E-Paper

সারদাদেবীর স্মৃতিধন্য পুজো ১০১ বছরে

মাতৃমন্দিরের তরফে সন্ন্যাসী স্বামী পররূপানন্দ বলেন, “১৯০১ সালে বেলুড়ে দুর্গাপুজো শুরু হয়। পুজোয় উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং মা সারদা। পুজো যখন প্রায় শেষ, স্বামী বিবেকানন্দ সাধু, ব্রহ্মচারী, ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘মূর্তিপুজো তো হল। এ বারে জ্যান্ত দুর্গার পুজো হবে।”

অভিজিৎ অধিকারী

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৬:৪৭
বাঁকুড়ার জয়রামবাটি মাতৃমন্দিরে জোরকদমে চলছে প্রতিমা তৈরি করার কাজ।

বাঁকুড়ার জয়রামবাটি মাতৃমন্দিরে জোরকদমে চলছে প্রতিমা তৈরি করার কাজ। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী।

সারদাদেবী যখন বাঁকুড়ার জয়রামবাটিতে ছিলেন, তখন সেখানে দুর্গাপুজোর প্রচলন ছিল না। আর আজ তাঁর জন্মভিটে জয়রামবাটির মাতৃমন্দিরে ফি বছর দুর্গাপুজোয় ঢল নামে ভক্ত, পর্যটকদের। নিয়ম মতো সারদাদেবীর বংশের কোনও কুমারীকে দেবী রূপে বরণ করে মহাষ্টমীতে হয় কুমারী পুজো। এ বারে মাতৃমন্দিরে ১০১তম দুর্গোৎসব উদ্‌যাপন ঘিরে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে তোড়জোড়। ভিড় বাড়বে অনুমান করে চলছে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও।

মাতৃমন্দিরের তরফে সন্ন্যাসী স্বামী পররূপানন্দ বলেন, “১৯০১ সালে বেলুড়ে দুর্গাপুজো শুরু হয়। পুজোয় উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং মা সারদা। পুজো যখন প্রায় শেষ, স্বামী বিবেকানন্দ সাধু, ব্রহ্মচারী, ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘মূর্তিপুজো তো হল। এ বারে জ্যান্ত দুর্গার পুজো হবে'। বলেই মা সারদার পায়ে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে জ্যান্ত দুর্গার পুজো শুরু করেন। সেই জ্যান্ত দুর্গার জন্মস্থানে দুর্গাপুজোর বিশেষ আকর্ষণ থাকবেই।”

মাতৃমন্দিরের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯২৫ সালে জয়রামবাটি মাতৃমন্দিরে ঘটে, পটে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু হয়। সে সময়ে নাটমন্দির তৈরি হয়নি। বছর ছয়েক সে ভাবেই পুজো চলে। ১৯৩২-এ প্রথম মাটির প্রতিমা গড়ে পুজো শুরু হয়। ১৯৫৩ সালে সারদাদেবীর জন্মশতবর্ষ পালিত হয় মাতৃমন্দিরে। তার পরের বছরে তৈরি হয় নাটমন্দির। ১৯৫৪-২০১০ পর্যন্ত নাটমন্দিরেই দুর্গাপুজো হত। ২০১১ সালে নাটমন্দিরের বাইরে অস্থায়ী মণ্ডপ তৈরি করে পুজোর শুরু। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা মাথায় রেখে গত বছর থেকে লোহার কাঠামোয় মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। কমিটির তরফে জানা যায়, ফি বছর মহানবমীতে প্রায় ২০ হাজার ভক্ত প্রসাদ নেন। এ বারে সংখ্যা আরও বাড়বে বলে অনুমান।

পুজোয় ফুল, মালা সরবরাহকারী মধু মালাকার বলেন, “গত ৪৮ বছর ধরে ফুলের জোগান দিই। পুজোয় পর্যটক উপচে পড়ে। তবে রেললাইন চালু হলে ভক্তদের আসা-যাওয়া আরও বাড়ত।”

কসবা থেকে পরিবার নিয়ে এসেছিলেন প্রবীণ সুশ্রুত বসু। তিনি বলেন, “মাতৃমন্দিরে এলে তৃপ্তি পাই। উমাই বলি আর দুর্গাই বলি, মা সারদা জগজ্জননী, জ্যান্ত দুর্গা।” পেশা সূত্রে ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা তৃষা দত্ত রায়ও বলেন, “দুর্গাপুজোয় মাতৃমন্দিরে আসা চাই। কুমারী পুজো দেখার সুযোগ হারাতে চাই না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2025 Jayrambati

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy