Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বাজি ফাটল, বক্স বাজল গ্রেফতার হল না কেউই

পুলিশ-প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলার বাসিন্দারা সকলেই এক সুরে জানিয়েছিলেন, কালীপুজোয় শব্দবাজির দাপট কম ছিল। ঠিক এক দিন পরেই দীপাবলিতেই অবশ্য সুর গিয়েছিল পাল্টে।

কালীপুজোর বিসর্জনে ডিজের দাপাদাপি। সাঁইথিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

কালীপুজোর বিসর্জনে ডিজের দাপাদাপি। সাঁইথিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪২
Share: Save:

পুলিশ-প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলার বাসিন্দারা সকলেই এক সুরে জানিয়েছিলেন, কালীপুজোয় শব্দবাজির দাপট কম ছিল। ঠিক এক দিন পরেই দীপাবলিতেই অবশ্য সুর গিয়েছিল পাল্টে। পুলিশ না মানলেও রামপুরহাট, নলহাটি, সাঁইথিয়া, বোলপুর, দুবরাজপুর এমনকি সিউড়ির বাসিন্দাদের অনেকেরই সাফ অভিযোগ ছিল, দেদার শব্দবাজি ফেটেছে।

প্রথম দিন বড় ইনিংস খেলে প্রত্যাশা জাগালেও চূড়ান্ত দিনেই খারাপ ফল করায় জেলাবাসীর একাংশের মধ্যে দানা বেঁধেছিল ক্ষোভও। সেই ক্ষোভকে কিছুটা হলেও উসকে দিয়েছিল পুলিশের ভূমিকা। কেননা, পুলিশ আগাগোড়াই বলে এসেছে শব্দবাজি ফাটেনি, ডিজে বা উচ্চস্বরে সাউন্ড বক্স বাজেনি।

মঙ্গলবারও সেই সুর বজায় রেখেই জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, “কালীপুজো কিংবা দীপাবলির দিনে শব্দবাজি কিংবা সাউন্ড বক্স বাজানো নিয়ে জেলায় কোথা থেকেও কোনও অভিযোগ আসেনি। কাউকে আটক কিংবা গ্রেফতারও করা হয়নি। তবে পুলিশি অভিযানে বহু শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’

পুলিশ সুপারের দাবিকে উড়িয়ে ভুক্তভোগীদের অনেকেই অবশ্য সাফ জানাচ্ছেন, চকলেট বোমা, দোদমা, শেলের মতো শব্দবাজি দেদার ফেটেছে। তা হলে পুলিশে কেন অভিযোগ জানালেন না? এক ভুক্তভোগীর জবাব, ‘‘জানিয়েছিলাম তো। তারপরেই তো যে কে সেই অবস্থাই ছিল।’’ আর এক জনের কথায়, ‘‘কোন নম্বরে ফোন করতে হবে সেটাই তো জানতাম না!’’ অনেকেরই উপলব্ধি, বাজি আর বক্সের উৎপাত মূলত ছিল শহর ও লাগোয়া এলাকায়। তবে তাঁরা এও মেনেছেন যে, ‘‘বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বার কিছুটা হলেও রাশ ছিল।’’

দুবরাজপুর পুর এলাকায় বেশ কিছু বিসর্জন হয়েছে সোমবার। বোলপুরে সোমবার একটি বাড়ির এবং একটি ক্লাবের বিসর্জন হয়েছে। শান্তিনিকেতন ভুবনডাঙার বাসিন্দা প্রদীপ মল্লিক বলেন, ‘‘আড়াই দশকেরও বেশি সময় ধরে কালীপুজো হচ্ছে বাড়িতে। আমরা অবশ্য বিসর্জনে বাদ্যযন্ত্র বাজাই।’’ তবে ডিজে মাত্রই তা নিষিদ্ধ নয়। জেলার পুজোর উদ্যোক্তাদের অনেকে দাবি করেছেন, তাঁরা জোরে সাউন্ড বক্স বাজাননি। ডিজে বাজালেও, তা-ও নিয়ন্ত্রণেই ছিল বলে তাঁদের দাবি।

দীপাবলির দিনে শব্দে-শব্দে জেরবার হয়েছিলেন এমন এক ভুক্তভোগী প্রশ্নটা তুলেছেন এখানেই। তাঁর প্রশ্ন, সাউন্ড বক্স কতটা আস্তে বাজছে, তা শব্দসীমা অতিক্রম করল কিনা, তা ঠিক করবে কে? মাপার উপায়ই বা কি? পুলিশের তরফে কি আদৌ ততটা নজরদারি ছিল?

জেলা পুলিশের এক কর্তাও কার্যত সে অভিযোগ মেনেছেন। এ দিকে, নানুর, ময়ূরেশ্বরে ডিজে না বাজলেও লাভপুরের কয়েক’টি পুজোতে ডিজে বাজানোর অভিযোগ উঠেছে। উদ্যোক্তাদের অবশ্য দাবি, ডিজে বাজানো হয়নি। স্বল্পমাত্রায় মাইক বাজানো হয়েছে মাত্র। সাঁইথিয়ার বিখ্যাত কালী বড়মার পুজো এবং তার বিসর্জনেও ডিজে বাজানোর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার রাতে হাজার চারেক মানুষের ভিড় হয়। বিসর্জনের ওই অনুষ্ঠানে অবশ্য ডিজে বাজানো হয়নি বলে উদ্যোক্তাদের দাবি। রামপুরহাটের অনেক এলাকায় অবশ্য কালীপুজোর বিসর্জন এখনও হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sound crackers Loud speaker kalipuja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE