Advertisement
E-Paper

দুবরাজপুর স্টেশনের প্রতি যত্নবান হোক রেল

পূর্ব রেলের অন্ডাল-সাঁইথিয়া শাখায় থাকা দুবরাজপুর স্টেশনটি ব্রিটিশ আমলের তৈরি। এলাকাবাসীর কাছে স্মৃতি বিজড়িত এই রেলপথ ও স্টেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। দুবরাজপুর শহরের ৪০ হাজার নাগরিক ছাড়াও খয়রাশোল, রাজনগর, এমনকী লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ দুবরাজপুর স্টেশনের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু রেলের কাছে বরাবরই যেন তা উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে।

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৫ ০০:৪৪
সম্ভাবনা থাকলেও পর্যটনে পিছিয়ে সুন্দরী পাহাড়েশ্বর।

সম্ভাবনা থাকলেও পর্যটনে পিছিয়ে সুন্দরী পাহাড়েশ্বর।

পূর্ব রেলের অন্ডাল-সাঁইথিয়া শাখায় থাকা দুবরাজপুর স্টেশনটি ব্রিটিশ আমলের তৈরি। এলাকাবাসীর কাছে স্মৃতি বিজড়িত এই রেলপথ ও স্টেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। দুবরাজপুর শহরের ৪০ হাজার নাগরিক ছাড়াও খয়রাশোল, রাজনগর, এমনকী লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ দুবরাজপুর স্টেশনের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু রেলের কাছে বরাবরই যেন তা উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে। বছর চারেক আগে শাখাটি ডাবল লাইন ও বৈদ্যুতিকরণ হয়েছে। পরিকাঠামো উন্নত হওয়ায় এই শাখায় বহু দূরপাল্লার ট্রেনের যাতায়াতও বেড়েছে। অথচ দুবরাজপুর শহর তথা এলাকার মানুষের কোনও সুরাহা হয়নি। সব থেকে খারাপ লাগে দূরপাল্লার ট্রেনগুলির একটিরও স্টপেজ দুবরাজপুরে না দেওয়ায়। অথচ দূরপাল্লার দু’টি ট্রেন (বনাঞ্চল এবং মালদা-দিঘা) স্টপেজের জন্য দীর্ঘ দিন থেকে রেলের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছেন মানুষ। নাগরিক সমিতির পক্ষ থেকেও বহু বার এ নিয়ে রেলের কাছে দরবার করা হয়েছে। কোনও কাজ হয়নি। দু’টি কলকাতা যাওয়ার ট্রেন, ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার এবং হুল এক্সপ্রেস থাকলেও সেই দু’টি ট্রেনের সময়সারণির পরিবর্তন জরুরি। সেটা না হলে কলকাতায় গিয়ে কাজ সেরে ফিরে আসা কষ্টসাধ্য। ফুট ওভারব্রিজ থাকলেও তাতে এখনও শেড নেই। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কোনও ধরনের সংস্কার না হওয়ায় দুবরাজপুর স্টেশন যাওয়ার দু’টি পথই চলাচলের অযোগ্য ছিল। একটি রাস্তা অবশ্য সম্প্রতি সংস্কার করেছে রেল। বাকি দিকগুলিতেও সমান যত্নবান হোক রেল। শুধু এটুকুই চাইব।

শ্যামাপ্রাসাদ মিশ্র

(চিকিৎসক, দুবরাজপুর নাগরিক সমিতির সম্পাদক)

পাহাড়েশ্বর ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র চাই

সমতল শহরের একপ্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বিশাল বিশাল নানা আকৃতির গ্রানাইড পাথরের খণ্ডগুলোই বিস্ময়ের উদ্রেক করে, আকর্ষণ করে। নাম পাহাড়েশ্বর। গাছ-গাছালি ঘরা অসংখ্য পাথরের খণ্ডের মধ্যে অদ্ভুত ব্যালান্সে দাঁড়িয়ে থাকা দু’টি পাথরের জন্য নামকরণ হয়েছে মামা-ভাগ্নে। প্রকৃতির খেয়ালে গড়ে ওঠা মাম-ভাগ্নের টানে শুধু স্থানীয়রাই নন, বহু বাইরের মানুষ ছুটে আসেন। তাই প্রকৃতির স্নেহধন্য পাহাড়েশ্বরকে ঘিরে সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্র ও পিকনিক স্পট গড়ে তুলতে বহু বছর ধরেই সচেষ্ট হয়েছে পুরসভা। তৈরি হয়েছে শিশুদের জন্য পার্ক। পাহাড়েশ্বরের নব নির্মিত শিব মন্দিরের চূড়া তো দূরের গ্রাম থেকেও দেখা যায়। বছর তিনেক আগে মামা-ভাগ্নে সংলগ্ন দু’টি তালগাছের একটি ঝড়ে ভেঙে পড়লেও মানুষ আকর্ষণ কমেনি। কিন্তু, এত কিছুর পরেও একটা কিন্তু থাকছে। সেটা হল এলাকার পরিচ্ছনতা ও পরিবেশ। শিব মন্দিরকে বাঁয়ে রেখে যে পথ ধরে মামা-ভাগ্নে পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন সকলে, সেই পথটি অত্যন্ত নোংরা। এ ছাড়া বেশ কয়েক বছর ধরে সকাল সন্ধ্যা নেশারুদের যথেচ্ছ বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে পাহাড়েশ্বর। এখানে বেড়াতে আসা মানুষ জনের পক্ষে যা মোটেই সুখকর নয়। সেই দিকটা যদি একটু নজরে রাখে প্রশাসন, তা হলে জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হওয়ার সব সুযোগই ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ঘেঁষা পাহাড়েশ্বরের রয়েছে।

মুজিব দত্ত (ব্যবসায়ী)

শহরের বিড়ি শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ান

পেটে চালাতে বিড়ি তৈরিই ভরসা। কিন্তু, সরকারি সুযোগ-সুবিধা কই?

দুবরাজপুর ১০ নম্বর ওয়ার্ডে আমার বাড়ি। পেশায় বিড়ি শ্রমিক। এক হাজার বিড়ি বাঁধলে পারিশ্রমিক সাকুল্যে ৭৫ টাকা। বাড়িতে সাত জন সদস্য। বিবাহযোগ্য তিন মেয়ে। তারা হাত লাগায় এ কাজে। সবাই মিলে সারা দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করলেও দারিদ্র পিছু ছাড়ছে না। কী ভাবে সংসার চলবে কিছু একটা হয়ে গেলে, শুধু সেই চিন্তা হয়। এই ছবি শুধু আমার পরিবারেই নয়, বিড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত আধিকাংশ পরিবারেরই। আমার পরিবারের তো তা-ও সরকারি পরিচয়পত্র রয়েছে। অনেকরই আবার তা-ও নেই। এখন সরকার স্বীকৃত পরিচয়পত্র পেতে গেলে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান গিয়ে করাতে হয়। এই গরিব মানুষগুলোর পক্ষে এত দূরে গিয়ে সেখানে থেকে ওই পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। এই দিকটা যদি প্রশাসন দেখে, যাতে আমাদের প্রাপ্যটুকু যেন পাই। বাধিত হব।

আয়েশা বিবি (বিড়ি শ্রমিক)

শহরে ভাল রেস্তোরাঁ চাই

দুবরাজপুর দীর্ঘ দিনের পুরসভা। এত মানুষের বাস এ শহরে। অথচ একটাও ভাল রেস্তোরাঁ নেই। কেমন বেমানান ন? আমার অন্তত তা-ই মনে হয়। আমার বাপের বাড়ি ব্যস্ত শহরেই। কিন্তু, বিয়ে হয়ে শহর দুবরাজপুরে এসে কেমন যেন হোঁচট খেয়েছিলাম। শহর অথচ গ্রাম। যদিও ক্রমে শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে মন বসে গিয়েছে। কিন্তু, দু’একটি বিষয় নিয়ে এখনও আমার আক্ষেপ রয়েছে। এক, এখানে বিনোদনের যথেষ্ট অভাব। পাহাড়েশ্বরে মামা-ভাগ্নে ছাড়া শহরে তেমন কোনও যাওয়ার জায়গা নেই। আর যে বিষয়টি বলেতে চেয়েছিলাম প্রথমেই, সেটা হল তেমন রেস্তোরাঁ না থাকা। সপরিবারে যেখানে গিয়ে একটু খাওয়াদাওয়া করা যায়। কিংবা ভিন্ন কোনও পদ সেখান থেকে আনিয়ে একটু স্বাদ বদল করা যায়। প্রতি দিনই একঘেয়ে রান্না করে ক্নান্ত হয়ে পড়েলে, কখনও তো বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করে। কিন্তু, উপায় নেই। আমার মনে হয় অনেক গৃহিনীই আমার সঙ্গে একমত হবেন। দু’একটি রেস্তোরাঁ আছে হয়তো। কিন্তু, পদের সঙ্গে স্বাদ বা দামের কোনও সাযুজ্য নেই। বিষয়টি একটু ভেবে দেখতে পারেন শহরের ব্যবসায়ীরা। যুগ বদলেছে। একটু ভাবুন।

সুমনা আচার্য (গৃহবধূ)

rail station Dubrajpur doctor train jharkhand
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy