Advertisement
E-Paper

আকাশ পথে জলবিহার মুকুটমণিপুরে

মুকুটমণিপুরে নৌবিহার প্রতিবছরের চেনা ছবি। কিন্তু মাটির অনেক উঁচু থেকে, পাখির চোখে বিশাল জলাধারের টলটলে জল দেখার অভিজ্ঞতা? এমনটাই সম্ভব হতে চলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

মুকুটমণিপুরে নৌবিহার প্রতিবছরের চেনা ছবি। কিন্তু মাটির অনেক উঁচু থেকে, পাখির চোখে বিশাল জলাধারের টলটলে জল দেখার অভিজ্ঞতা?

এমনটাই সম্ভব হতে চলেছে। সোমবার পুরুলিয়ায় একটি বেসরকারি হোটেলের উদ্বোধন করতে এসে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর জলাধার এবং পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে রোপওয়ে চালু করতে চলেছে সরকার। ঘরের কাছে পুরুলিয়া গেলেই রোপওয়ে থেকে দেখা যাবে নীচের সবুজ পাহাড়ি পথে তিরতির করে বয়ে যাওয়া নদী, পাহাড়ি ঝোরার স্রোত।

রাজ্যে পালাবদলের পরে ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরুলিয়ার পর্যটনের উপরে জোর দিয়েছেন। সম্প্রতি পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে পর্যটন পরিকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। সেই বৈঠকের এক সপ্তাহ পরেই জেলায় ঘুরে গেলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতমবাবু এবং ওই দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রববানি। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পর্যটন দফতরের সচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন। এ দিন তাঁরা অযোধ্যা পাহাড় ঘুরে দেখেন।

পরে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘পর্যটকদের আনন্দ দিতে আমরা অযোধ্যা পাহাড়ে ও মুকুটমণিপুরে রোপওয়ে চালু করব। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন পুরুলিয়ার সৌন্দর্য আরও ভাল ভাবে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরতে। সে জন্যই আমরা অযোধ্যায় পরিকাঠামোর উন্নয়নে জোর দিচ্ছি।’’ জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী জানান, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, পাহাড়ের নীচের জলাধারের সামনে থেকে রোপওয়ে চালু হবে। শেষ হবে আপার ড্যামে গিয়ে।

কিন্তু কবে হবে কাজ শুরু? দফতরের সচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন জানান, অযোধ্যা পাহাড় এবং মুকুটমণিপুরে রোপওয়ে তৈরির জন্য দশ কোটি টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে। মাস তিনেকের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন অজিতবাবু।

শুধু রোপওয়ে নয়, জেলার পর্যটন পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে এ দিন মন্ত্রী জানান। পুরুলিয়ায় বেড়াতে এসে কোথায় কী দেখার আছে, কোন পথে সেখানে যাওয়া যায়, থাকার জায়গা কোথায় পাওয়া যাব— এই সমস্ত প্রশ্নে মুশকিলে পড়েন পর্যটকেরা। চটজলদি জবাব সহজে মেলে না বলে তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন। বিধানসভা নির্বাচনের জেলায় প্রচারে এসে একটি হোটেলে কয়েক দিন কাটিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় তাঁর কানে উঠেছিল পর্যটকদের এই সমস্ত সমস্যার কথা। সেগুলি মেটাতে এ বার পদক্ষেপ করতে চলেছে সরকার। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘এ দিন আমরা জেলা প্রশাসনের শীর্ষস্তরের আধিকারিক এবং জেলার হোটেল মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ঠিক হয়েছে, পুরুলিয়া স্টেশনে একটি ট্যুরিজম ইনফরমেশন সেন্টার চালু করা হবে। এ ছাড়া অযোধ্যা পাহাড়ের পাদদেশে পর্যটকদের জন্য চালু হবে ডে-কেয়ার সেন্টার।’’ জেলা প্রশাসনিক ভবনে রাজ্য পর্যটন নিগমের একটি শাখা কার্যালয়ও খোলার কথা জানিয়েছেন তিনি। সেই কার্যালয় থেকে পর্যটকেরা যাবতীয় সহায়তা পাবেন। পাহাড়ে চারটি ওয়াচ টাওয়ার ও কিছু কটেজ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পর্যটনের পরিকাঠামো উন্নত হলে জেলার অনেক বাসিন্দার রোজগারের বন্দোবস্ত আরও মজবুত হবে। বিভিন্ন এলাকায় পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য ভাল পরিবহণ প্রয়োজন হবে। তার জন্য গতিধারা প্রকল্প থেকে গাড়ি কিনে পরিবহণ ব্যবসা শুরু করতে এলাকার যুবকদের উৎসাহ দেওয়া হবে। পাশাপাশি, জয়চণ্ডী পাহাড়ের পর্যটন পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং কাশীপুরের পঞ্চকোট রাজবাড়ি ও পুঞ্চার পাকবিড়রা জৈন তীর্থক্ষেত্রে হেরিটেজ ট্যুরিজমের ব্যবস্থা করার কথা ভাবা হচ্ছে। ওই জায়গাগুলির অবস্থা সরেজমিনে দেখতে শীঘ্রই তিনি জেলায় আসবেন বলে জানিয়ে গিয়েছেন মন্ত্রী।

mukutmanipur ropeway
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy