Advertisement
১২ ডিসেম্বর ২০২৪

ফের চন্দন গাছে কোপ বিশ্বভারতীতে

আগেই একটি শাখা কেটে নিয়ে দুষ্কৃতীরা চম্পট দিয়েছিল। এ বার চন্দন গাছটির অন্য শাখাটিও কেটে ফেলল দুষ্কৃতীরা। দু’মাসের মাথায় শনিবার গভীর রাতে ফের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর উত্তরায়ণ লাগোয়া শ্রীপল্লি এলাকা থেকে চন্দন গাছে হাত পড়ল দুষ্কৃতীদের।

উদ্ধার হওয়া চন্দন গাছের গুঁড়ি। রবিবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

উদ্ধার হওয়া চন্দন গাছের গুঁড়ি। রবিবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৫ ০১:৩২
Share: Save:

আগেই একটি শাখা কেটে নিয়ে দুষ্কৃতীরা চম্পট দিয়েছিল। এ বার চন্দন গাছটির অন্য শাখাটিও কেটে ফেলল দুষ্কৃতীরা।

দু’মাসের মাথায় শনিবার গভীর রাতে ফের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর উত্তরায়ণ লাগোয়া শ্রীপল্লি এলাকা থেকে চন্দন গাছে হাত পড়ল দুষ্কৃতীদের। তবে, গাছট়িকে বাঁচাতে না পারলেও শেষ মুহূর্তে নিরাপত্তা কর্মীদের তৎপরতায় ওই চুরি ‘আটকানো’ গিয়েছে বলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি। বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায় রবিবার বলেন, “ওই চন্দনগাছের অন্য অংশটিও দুষ্কৃতীরা কেটে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। নিরাপত্তা কর্মীদের তৎপরতায় দুষ্কৃতীরা আর সেটা নিয়ে যেতে পারেনি। আমরা কাটা অংশগুলো উদ্ধার করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় পুলিশকে জানানো হয়েছে।”

এ দিকে, গোটা ঘটনায় অবশ্য বিশ্বভারতী চত্বরে নিরাপত্তার ফাঁক আরও এক বার প্রকট হয়ে পড়েছে। দুষ্কৃতীদের সাহস উদ্বেগ বাড়িয়েছে বাসিন্দাদেরও। গত ২৬ মে ওই চন্দন গাছের পাশাপাশি দু’টি শাখার একটি চুরি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। নিরাপত্তা কর্মীরা জড়ো হতেই সামান্য কিছু টুকরো ফেলে রেখে তারা চম্পট দেয়। পরে লাগোয়া লালবাঁধ এলাকায় ওই গাছের কিছু অংশের হদিস মেলে। ওই ঘটনায় পুলিশ কাউকেই ধরতে পারেনি। বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস জুড়ে ছড়িয়ে থাকা চন্দন গাছের দিকে দুষ্কৃতীদের নজর বহু দিনের। ইতিমধ্যেই উত্তরায়ণ এবং তার লাগোয়া এলাকা থেকে বার সাতেক চন্দন গাছ চুরির চেষ্টা হয়েছে। বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্তা এবং জেলা পুলিশের এক কর্তার মতে, স্থানীয়দের একাংশের মদতে এই এলাকায় চন্দন গাছ চুরির চক্র সক্রিয় হয়েছে।

ঠিক কী ঘটেছিল?

বিশ্বভারতীর এক নিরাপত্তা কর্মী জানান, শনিবার রাত ২টো নাগাদ আচমকা শ্রীপল্লি লাগোয়া এলাকায় কাঠ কাটার শব্দ শুনতে পান টহলদারিতে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা। শুরু হয় তল্লাশি। তখনই দেখা যায় জনা দশেক দুষ্কৃতী চন্দন গাছ কেটে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করছে। ওই নিরাপত্তা কর্মীর কথায়, ‘‘দুষ্কৃতীরা অশ্রাব্য গালাগালি দিতে দিতে হুমকি দেয়, কেউ এগোলেই গুলি চালিয়ে দেবে। তার পরেই ওরা পালিয়ে যায়।’’ পরে নিরাপত্তা কর্মী এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে কাটা গাছের গুঁড়ি উদ্ধার হলেও চন্দন চোরেদের আর ধরা যায়নি।

ঘটনা হল, বিশ্বভারতীর ভিতর থেকে চন্দন গাছ চুরি কোনও নতুন ঘটনা নয়। একাধিক বার এ রকম ঘটনা ঘটতে দেখেছেন আশ্রমিকেরা। গত মে মাসের আগে শেষ বার ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের ১০০ মিটারের মধ্যে উত্তরায়ণ চত্বর থেকেই চুরি যায় আস্ত দু’টি চন্দন গাছ। এ রকম একটি ‘হাই সিকিউরিটি জোনে’ কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে লোহার তারের বেড়া কেটে চন্দন গাছ দু’টি চুরি গেল, সে প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি। রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদক চুরির পর, এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শ কাতর এলাকার থেকে বারবার চুরির ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রবীণ আশ্রমিক থেকে প্রাক্তনী এবং এলাকার বিদ্বজনেরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Santiniketan Sandalwood visva bharati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy