মঙ্গলবার ধৃতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে মহম্মদবাজারে। ছবি: অনির্বাণ সেন।
পুলিশ স্রেফ সন্দেহের বশে তাঁর মক্কেলদের বিরুদ্ধে মামলা সাজাচ্ছে। এক মক্কেলকে রাজসাক্ষী হতে চাপও দিচ্ছে। মহম্মদবাজারে জোড়া খুনের মামলায় আদালতের কাছে এমনটাই দাবি করলেন বিপক্ষের আইনজীবী।
পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হতে মঙ্গলবার সিউড়ি সিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়েছিল ধৃত অপর্ণা সাধু এবং তাঁর ভাই রামপ্রসাদ সাহাকে। তখনই দায়িত্বে থাকা তৃতীয় জেএম আদালতের বিচারক ঋষি কুশারীর কাছে ওই অভিযোগ করেন অপর্ণাদেবীদের আইনজীবী গোলাম মফিজউদ্দিন মির্ধা। বিচারকের কাছে তিনি মক্কেলদের জামিন দেওয়া হোক বলে আবেদনও করেন। সরকারি আইনজীবি কুন্তল চট্টোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘‘দুই বোনকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। এটা জঘন্য অপরাধ। তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের জামিন দেওয়া যাবে না।’’ জামিনের আর্জি খারিজ করে বিচারক ধৃতদের ১৪ দিন জেল হাজতে পাঠান। তার আগে ধৃতেরা একান্তে বিচারকের সঙ্গে কথা বলতে চান। সেই আবেদন শুনে বিচারক অবশ্য ধৃতদের তদন্তকারী অফিসারের মাধ্যমে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার আর্জি জমা করার পরামর্শ দেন।
বিপক্ষের আইনজীবী এ দিনও অভিযোগ করেন, তাঁর দুই মক্কেলকে পুলিশ বহু আগে থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তার পরে নিজেদের হেফাজতে নিয়েও জেরা করেছে। অথচ আদালতের কাছে সেই তথ্য পুলিশ গোপন করে যাচ্ছে। তাঁর আরও দাবি, ‘‘এত দিনের তদন্তে পুলিশ চটি ছাড়া কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। পুলিশ দাবি করলেও আদতে ওই চটিটি আমার মক্কেল রামপ্রসাদেরই নয়। তর্কের খাতিরে ওই চটি আমার মক্কেলের বলে ধরে নিলেও তা দিয়ে কখনও খুনের ঘটনায় রামপ্রসাদের জড়িত থাকার কথা প্রমাণিত হয় না। এ সব থেকেই প্রমাণিত হয় যে, পুলিশ বাস্তবে খুনের কোনও কিনারাই করতে পারেনি। সন্দেহের বশে মা ও মামার বিরুদ্ধে খুনের ধারায় মামলা শুরু করেছে।’’ এ ব্যাপারে তাঁর মক্কেলরা গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আবেদন জানাবেন বলে মফিজউদ্দিন জানিয়েছেন।
অন্য দিকে,র করানোর আগে এ দিনই সকাল ১০টা নাগাদ মহম্মদবাজারের প্যাটেলনগর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ধৃতদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়। স্বাস্থ্যপরীক্ষা শেষে পুলিশ ভ্যানে ওঠার আগে রামপ্রসাদ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘‘আমি ঘটনার কিছুই জানি না।’’ তাঁর কথা শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ দু’জনকে ধরে ভ্যানে চালান করে দেয়। আর অপর্ণাদেবী কথা বলার সুযোগ পাননি। অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলার এসপি-র বক্তব্য মেলেনি। তবে, জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘ওই খুনের ঘটনায় ধৃতদের জড়িত থাকার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy