Advertisement
E-Paper

প্রার্থী হওয়ার আবেদন জমে পাহাড়, নেতাদের চোখ কপালে

ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো জেলা কমিটির বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, যাঁরা জেলা পরিষদে প্রার্থী হতে চান তাঁরা তাঁর কাছে আবেদন জমা করতে পারেন। সরাসরি আবেদন করা যেতে পারে রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৪৬

আসন সংখ্যা ৩৮। দাবিদার নিদেন পক্ষে দু’শো জন।

ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো জেলা কমিটির বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, যাঁরা জেলা পরিষদে প্রার্থী হতে চান তাঁরা তাঁর কাছে আবেদন জমা করতে পারেন। সরাসরি আবেদন করা যেতে পারে রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও।

এর পরেই আবেদন জমা হতে শুরু করে জেলা সভাপতির এক ছায়াসঙ্গীর কাছে। কিন্তু তার সংখ্যা দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় নেতৃত্বের। দলের একাংশের মতে, বিভিন্ন ব্লকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ব্যাপারটাও এতে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানানো এক নেতার কথায়, ‘‘দল গঠনের সময় থেকেই রয়েছি। কাজও করে যাচ্ছি। কিন্তু দেখছি, পরে এসে যাঁরা কোনও পদ নিয়ে বসেছেন তাঁদের গুরুত্বই বেশি। পদ না থাকলে মূল্য নেই।’’

দল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রার্থী হতে চেয়ে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে পুরুলিয়া ২ ব্লকে। সেখানে আসন ২টি। দাবিদার ১৮ জন। ওই ব্লকের সংরক্ষিত একটি আসনের জন্যই দাবিদার ১৩ জন। পুরুলিয়া পুরসভার সঙ্গে এই ব্লক মিলে পুরুলিয়া বিধানসভা ক্ষেত্র। গত বিধানসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া ২ ব্লকে দলের ফল খারাপ হয়েছে। নিজেদের দখলে থাকা আসনে হারতে হয়েছে কংগ্রেসের কাছে।

ব্লকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর পৌঁছেছে উপরতলাতেও। দলের জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এখানে এসে সভা করেছেন। নেতৃত্ব দলকে এক হয়ে চলার বার্তা দেওয়ার পরেও সব পক্ষই প্রার্থী হওয়ার তদ্বির শুরু করেছেন। বিষয়টা কিছুটা চিন্তায় ফেলেছে নেতৃত্বকে। যাঁরা প্রার্থী হতে পারবেন না, তাঁদের কী ভাবে সামাল দেওয়া হবে সেটাই ভাবাচ্ছে জেলার নেতাদের।

প্রায় এক ছবি আড়শায়। ব্লকের দু’টি আসনের দাবিদারের প্রায় ২২ জন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেখানে তৃণমূল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পঞ্চায়েত সমিতিতে বার বার অনাস্থা এসেছে। শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে জেলা সভাপতিকে।

পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির ছবিটাও কমবেশি এক। সূত্রের খবর, ঝালদা ২, জয়পুর, পুরুলিয়া ২, পুরুলিয়া ১, ঝালদা ১, বান্দোয়ান, মানবাজার ১-সহ বিভিন্ন ব্লকে বেশ কিছু আসনে কারা প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছনো যায়নি।

ব্লকের কিছু নেতা-কর্মীর বক্তব্য, ঠিক হয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের নির্বাচনী কমিটি পঞ্চায়েত এলাকার প্রার্থী ঠিক করবে। পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী ঠিক করবে ব্লক নির্বাচনী কমিটি। তাঁদের প্রশ্ন, সেটা হচ্ছে কোথায়? দলের জেলা সম্পাদক নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘আমাদের ব্লক নেতৃত্বই বিষয়টি দেখছেন। আলোচনার ভিত্তিতেই সব কিছু ঠিক হচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিতে তো অনেক আসন। কিছু ক্ষেত্রে মতের অমিল হলেও আলোচনায় মিটে যাচ্ছে।’’

এ দিকে, মনোনয়ন শুরু হতেই বিজেপি দু’দফায় জেলা পরিষদের অধিকাংশ আসনেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। সেখানে শাসকদল এখনও তালিকা প্রকাশ করেনি। কবে তালিকা বেরোবে, সেটাই এখন দলের অন্দরে মূল প্রশ্ন। তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সহসভাপতি রথীন্দ্রনাথ মাহাতো জানিয়েছেন, শীঘ্রই। পাশাপাশি বলেছেন, ‘‘তালিকা প্রকাশ হচ্ছে না তো কী? আমাদের কাজ তো আর থেমে নেই।’’

কিন্তু কী ভাবে হবে জেলা পরিষদের প্রার্থী বাছাই?

দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে প্রার্থীদের নাম ঠিক করা হবে। সমস্ত নামই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে।’’ দল সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবার জানা যেতে পারে কাদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ছে।

Zila Parishad Panchayat Election 2018 TMC Shantiram Mahata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy