হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল আগেই। এ বার শুক্রবার ঝালদার পুরপ্রধানের পদে শপথ নিলেন প্রদীপ কর্মকার। পুরসভার দখল তৃণমূলের হাতেই থাকছে। কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট কাউন্সিলরা জানিয়েছেন, তাঁরা প্রদীপবাবুকে বাইরে থেকে সমর্থন জানিয়েছেন। বর্তমান বোর্ডে এই নিয়ে তিন জন পুরপ্রধানের কুর্সিতে বসলেন। বাসিন্দাদের মন্তব্য, ঝালদা পুরসভার ‘রীতি রেওয়াজ’ মেনে যথারীতি আগের দুই পুরপ্রধানই অনাস্থায় অপসারিত হয়েছেন। প্রদীপবাবুর কুর্সি-প্রাপ্তির পিছনেও সেই অনাস্থা কাণ্ডই রয়েছে।.
বন্ধ পুরসভার বারান্দায় যেখানে ‘তলবি সভা’ করে আগের পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবালকে অপসারিত করেছিলেন অনাস্থায় স্বাক্ষরকারী নয় কাউন্সিলর, শুক্রবার সেই বারান্দাতেই শপথ নিলেন প্রদীপ। এ দিন তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান ঝালদার মহকুমাশাসক সন্দীপ টুডু। তারপরেই প্রদীপ উপপুরপ্রধান হিসেবে কাঞ্চন পাঠককে শপথ দেওয়ান।
গত ২২ মে পুরপ্রধান সুরেশের বিরুদ্ধে দলীয় ও বিরোধী নয় কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। কিন্তু, সুরেশ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অনাস্থা সংক্রান্ত তলবিসভা ডাকেননি। তারপরে সভা ডাকার এক্তিয়ার ছিল তৎকালীন উপপুরপ্রধান কাঞ্চনের। কিন্তু, কাঞ্চন বিক্ষুব্ধ শিবিরে থাকায়, তলবিসভা ডাকার আগেই সুরেশ তাঁকে উপপুরপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেন। পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধানের তলবিসভা ডাকার সময়সীমা পার হতেই নিয়ম অনুযায়ী অনাস্থায় স্বাক্ষরকারী তিন কাউন্সিলর তলবিসভা ডাকেন।
পুরভবন বন্ধ থাকায় তাঁরা পুরসভার বারান্দাতেই তলবিসভা ডেকে নিয়ম মেনে সুরেশকে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের কাছে দাবি করেন। এই সভা বৈধ, না অবৈধ সেই প্রশ্নও ওঠে। বিক্ষুব্ধরা পুরপ্রধান হিসেবে প্রদীপকে নির্বাচিত করেন। এ সবের মধ্যে হাইকোর্টে মামলাও শুরু হয়। তারপরে হাইকোর্ট তাঁকে শপথ নিতে নির্দেশ দেয়।
এ দিন শপথের পরে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরা বলেন, ‘‘অনেক লড়াইয়ের পরেই ঝালদার মানুষের প্রতিনিধি এই চেয়ারে বসলেন।’’ বিরোধী কাউন্সিলর মহেন্দ্রকুমার রুংতা বলেন, ‘‘আমরা ন’জন মিলে প্রদীপকে পুরপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেছিলাম। কিন্তু শপথ গ্রহণ না করায় তিনি কাজ করতে পারছিলেন না। সে জন্য আমাদের হাইকোর্টের দ্বারস্থও হতে হয়। হাইকোর্টের রায়েই এ দিনের শপথ।’’
শপথের পরে পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধানকে সমর্থকদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে মিছিলেও পা মেলাতে হয়। সমর্থকদের পুরসভা চত্বরে মিষ্টিও বিলি করতে দেখা যায়। কিন্তু প্রাক্তন পুরপ্রধান সুরেশকে এ দিন পুরসভায় দেখা যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে, তিনি বাইরে।
প্রদীপ আশ্বাস দেন, ‘‘দ্রুত সকলের জন্য বাড়ি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চাই। প্রাক্তন পুরপ্রধান সুরেশবাবুর অভিজ্ঞতাও আমাদের সঙ্গে থাকবে।’’