উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন মিরিটি সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। ঘন ঘন চোখ রাখছেন সংবাদ বুলেটিনে। কেমন আছেন প্রণববাবু?— রাস্তার মোড়, ক্লাব, চা দোকানে ঘুরে ফিরে আসছে প্রসঙ্গটা।
ভূমিপুত্র, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে আরোগ্য কামনায় পুজোপাঠের পাশাপাশি চলছে একান্ত প্রার্থনা। এ দিনও তা অব্যহত ছিল। তার মধ্যে দুপুরে একটি সংবাদমাধ্যমে চিকিৎসায় সাড়া দেওয়ার খবর শুনে আশা জেগেছে অনেকের মনে। কীর্ণাহার শিবচন্দ্র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নীলকমল বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘যে মানুষটা টুইট করে নিজের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়ে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের টেস্ট করানোর পরামর্শ দিয়েছেন, তিনিই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ভাবতেই পারছি না।’’
এই কীর্ণাহার শিবচন্দ্র হাইস্কুল থেকেই প্রণববাবু ম্যাট্রিকুলেশান পাশ করেন। বহুবার স্কুলে এসেছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে স্কুলে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাঁরই দেওয়া বিভিন্ন স্মৃতি স্মারক দিয়ে স্কুলে সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছে। প্রণববাবু এবং স্ত্রী প্রয়াত শুভ্রাদেবীর নেতৃত্ব স্কুলে শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানও পালিত হয়েছে। প্রণববাবুর শারীরিক অবস্থায় মনখারাপ জুবুটিয়ার জয়ন্ত পান্ডা, কীর্ণাহারের চন্দন আচার্যদের। তাঁরা জানান, ষষ্ঠীর দিন প্রণববাবুর বাড়ি আসা উপলক্ষে কীর্ণাহার লোকে লোকরণ্য হয়ে ওঠে। হেলিপ্যাড থেকে নেমে তিনি যখন দ্রুততার সঙ্গে মাঠে ঘুরে ঘুরে জনতাকে অভিবাদন জানান তখন দেখে মনে হয় সদ্য যুবক। সেই মানুষটাই আজ অসুস্থ। কীর্ণাহার চৌরঙ্গি মোড়ে স্মার্টফোনে নিউজ বুলেটিন দেখে হতাশ হতে দেখা গেল রণদেব দাস, জয়শ্রী রায়দের। তাঁরা জানান, শুধু অবস্থার অবনতির খবর শুনছেন। তাই মন ভাল নেই। এ দিনও স্থানীয় জুবুটিয়া জপেশ্বর শিবমন্দিরে প্রণববাবুর আরোগ্য কামনা হোমযজ্ঞ সহ পুজোপাঠ হয়েছে। অন্যতম উদ্যোক্তা রবীন্দ্রনাথ চট্টরাজ জানান, আজও হোমযজ্ঞ হবে।
প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আরোগ্য কামনায় এ দিন নলাটেশ্বরী মন্দিরেও যজ্ঞের আয়োজন হয়েছে। চাদর চাপানো হয় আনাশহীদ বাবার মাজারে। বুধবার বিকেলে নলহাটিতে ব্লক ও শহর কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীরা এই উদ্যোগ নেন। কংগ্রেসের শহর সভাপতি মহম্মদ নুরুল মুর্তজা রাজেশ বলেন, ‘‘বীরভূমের গর্ব প্রণব মুখোপাধ্যায়। সুস্থতা কামনা করে নলাটেশ্বরী মন্দিরে যজ্ঞ করেছি। মাজারে চাদরও চাপিয়েছি।’’
প্রণববাবুকে বীরভূমের গর্ব বলে সম্বোধন করে এ দিন তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন রাজ্যপালও।