মহম্মদবাজারে প্রস্তাবিত ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনির কাজ শুরু হবে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে। বুধবার নিউটাউনে আয়োজিত গ্লোবাল বেঙ্গল বিজ়নেস সামিট (বিজিবিএস) থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার পরেই প্রশাসনে তৎপরতা শুরু হয়েছে। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে কাজ শুরু হবে।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান, ১২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত অছে। কাল থেকেই কাজ শুরু হচ্ছে প্রকল্পের কাজ। সব কিছু প্রস্তুত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা কাল থেকেই শুরু করব কাজ। আপনাদের ছেলেমেয়েরা চাকরি পাবে। আপানারা খুশি হবেন। এখানে এক লক্ষের বেশি কর্মসংস্থান হবে। অনুসারী শিল্পও হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।’’
এই ঘোষণার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মিলেছে জমিদাতা, স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের থেকে। এলাকার জমিদাতা ছুতোর টুডু বলেন, ‘‘দ্রুত শিল্প হোক চাই।’’ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েও দিশম গাঁওতা নেতা রবীন সরেনের দাবি দাবি, এলাকার মানুষের স্বার্থ যেন দেখা হয়। খনি বিরোধী অন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রতন হাঁসদা বলছেন, ‘‘শিল্প গড়ার আগে মানুষের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।’’
তবে, প্রশাসন সূত্রেই জানা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেও বৃহস্পতিবার থেকে কাজ শুরু হবে কি না, সে নিয়ে সংশয় আছে। গত ২ জানুয়ারি ডেউচা পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখে গিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেদিনই মুখ্যসচিব জানিয়েছিলেন, প্রথমে কয়লা ভান্ডারের উপরে মজুত কালো পাথর (ব্ল্যাক স্টোন) উত্তোলনের কাজ শুরু হবে। কয়লা খনি গড়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কালো পাথর তোলার প্রক্রিয়াটিকেই খনির কাজে হাত দেওয়া হিসাবে ধরা হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকার চাঁদা মৌজার (সরকারি জমি হিসাবে চিহ্নিত) ১২ একর জমিতে কালো পাথর তোলার প্রক্রিয়া শুরু হবে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ওই অংশের পাথর তোলার দরপত্র চূড়ান্ত হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ওই অংশের উপরে থাকা ৯৮০টি গাছকে ‘ট্রান্সলোকেট’ করা বা পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্তও নিয়েছে প্রশাসন। তার জন্যও দরপত্র চূড়ান্ত হয়েছে। সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। বৃহস্পতিবার যে ১২ একর জমিতে কাজ শুরু হবে, সেখানে সমস্যা নেই বলেই সূত্রের খবর।
এলাকার বাসিন্দাদের না সরিয়ে য়লা খনির কাজ শুরু করতে চেয়েছে প্রশাসন। চাঁদা মৌজায় ৩২৬ একর জমিকে প্রথম পর্যায়ে কাজ শুরু করার জন্য চিহ্নিত করে প্রশাসন। যেটা মূলত সরকারি খাস জমি। আরও প্রায় ৪০ একর জমি (ব্যক্তিমালিকানাধীন) জমিও নিচ্ছে প্রশাসন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)