Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
প্রাণের বিনিময়ে বাড়ল সতর্কতা, গেটের সামনে থেকে সরল বালিও

দুর্ঘটনার পরে তৎপর পুলিশ

বুধবার রাতে মোটরবাইকের ধাক্কায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ মুর্মুর মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার তা জানাজানি হতেই রামপুরহাট হাসপাতালের সামনে পুলিশের নজরদারি বেড়ে যায়।

হাসপাতালের সামনের রাস্তায় মজুত বালি, টায়ার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

হাসপাতালের সামনের রাস্তায় মজুত বালি, টায়ার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩০
Share: Save:

একটা প্রাণের বিনিময়ে নড়ে বসল পুলিশ, প্রশাসন।

বুধবার রাতে মোটরবাইকের ধাক্কায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ মুর্মুর মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার তা জানাজানি হতেই রামপুরহাট হাসপাতালের সামনে পুলিশের নজরদারি বেড়ে যায়। হাসপাতাল থেকে ২০ মিটার দূরত্বে দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি এ দিন সকালে পাঁচ, ছ’জন পুলিশ কর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছিল। তাঁরা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেন। হাসপাতালের সামনে টোটো, যন্ত্রচালিত রিকশা এবং অন্য গাড়ি যাতে না দাঁড়িয়ে থাকে, তারও নজরদারি ছিল।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা, যখন কোনও দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়, তখনই এই নজরদারি দেখা যায়। ক’দিন যেতে না যেতেই যে কে সেই! তাঁদের প্রশ্ন, এই নজরদারি আর কত দিন? রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দীর্ঘ দিনের এক কর্মী জানালেন, হাসপাতালের সামনে জাতীয় সড়কে গত পাঁচ বছরে চিকিৎসক সহ হাসপাতালের তিন জন কর্মী দুর্ঘটনায় মারা গেলেন। সব মিলিয়ে হাসপাতালের ১০ থেকে ২০ মিটার দূরত্বে জাতীয় সড়কে পৃথক পথ দুর্ঘটনায় গত ৫ বছরে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বেশির ভাগ চিকিৎসক থেকে হাসপাতাল কর্মীরা অবশ্য দুর্ঘটনার জন্য জাতীয় সড়কে টোটো চলাচলকে দায়ী করেছেন। কেউ কেউ জাতীয় সড়কের ধারে পর্যাপ্ত আলোর অভাবকে দায়ী করেছেন। এক শ্রেণির নিত্যযাত্রীর আবার অভিযোগ, জাতীয় সড়কের হাসপাতাল পাড়া থেকে রামপুরহাট ভাঁড়শালা পাড়া এলাকা দুর্ঘটনা প্রবণ। জাতীয় সড়কের ধারে বালি-পাথর, ইট ফেলে রাখা হয়। ছোট ছোট গাড়ি রাস্তার দু’পাশে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এই সমস্তই পুলিশ, প্রশাসনের নজরদারির অভাবের ফল বলেই তাঁদের মত।

বৃহস্পতিবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, হাসপাতালের সামনে জাতীয় সড়কের ধারে স্তূপীকৃত বালি, টায়ার সরাবার জন্য রামপুরহাট মহকুমাশাসক, রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সহ রামপুরহাট থানার আইসি এবং অন্য পুলিশ কর্মীরা তৎপর। পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরাও টোটো এবং অন্য ছোট গাড়ির যান নিয়ন্ত্রণে সক্রিয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর আত্মীয়ের কথায়, ‘‘আজ পনেরো দিন হল এই বালি পড়ে আছে। এত দিন পুলিশ, প্রশাসনের টনক নড়েনি। এখন তৎপরতার শেষ নেই।’’

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ শিখা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতালের প্রবেশ পথের সামনে কোনও যানবাহন যাতে না দাঁড়িয়ে থাকে, তার জন্য মহকুমাশাসক এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে বলেছি। হাসপাতালের সামনে যান নিয়ন্ত্রণের জন্যও বলা হয়েছে।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, আগামী দিনে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের জাতীয় সড়কে যাতে কোনও যানবাহনের পার্কিং না থাকে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালের সামনে স্লো ট্রাফিক জোন বাড়ানো হবে। পাশাপাশি হাসপাতালের সামনে হাইমাস্ট লাইটের ব্যবস্থা করা হবে।

রামপুরহাট মহকুমাশাসক নাভেদ আখতার যোগ করেছেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে হাসপাতালের সামনে এবং জাতীয় সড়কের ধারে অন্য জায়গায় যাতে ইমারতি দ্রব্য না রাখা হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Accident Traffic Control West Bengal police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE