খুনের মামলায় অভিযুক্তকে তদন্তকারী কেন পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরার জন্য নিম্ন আদালতে আবেদন করলেন না, লাভপুরের এক মামলার প্রেক্ষিতে বুধবার সেই প্রশ্ন উঠল কলকাতা হাইকোর্টে।
পুলিশ জানায়, গত বছরের ২৭ নভেম্বর লাভপুর থানা এলাকায় একটি নদীর ধার থেকে লাল্টু খাঁ নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর দাদা লাল খাঁয়ের অভিযোগ, ‘‘হোসেন শেখ, বাবলু খান, করিশমা বিবি-সহ ছ’জন তাঁর ভাইকে খুন করে নদীর ধারে ফেলে দেয়। পুলিশ ওই ঘটনায় হোসেনকে গ্রেফতার করলেও তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে অন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা করেনি।’’ সেই কারণেই লাভপুর থানার বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের দাদা।
বুধবার সেই মামলার শুনানি ছিল হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের আদালতে। লাল খাঁর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি ও সঞ্জীব দাঁ আদালতে প্রশ্ন তোলেন, অন্য ক্ষেত্রে পুলিশ অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার জন্য নিম্ন আদালতে আবেদন জানায়। এ ক্ষেত্রে বোলপুর আদালতে সেই আবেদন জানায়নি পুলিশ। পুলিশি তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীরা।
বিচারপতি দত্ত সরকারি কৌঁসুলি শুভব্রত দত্তের কাছে তদন্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে, ওই আইনজীবী জানান, অভিযুক্তরা পলাতক। অনেক জায়গায় অভিযান চালিয়েও তাদের সন্ধান মেলেনি। সেই কারণে গত ১৯ অগস্ট বোলপুর আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত তা মঞ্জুর করেছে। দু’পক্ষের সওয়াল শুনে বিচারপতি দত্ত জানিয়ে দেন, নিম্ন আদালত যেহেতু গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে, সেই কারণে তদন্তকারী অফিসারকে পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য আরও কিছু সময় দেওয়া উচিত।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন নিখোঁজ থাকার পরে লাল্টুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বছর বত্রিশের ওই যুবকের বাড়ি লাভপুরের সাওগ্রামে। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে সে থাকত নানুরের পোশলা গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে। সেখান থেকেই ২৩ নভেম্বর সে নিখোঁজ হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে। তিন দিন পরে সকালে লাভপুরের লা’ঘাটা শ্মশানের কাছে কুঁয়ে নদীতে তার পচাগলা দেহ ভাসতে দেখা যায়। মৃতের গলায় এবং মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
সে সময় মৃতের এক ভাই মঙ্গল খাঁয়ের অভিযোগ ছিল, এক আত্মীয়ার বিয়ে সংক্রান্ত বিবাদের জেরে কয়েক জন দুষ্কৃতী দাদাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করে। পুলিশ অবশ্য ওই অভিযোগ মানতে চায়নি। তাদের দাবি, মৃত যুবক নানা অপরাধে জড়িত। নানুর এবং লাভপুর থানায় তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও রয়েছে। সেই কারণেই ওই খুন হয়ে থাকতে পারে। এরপরই অভিযোগ দায়ের হয়। ওঠে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ। তার প্রেক্ষিতেই ওই মামলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy