Advertisement
E-Paper

হাল দেখতে পরামর্শ গ্রামে গ্রামে ঘোরার

গত অগস্টে ঝালদা ২ ব্লকের লাগাম গ্রামে এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু নিয়ে অভিযোগে সরব হন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, খাদ্যের অভাবেই প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ১২:০৪
তড়িঘড়ি: নির্দেশের পরে পুরুলিয়া ১ ব্লকের অকড়বাইদ গ্রামে খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

তড়িঘড়ি: নির্দেশের পরে পুরুলিয়া ১ ব্লকের অকড়বাইদ গ্রামে খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে কিছু দরিদ্র মানুষের হাতে চাল-ডালের প্যাকেট তুলে দিলেই কি জেলার সমস্ত বাসিন্দার কাছে খাদ্য পৌঁছচ্ছে? বুধবার বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে এই প্রশ্ন তুললেন খোদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার জেলা পরিষদ প্রেক্ষাগৃহে এই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন দরিদ্র মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে। কিন্তু যতটা তাঁদের প্রাপ্য, তাঁরা সেই পরিমাণ খাদ্যপণ্য পাচ্ছেন কি?’’ এই ব্যাপারে দফতরের আধিকারিকদের নিচুতলায় খোঁজ নিয়ে দেখার নির্দেশ দেন সভাধিপতি। সভাধিপতি পুরুলিয়া ১ ব্লকের অকড়বাইদ গ্রামের কথা উল্লেখ করে সেই গ্রামের বাসিন্দারা সঠিক ভাবে রেশন পণ্য পাচ্ছেন কি না তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।

গত অগস্টে ঝালদা ২ ব্লকের লাগাম গ্রামে এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু নিয়ে অভিযোগে সরব হন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, খাদ্যের অভাবেই প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছে। ভিক্ষা করেই ওই মহিলার দিন চলত। কিন্তু, টানা বৃষ্টিতে তিনি ভিক্ষা করতে বেরোতে পারেননি। তাতে কয়েকদিন অভুক্ত থেকেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়। ওই মহিলা ও তাঁর ছেলের রেশন কার্ড ছিল না বলেও অভিযোগ। যদিও প্রশাসনের বক্তব্য ছিল, অসুস্থ হয়েই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। সেই বিতর্কের মধ্যে এ দিন সভাধিপতির ওই নির্দেশের তাৎপর্য রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

এ দিন অনুষ্ঠানের পরেই শেষে পুরুলিয়া ১ ব্লকের অকড়বাইদ গ্রামে যান মহকুমা খাদ্য নিয়ামক নির্মল নাথ-সহ দফতরের কয়েকজন আধিকারিক। গ্রামটিতে মূলত শবর সম্প্রদায়ের বাস। বাড়ি বাড়ি ঘুরে আধিকারিকেরা জানতে চান, রেশনে সবাই ছিকমতো খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন কি না। সপ্তাহে কত পরিমাণ খাদ্যপণ্য পান, তাও জানতে চান। চালের মানও পরীক্ষা করেন তাঁরা। কয়েকজন বাসিন্দা আধিকারিকদের আটার বদলে গম দেওয়ার আর্জি জানান। তবে প্রতি সপ্তাহে প্রাপ্য কেরোসিনের থেকে তাঁদের কিছু পরিমাণে তেল কম দেওয়া হয় বলে আধিকারিকদের পরীক্ষায় ধরা পড়ে।

অকড়বাইদের বাসিন্দা সর্বেশ্বর শবর, সন্তোষ শবর প্রমুখ বলেন, ‘‘খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা যা জানতে চান, তা জানিয়েছি।’’ মহকুমা খাদ্য নিয়ামক বলেন, ‘‘রেশনের প্রাপ্য নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। চালের গুণমানও ভাল। তবে কেরোসিন কিছুটা করে বাসিন্দারা কম পাচ্ছেন বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’

অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নবকুমার বর্মন বলেন, ‘‘যদি কারও রেশন কার্ড না থাকে বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। কার্ডে কোনও ভুল থাকলেও বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, জেলার যাতে প্রতিনি মানুষ রেশন কার্ড পান, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে।

জেলা খাদ্য নিয়ামক বাপ্পাদিত্য চন্দ্র জানান, অনুষ্ঠানে জেলার সেরা কৃষক দশরথি বাউরি, সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি হিসেবে বিসপুরিয়া, সেরা চালকল হিসেবে পুরুলিয়া ২ ব্লকের আমজোড়ার একটি চালকল এবং সেরা রেশন পরিবেশক হিসেবে কাশীপুরের সীতাদেবী সা-কে পুরস্কৃত করা হয়। ৯৪ জন বীরহোড় বাসিন্দার হাতে এবং ৫০ জন অপুষ্ট শিশুকে চাল-ডালের প্যাকেট দেওয়া হয়।

World food day Survey Village
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy