বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে অমর্ত্য সেনকে হেনস্থার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ। রবিবার শান্তিনিকেতনে। নিজস্ব চিত্র
অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদ করার যে পরিকল্পনা বিশ্বভারতীর উপাচার্য করেছেন, তা আসলে আরএসএসের পরিকল্পনা। এই চক্রান্ত দিল্লি সরকার চালাচ্ছে। উপাচার্য তাদের কথা মতো চলছেন। রবিবার পাড়ুইয়ে এক কর্মসূচিতে এমনই মন্তব্য করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। অন্য দিকে, নোবলজয়ী অমর্ত্য সেনকেকে অসম্মানের প্রতিবাদে প্রতীচী বাড়ির সামনে লাগাতার অবস্থান রবিবারও জারি রইল। পাশাপাশি, কালকের মতো আজও রবীন্দ্রভবনের সমস্ত বিভাগ বন্ধ রইল। অন্য গেটেও তালা ঝুলিয়ে দিতে দেখা গেল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা পড়ুয়াদের হোস্টেল থেকে বেরোনোর ক্ষেত্রেও সর্তকতা বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর।
অমর্ত্য সেনের প্রতি বিশ্বভারতীর আচরণের প্রতিবাদে শনিবার প্রতীচী বাড়ির সামনে দু’টি মঞ্চ তৈরি করে অবস্থান শুরু হয়েছে। শনিবারের মতো রবিবারও বাউল গানের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ সংগঠিত হয়। এ দিন ধর্না মঞ্চ থেকে প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “ওঁকে (অমর্ত্য) খুব কাছে থেকে দেখেছি। ওঁর মতো মানুষকে যে ভাবে অশ্রদ্ধা করা হচ্ছে, তা মানা যায় না। আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি বিশ্বভারতী এত গুণী মানুষকে হেনস্থা করছে। এ বার হয়তো বিশ্বভারতীর চেতনা হবে।”
যদিও এ দিন পাড়ুইয়ে সিপিএম-কংগ্রেসের যৌথ কর্মসূচিতে সুজন বলেন, ‘‘অমর্ত্য সেনকে অপমানের প্রতিবাদে বুদ্ধিজীবীরা বিরোধীতা করলেন। গতকাল দেখা গেল তৃণমূল যেন ঐ মঞ্চ দখল করতে চাই। বুদ্ধিজীবীদের পিছনে তৃণমূলের গরু, কয়লা পাচারের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীরা ওই মঞ্চে বসে আছেন। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশ্রমিক, পড়ুয়ারা এর মধ্যে যেতে চাইছেন না।’’
অন্য দিকে, বিশ্বভারতীর বিভিন্ন গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। রবীন্দ্রভবনের গেটে একটি নোটিস সাঁটিয়ে অনিবার্য কারণে শনি ও রবিবার রবীন্দ্রভবনের সমস্ত বিভাগ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। পরে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সোমবার পর্যন্ত রবীন্দ্রভবনের সমস্ত বিভাগ বন্ধ থাকবে। অনেকেই মনে করছেন, ধর্না আন্দোলনের জেরে বিশ্বভারতীর এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে। তবে পড়ুয়াদের যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে সতর্কতা আরোপ করা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন পড়ুয়া বলেন, “আন অফিসিয়ালি আমাদের সতর্ক করা হয়েছে। আন্দোলন চলার কয়েক দিন ওই প্রতিবাদ সভায় কোনও ভাবেই শামিল না হওয়ার জন্য। তবে এর কী কারণ তা আমরা জানি না।”
বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী তথা কবিগুরু হস্তশিল্প সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা বলেন, “সামান্য শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দেখেই যদি উনি (উপাচার্য) সব বন্ধ করে দেন, এতে বুঝে নিতে হবে উনি ভয় পেয়েছেন।” তবে এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর তরফে কেউ মুখ খুলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy