বেলা তখন সওয়া দুটো। বেলকুঁড়ি হাট ময়দানে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা। মঞ্চের উপরে ফোন কানে ব্যস্ত পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। এক পুলিশ কর্তা এসে জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী সভায় আসতে চাইছেন। কিন্তু সভা শুরু হওয়ার কথা তো ৩টে নাগাদ!
তড়িঘড়ি পিছনের সারিতে বসা লোকজনকে সামনে নিয়ে আসা হল। দলেরই এক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে স্বগতোক্তি করতে শোনা গেল, ‘‘আগের দিন মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। তারপরে আজ এসে সভার এই হাল দেখলে আর রক্ষে থাকবে না।’’
তবে সমস্ত আশঙ্কা উড়িয়ে আড়াইটের পরেই শুরু হল মানুষের ঢল নামা। শান্তিরামবাবু বললেন, ‘‘আসলে সবাই দূর দূরান্ত থেকে আসছেন। কিছুটা সময় তো লাগবেই। এই দেখুন মাঠ উপচে পড়ছে।’’
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পুরুলিয়ার আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরছে। তবে আগের দিন বুধবার ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় বৃহস্পতিবার জেলায় তাপমাত্রা কিছুটা কম ছিল। বেলা তিনটে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী যখন সভায় পৌঁছলেন, চারপাশে ভিড় কার্যত উপচেই পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে মঞ্চের ডানদিকে বেশ কিছুটা দূরে ব্যারিকেড করে ভিড় ঠেকিয়ে রেখেছিল পুলিশ।
অনেকে গাছে উঠে পড়েন। তা দেখে মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য থামিয়ে বলেন, ‘‘ওঁদের কাছে আসতে দিন। জন জোয়ারকে কী করে ঠেকাবেন!’’ পুরুলিয়ার প্রকৃতি ও পর্যটন নিয়ে তাঁর সদ্য লেখা ‘রূপসী রূপা’ নামে একটি কবিতাও পড়ে শোনান মুখ্যমন্ত্রী।
সভা শেষ হয় জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর নিজের লেখা ও সুর দেওয়া কন্যাশ্রী ও সবুজসাথী বিষয়ক একটি গান গেয়ে শোনান তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। গান শেষ হতে মুখ্যমন্ত্রী সভায় উপস্থিত কন্যাশ্রী কিশোরীদের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘পছন্দ হয়েছে?’’ সমস্বরে উত্তর আসে, ‘‘হ্যাঁ।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই গান ব্লকে ব্লকে এবং বিভিন্ন স্কুলে পাঠানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy