Advertisement
E-Paper

ভিড় সেলেব নেতা-নেত্রীর

রবিবার হলেও, প্রচারে বিরাম নেই কোনও দলেরই। জেলায় এ দিন ছিল পুরভোটের আগে শেষ রবিবার। আর এ দিনই জেলায় এসে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তারকা নেতা-নেত্রীরা প্রচারে গতি দিলেন। সিউড়ি থেকে রামপুরহাট, বোলপুর-সাঁইথিয়া সর্বত্র তাঁদের ঘিরে দেখা গেল রবিবাসরীয় প্রচারে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৩৬
সিউড়িতে প্রচারে অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

সিউড়িতে প্রচারে অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

রবিবার হলেও, প্রচারে বিরাম নেই কোনও দলেরই। জেলায় এ দিন ছিল পুরভোটের আগে শেষ রবিবার। আর এ দিনই জেলায় এসে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তারকা নেতা-নেত্রীরা প্রচারে গতি দিলেন। সিউড়ি থেকে রামপুরহাট, বোলপুর-সাঁইথিয়া সর্বত্র তাঁদের ঘিরে দেখা গেল রবিবাসরীয় প্রচারে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা।

এ দিন সিউড়ির এসপি মোড় থেকে বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় শহরে দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে র‌্যালি করেন। র‌্যালির আগে থেকেই অবশ্য প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে কর্মী-সমর্থকরা এসে জমায়েত করেছিলেন। এ দিন রূপা বলেন, ‘‘অবাধ শান্তিপূর্ণ ভোট এখানেও হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছি। আরও সতর্ক হতে হবে আমাদের। পুলিশকে তার দায়িত্ব প্রতিদিন মনে করাতে হবে। কলকাতায় অনেক মানুষ বিক্রি হয়েছেন। এখানে এমন হবে বলে, মনে করি না।’’ তিনি এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর শিল্পীসত্তা নিয়েও কটাক্ষ করেন। বলেন, ‘‘উনি বলছেন, তিনটি আঁচড়েই ১০ লক্ষ টাকায় ছবি বিক্রি হবে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে এতবড় শিল্পী উনি, সেটা তো জানা ছিল না। এখানে অনেক প্রতিভাশালী শিল্পী রয়েছেন, যাঁদের উনি অসম্মান করছেন।’’

এসপি মোড় থেকেই এ দিন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের র‌্যালি করার কথা ছিল। তাঁর অসময়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য রূপা এ দিন শতাব্দীকে ধন্যবাদ দেন। বিজেপির র‌্যালি বের হওয়ার পর, ওই একই জায়গা থেকে শতাব্দীর নেতৃত্বে শাসক দলের কর্মী-সমর্থকরা র‌্যালির প্রস্তুতি নেয়। জেলায় পুরভোটে সন্ত্রাস হতে পারে বলে, রূপার যে আশঙ্কা, শতাব্দী তার উত্তরে বলেন, ‘‘উনি তো সবে রাজনীতিতে এসেছেন। বিরোধী দলে থাকলে এমন কথা বলতে হয়।’’ শতাব্দী সিউড়িতে দুটি পথ সভাও করেন এ দিন।

রবিবার রামপুরহাটে বাজার বন্ধ। কিন্তু রবিবারই শহরে প্রচারে ঘুরলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি মানলেনও কলকাতার ভোটে অশান্তি হয়েছে। এ দিন রামপুরহাটে দলীয় প্রচারে এসে রোড শোতে অংশগ্রহণ করার আগে রামপুরহাট ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারে অংশগ্রহণ করেন। ফিরহাদ বলেন, ‘‘জেলায় পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। তার কারণ হচ্ছে, যারা অশান্তি করতে , যারা গুজরাটে অশান্তি করেছে, যারা মজফফর নগরে অশান্তি করেছে তাদের রাজ্যে স্থান নেই। এখানে আমরা চাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।’’ তাঁর দাবি, বীরভূমে চারটি পুরসভার সব কটি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা জিতবে।

আর পাঁচটা কর্মব্যস্ত দিনের মধ্যে রবিবার রামপুরহাট শহরের ব্যস্ততম এবং যানজট পূর্ণ রাস্তা গুলি সাধারণত ফাঁকা থাকে। এ দিন প্রচারে দেখা যায় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সুমিত মজুমদারকে। তাঁর দাবি, এ বার বিজেপির হাওয়া বেশ ভালো। কামারপট্টি মোড় ছাড়িয়ে ১০ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তথা তৃণমূলের রামপুরহাট শহর সভাপতি সুশান্ত মুখোপাধ্যায়ও রবিবার প্রচারে পথে নামেন। ভোটের আগে শেষ রবিবার হাসপাতালে ভর্তি থাকা ওয়ার্ডের একজন কর্মীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। জানালেন, ‘‘আজকে ওয়ার্ডের মসজিদ তলা, কার্গিল পাড়া ঘুরেছি। কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছি।’’ ১১ নম্বর ওয়ার্ডে শিবতলা পাড়ায় ঢুকতেই ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী দিপীকা দাসের প্রচার চলতে দেখা গেল। জানালেন, ‘‘রবিবার হলেও, বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। দলের প্রতীকে ভোটটা দেওয়ার কথা বলছি।’’

ভোটের আগে রবিবাসরীয় প্রচারে সকালে মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুকান্ত সরকারের সমর্থনে চাকলামাঠ থেকে বিদ্যাসাগর পল্লি প্রচার চালিয়েছেন। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বিদ্যাসাগর সেতুর কাছে প্রচারের অবসরে সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডে চাকুরীজীবি, ব্যবসাদার মানুষের বসবাস বেশি। রবিবার, ছুটির দিন। দুপুরে ফিরহাদ হাকিমের প্রচারে থাকতে হবে, তাই সকাল সকাল প্রচার সেরে নিলাম।’’

কার্যত রবিবাসরীয় প্রচারে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ফিরহাদ হাকিমকে এনে প্রচারে ঝড় তুলল তৃণমূল। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে পায়ে হেঁটে ফিরহাদ নিজেই শ্লোগান দিতে দিতে প্রচার মিছিল করেন। পরে কিছু বামফ্রন্ট থেকে তৃণমূলে যোগদানকারীদের হাতে পতাকা তুলে দেন তিনি। পরে রামপুরহাট রক্তকরবী মঞ্চের সামনে থেকে রোড শোয়ে অংশগ্রহণ করেন। সন্ধ্যায় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি পথ সভা করা হয়।

এ দিন বোলপুরে পুরভোটের রবিবাসরীয় প্রচারে কার্যত দিনভর ব্যস্ত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীরা। এ দিন সকাল আটটা থেকে বোলপুরের ১১ আর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিপুকুর, বিবেকানন্দ পল্লি-সহও ওই দুই ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার করেন বিজেপির দলীয় দুই প্রার্থী অশোক সাহানি এবং সঞ্জয় খটিক। কখনও তৃণমূলের উন্নয়ন প্রকল্পের গাফিলতি তুলে ধরে ভোটারদের কাছে ভোট ভিক্ষা করেন তো, কখনও আবার তাঁদের দলীয় ফ্লেক্স এবং পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, গোবর দেওয়া বিষয় তুলে ধরে জেতার আর্জি জানান।

রবিবার বিশ্বভারতীর ছুটি বলে, পাঠভবনের শিক্ষক তথা, প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য ও ওয়ার্ড কমিটি সভাপতি স্বপন মুখোপাধ্যায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী রাকেশ লালাকে নিয়ে স্কুল বাগান, কলেজপল্লি এলাকায় ঘুরেছেন। এআইসিসি সদস্য বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা চিকিৎসক সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় আবার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডাঙ্গালি কালিতলায় দলীয় প্রার্থী অজয় ঘোষকে নিয়ে প্রচারে বের হন।

রবিবার বামেরাও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে পথ সভা করেছে। এ দিন সকাল থেকে বামেদের দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে পথসভা হয়েছে বোলপুরের ১৭, ২০, ১০, ১৮, ১৯ নম্বার ওয়ার্ডে। প্রচারে ছিলেন শাসকদলের প্রার্থীরাও।

ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

roopa ganguly shatabdi roy suri municipality election 2015 bolpur municipality election 2015 roopa shatabdi rally roopa rally suri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy