Advertisement
E-Paper

ব্যারিকেড  ভাঙতেই লাঠিচার্জ

 ২) জেলাশাসকের দফতরের গেটের বাইরে সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। ৩) চলল লাঠি। ছবি: সুজিত মাহাতো জেলায় এ বার পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম তথা বামেদের প্রাপ্ত ভোট কমলেও, এ দিনের আন্দোলন আখেরে দলের সংগঠনকে মজবুত করবে বলেই আশাবাদী বামনেতারা। তাঁদের মতে, যত প্রশাসনিক বাধা আসবে, ততই কর্মীদের জেদ বাড়বে। সেই সঙ্গে মনোবলও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৮ ০২:২১
 জেলাশাসকের দফতরের গেটের বাইরে সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। ছবি: সুজিত মাহাতো

 জেলাশাসকের দফতরের গেটের বাইরে সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। ছবি: সুজিত মাহাতো

বামেদের কৃষকসভা ও খেতমজুর সংগঠনের জেল ভরো আন্দোলনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার বাধল পুরুলিয়ায়। জেলাশাসকের অফিসের সামনে আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভাঙতেই পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। বামেদের দাবি, বিনা প্ররোচনায় পুলিশের লাঠির ঘায়ে তাঁদের বেশ কয়েকজন আহত হন। নিরীহরাও ছাড়া পায়নি। প্রাক্তন মন্ত্রী বিলাসীবালা সহিসকে টেনে হিঁচড়ে পুলিশ গাড়িতে তোলে বলে অভিযোগ।

যদিও পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া সেই অভিযোগে উড়িয়ে দাবি করেন, ‘‘মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ করেই ঢিল ছোড়া হয়েছে। কয়েকটি থানার ওসি-সহ বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। মামলাও রুজু করা হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়েই পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়েছে।’’ ইট ছোড়ার অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের এই আচরণের প্রতিবাদে আজ, শুক্রবার জেলা জুড়ে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে সিপিএম।

জেলায় এ বার পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম তথা বামেদের প্রাপ্ত ভোট কমলেও, এ দিনের আন্দোলন আখেরে দলের সংগঠনকে মজবুত করবে বলেই আশাবাদী বামনেতারা। তাঁদের মতে, যত প্রশাসনিক বাধা আসবে, ততই কর্মীদের জেদ বাড়বে। সেই সঙ্গে মনোবলও।

চলল লাঠি। ছবি: সুজিত মাহাতো

কৃষক ঋণমুক্তি অধিকার ও কৃষিপণ্যের লাভজনক সর্বনিম্ন সহায়ক মূল্য বিলটিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গ্রহণের দাবি, একশো দিনের কাজের বদলে দুশো দিন, এই প্রকল্পে কাজের ন্যূনতম মজুরি তিনশো টাকা করা-সহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে জেল ভরো কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। এ দিন দুপুরে পুরুলিয়া শহরের জুবিলি ময়দান থেকে আন্দোলনকারীদের মিছিল শুরু হয়। মিছিলে ছিলেন প্রবীণ সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া, মণীন্দ্র গোপ, আদিবাসী নেতা রবীন্দ্রনাথ হেমব্রম, প্রাক্তন মন্ত্রী বিলাসীবালা সহিস-সহ প্রাক্তন বিধায়কেরা।

জেলাশাসকের অফিস চত্বর-সহ আশপাশের এলাকা পুলিশি ঘেরাটোপে চলে গিয়েছিল। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় মিছিল আটকাতে ব্যারিয়ার বসিয়ে ব্যারিকেড করে থাকে বিশাল সংখ্যক পুলিশ। কয়েকটি রাস্তায় চলাচলও সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আনা হয় জলকামানও।

বেলা তিনটে নাগাদ মিছিল জেলাশাসকের অফিসের অদূরে ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান প্রবেশ পথের কাছে পৌঁছতেই আটকে দেয় পুলিশ। সে সময়ে বচসা বাধে। শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। গেটের সামনে থেকে গার্ডরেল তুলে ফেলে দেন আন্দোলনকারীরা। ঠেলাঠেলি চলার মাঝে আচমকা পিছনের দিক থেকে জুতো ও ঢিল উড়ে আসে বলে অভিযোগ। চোট পেতেই পুলিশ কর্মীরা লাঠিচার্জ শুরু করে দেন। প্রাক্তন মন্ত্রী বিলাসীবালা সহিস-সহ কয়েকজনকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তোলে পুলিশ। আন্দোলনকারীরা কিছু দূরে রাস্তার উপরে বসে পড়েন।

বিলাসীবালা বলেন, ‘‘এক মহিলা পুলিশ আমাকে টেনে হিঁচড়ে জিপে তোলে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের দাবি, ‘‘২০১১-র পরে একাধিক আইন অমান্য আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু এ ভাবে বিনা প্ররোচনায় পুলিশ নিরস্ত্র মিছিলের উপরে লাঠি চালায়নি।’’ তাঁর দাবি, আদিবাসী নেতা সুশান্ত বেসরা-সহ একাধিক নেতা-কর্মী পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত হয়েছেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বেশির ভাগ অভিযোগ বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। অথচ তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের পুলিশ নির্মম ভাবে লাঠি চালিয়ে আমাদের বাধা দিল!’’ তাঁর দাবি, পুলিশকে লক্ষ করে তাঁদের কেউ ঢিল ছোড়েননি। গণ্ডগোল পাকাতে বাইরের কেউ মিছিলে ঢুকে ঢিল ছুড়ে থাকতে পারে।

CPM Programme Police Lathi Charge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy