সরব বিক্রেতারা।

ভাস্করজ্যোতি মজুমদার
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৫ ০১:১৬
Share: Save:

দিন দিন সবজি বাজারে নানা সমস্যায় জেরবার সাঁইথিয়া। শহরের ক্রেতারা নিত্য দুর্ভোগের শিকার হন এই বাজারে। দুর্ভোগ বিক্রেতাদেরও। কেন না, এই বাজারের কোনও ছাউনি নেই। বর্ষা আসতেই সমস্যা যেন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। কার্যত ক্ষোভে দেখিয়ে এ বার সরব বিক্রেতারা।

বাজারের পরিকাঠামো বলতে যা বোঝায়, তার কোনও নমুনাই নজরে এল না মঙ্গলবাজার সাঁইথিয়া বাজারে গিয়ে। অধিকাংশ সবজি বিক্রেতাদের মাথার উপর ছাউনি বলতে বাঁশের খুঁটির উপর চট টাঙানো। নাই কোন পানীয় জলের ব্যাবস্থা, এমনকী টয়লেটের পর্যন্ত কোনও ব্যাবস্থা নাই। বাজারের ভিতরের রাস্তা এতই ছোট যে পাশাপাশি দুজন ক্রেতা গেলে গায়ে গা ঠেকে যায়। ছাউনির জন্য টাঙানো চট মাথায় ঠেকে। অন্য সময় এ সব কিছুকে মানিয়ে নেওয়া গেলেও বর্ষায় মানিয়ে নেওয়া খুব কঠিন। এছাড়া সকালের ভিড়ে ঠাসা সবজি বাজারের ওই রাস্তা দিয়েই সবজি বোঝাই রিক্সা-ভ্যানের যাতায়াত আরও বিড়ম্বনায় ফেলেছে ক্রেতা বিক্রেতাদের।

বাণিজ্য শহরের এই বাজারের এত সমস্যার প্রধান কারণ হল সবজি বাজারের নিজস্ব কোনও জায়গা নাই। যেখানে বাজার বসে সেটা অন্যের যায়গা। বাজারের জন্য পুরসভা জায়গাটি লিজ নিয়েছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও পুরসভা বাজারের রাস্তাঘাট, টয়লেট বা মাথার উপরের পাকা ছাউনির ব্যবস্থা করতে পারছেন না। এমন দাবি অবশ্য পুরসভার। এতে দুর্ভোগের শেষ নাই ক্রেতা থেকে বিক্রেতাদের। বিশেষ করে বর্ষার সময়। স্থানীয় বাসিন্দা সুদীপ বাগদি, রনজিৎ ঠাকুর, বুলবুল শেখরা বলেন, ‘‘এই বাজারে অন্য সময়ে যেমন করে হোক চলা যায়। কিন্তু বর্ষার সময় ভোগান্তির শেষ থাকে না। এমনিতে জল কাদায় চলা যায় না। তারপর বিক্রেতাদের অস্থায়ি ছাউনির জল মাথায় জামা কাপড়ে পড়ে। বিক্রেতাদেরও অভিযোগের শেষ নাই।’’

স্থানীয়দের কথায়, আগে সপ্তাহে দু’দিন সোম ও শুক্রুবার সাঁইথিয়ায় হাট বসত। বর্তমানে যেখানে সবজি বাজার বসছে, সেই জায়গাতেই। বাজার বসে আসপাশের রাস্তাজুড়ে। তখন হাট পরিচালনা করতেন ওই জায়গার মালিক পক্ষ। তবে রাস্তায় বসা সবজি বিক্রেতাদের তোলা পুরসভায় নিত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেমন জনসংখ্যা বেড়েছে। তেমনি মানুষের চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দু’দিনের সবজি হাট বেশ কয়েক বছর হল প্রতিদিনের সবজি বাজারে পরিণত হয়। ফলে হাট শব্দটাই ক্রমশ লোপ পেতে চলেছে এ শহরের কাছে। তবে সেই সাবেকী হাট শব্দের পরিবর্তন হলেও জায়গার কোনও পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ আগে যেখানে হাট বসত এখন সেখানেই সবজির বাজার বসে।

এমনিতেই সাঁইথিয়ার রাস্তার সমস্যা সর্বজন বিদিত। তারপর রাস্তার দু’ধারে সবজি বাজার বসায় সেই সমস্যা চরম আকার ধারণ করত। তাই পুরসভা একবার চেষ্টাও চালিয়েছিল বাজারটি অন্যত্র সরানোর। কিন্তু সফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত আগে যেখানে হাট বসত সেই জায়গার মালিকের কাছ থেকে সবজি বাজারের জন্য লিজ নেয় পুরসভা। বর্তমানে পুরসভা নিয়ন্ত্রিত ওই সবজি বাজারের একটা সুফল অবশ্য মিলেছে। তা হল, মেন রাস্তার দু’ধারে যে ভাবে বিক্রেতারা বসতেন তা আর বসে না। কিন্তু কোলা আকাশের নীচে হওয়ায় সমস্যা সেই তিমিরেই। হাটতলা রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে।

পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত বলেন, ‘‘আসলে যে জায়গায় সবজি বাজার বসে সেটা অপরের জায়গা। জায়গার মালিকের সঙ্গে চুক্তিনুযায়ী ওখানে কোনও রকম নির্মাণকাজ করা যাবে না। বিকল্প জায়গা না পাওয়া সমস্যা থেকেই গিয়েছে। তবু মালিকের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE