Advertisement
E-Paper

ফের মূর্তির ‘শুদ্ধকরণ’ 

এ দিন আদিবাসী মানুষজনের একাংশ ওই মূর্তি গোবর জল পরিষ্কার করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুভাষবাবু। পরে তিনি মূর্তির পায়ে মাল্যদান করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২০ ০২:৫৫
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন: মূর্তিতে মালা দিচ্ছেন সুভাষ সরকার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

শ্রদ্ধাজ্ঞাপন: মূর্তিতে মালা দিচ্ছেন সুভাষ সরকার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

মূর্তি-বিতর্ক নিয়ে রাজনীতি থামছে না বাঁকুড়ায়।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাঁকুড়ার পোয়াবাগানে বীরসা মুন্ডার ছবিতে মালা দিয়ে একটি আদিবাসী পুরুষ মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য দেওয়ার পরে তৃণমূল নেতাদের তত্ত্বাবধানে তা ‘দুধ-গঙ্গাজলে’ ধুয়ে ‘শুদ্ধকরণ’ করা হয়েছিল। রবিবার বীরসা মুন্ডার জন্মদিনে সেই মূর্তিটিকে কিছু আদিবাসী গোবর-জলে ধোয়ার পরে তাতে মালা দিলেন বিজেপির বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার। সেই সঙ্গে ওই মূর্তি বীরসা মুন্ডার বলে দাবি করে ফের মূর্তি-বিতর্ক উস্কে দিলেন সাংসদ। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছে তৃণমূল।

গত ৫ নভেম্বর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাঁকুড়ায় আসেন শাহ। ওই মূর্তি বীরসা মুন্ডার বলে দাবি করে সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মালা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল বিজেপি। তবে সে দিন সকালে আদিবাসী সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাজি পারগানা মহল’-এর নেতৃত্ব বিজেপির কাছে দাবি করে, ওই মূর্তি বীরসা মুন্ডার নয়। তারপরেই তড়িঘড়ি বীরসা মুন্ডার ছবি এনে ওই মূর্তির পাদদেশে রাখা হয়।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেলা ছাড়ার পরে‌র দিনই বেশ কিছু আদিবাসী মানুষজন তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে ওই আদিবাসী পুরুষের মূর্তিটি ‘শুদ্ধকরণ’ করেন। তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন, মূর্তিটি বীরসা মুন্ডার নয়। সেটি আদিবাসী পুরুষের একটি প্রতীকী মূর্তি। তবে শাহ আসায় মূর্তিটি অশুদ্ধ হয়েছে অভিযোগ তোলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

এ দিন আদিবাসী মানুষজনের একাংশ ওই মূর্তি গোবর জল পরিষ্কার করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুভাষবাবু। পরে তিনি মূর্তির পায়ে মাল্যদান করেন। সুভাষবাবুর দাবি, ‘‘এই অনুষ্ঠান একেবারেই আদিবাসী সমাজের মানুষের। আমি আমন্ত্রিত। মূর্তিটি ভগবান বীরসা মুন্ডার। দুধ-গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধকরণ করার নিয়ম আদিবাসীদের নয়। তৃণমূল সেটি করায় আদিবাসী মানুষজন ক্ষুব্ধ। তাই তাঁরা মূর্তিটি আদিবাসী রীতি মেনে এ দিন শুদ্ধকরণ করেন।”

এ দিনের কর্মকাণ্ডের উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে দাবি করে ছাতনার বাসিন্দা সন্তোষ মান্ডি বলেন, “প্রতি বছর ভগবান বীরসা মুন্ডার জন্মদিনে আদিবাসী মানুষজন জড়ো হয়ে মূর্তিটিতে শ্রদ্ধা জানান। কিছু দিন আগেই মূর্তিটিতে দুধ-গঙ্গাজল ছেটানো হয়। এটা আমাদের সমাজের রীতি নয়। তাই গোবর-জল দেওয়া হয়েছে।”

এই ঘটনায় ক্ষুদ্ধ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, “আমাদের ভগবান বীরসা মুন্ডার জন্মদিনে বিজেপি আবার তাঁকে অপমান করল। বাঁকুড়ার সাংসদ পোয়াবাগানের ওই শিকারির মূর্তিকে বীরসা মুন্ডার মূর্তি বলে ঘোষণা করে শুদ্ধকরণ করালেন! যার তার গলায় মালা দেওয়া! আদিবাসী সমাজ বিষয়টি ভাল চোখে দেখছে না। এই ঘৃণ্য রাজনীতি বন্ধ করুন। আমাদের এসসি-এসটি সেলের পক্ষ থেকে জোরদার আন্দোলনের মাধ্যমে এর জ্বালা আমরা মিটিয়ে দেব। বিজেপি সাবধান।” সুভাষবাবুর পাল্টা প্রতিক্রিয়া, “এক জন মন্ত্রী হয়েও অগণতান্ত্রিক কথাবার্তা বলছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। মূর্তি নিয়ে তৃণমূলের অযথা বিতর্কেই আদিবাসী মানুষজন ক্ষুব্ধ।”

তবে ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের জেলা গডেৎ বিপ্লব সরেন এ দিন বলেন, “আমরা আগেও বলেছিলাম, এ দিনও বলছি ওই মূর্তি বীরসা মুন্ডার নয়। ভেবেছিলাম ঘটনাটি হয়ত থেমে যাবে। কিন্তু এ দিন থেকে নতুন করে আবার তা মাথাচাড়া দিল। বিষয়টি আদিবাসী সমাজের মানুষ মোটেও ভাল ভাবে নিচ্ছেন না।”

Bankura BJP Satue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy