Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bishnupur

উৎসবের আগে দুঃস্থ সঙ্গীত শিল্পীদের পাশে

দুই শিল্পীকে আজীবন মাসিক সাম্মানিক দেওয়ার জন্য ইতিপূর্বে বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দেবব্রত সিংহ ঠাকুরকে দেওয়া হচ্ছে অনুমোদনপত্র। নিজস্ব চিত্র।

দেবব্রত সিংহ ঠাকুরকে দেওয়া হচ্ছে অনুমোদনপত্র। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৫৫
Share: Save:

আজ, শুক্রবার থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে শুরু হচ্ছে ‘মিউজ়িক ফেস্টিভ্যাল’। তার আগে বৃহস্পতিবার শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের দুই শিল্পীর পাশে দাঁড়াল বিষ্ণুপুর পু-প্রশাসন।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন বিষ্ণুপুর ঘরানার দুই সঙ্গীত শিল্পী ‘গীতসম্রাট’ গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ে স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায় ও রামশরণ মিউজ়িক কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তথা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের গবেষক দেবব্রত সিংহ ঠাকুর। এ দিন সকালে প্রশাসকমণ্ডলীর তিন সদস্য তাঁদের বাড়িতে গিয়ে মাসিক সান্মানিক দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন। প্রশাসনের এই উদ্যোগে খুশি বিষ্ণুপুরের শিল্পী মহল।

মিউজ়িক ফেস্টিভ্যালের আগে পুর-প্রশাসনের এই উদ্যোগ নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে বলে মনে করছেন রামশরণ মিউজ়িক কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অসহায় শিল্পীদের পাশে এত কাল কেউ এ ভাবে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। এ ধরনের প্রশাসনিক উদ্যোগ থাকলে, এক দিন বিষ্ণুপুর রামশরণ মিউজ়িক কলেজ-ও সরকারি স্বীকৃতি পাবে।’’

বিষ্ণুপুর ঘরানার ধ্রুপদ শিল্পী ৮৩ বছরের দেবব্রত সিংহ ঠাকুর এখন চলার শক্তি হারিয়েছেন। শিল্পীর স্ত্রী নন্দিতা সিংহ ঠাকুর বলেন, ‘‘জমানো পুঁজি প্রায় শেষ। চরম আর্থিক সঙ্কটে চিকিৎসা করাতে না পেরে দিশাহারা। রাজ্য সরকারের শিল্পী ভাতাই ছিল ভরসা। তবে সংসার চালিয়ে চিকিৎসা করাতে পারছিলাম না। পুর-প্রশাসনের উদ্যোগে আমরা খুব খুশি।’’

পুরসভার তরফে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা সান্মানিক পাওয়ার খবরে খুশি শিল্পী নিজেও। প্রশাসকদের অনুরোধে এ দিন তিনি গান গেয়েও শুনিয়েছেন।

মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি আবাসনে থাকার সুযোগ আগেই পেয়েছেন। তবে মিউজ়িক কলেজে শিক্ষকতার জন্য যা পান, তাতে তাঁর সংসার চলে না। এ বার তাঁরও মাসে পাঁচ হাজার টাকার সাম্মানিকের ব্যবস্থা করল বিষ্ণুপুর পুর-প্রশাসন। স্বপ্নাদেবী বলেন, ‘‘এক সময়ে খুবই কষ্টে দিন কেটেছে। এখন প্রশাসন মুখ তুলে তাকানোয় বাঁচার রসদ পেলাম।’’

বিষ্ণুপুরের পুর-প্রশাসক দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষ্ণুপুরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সঙ্গীত। আর সেই সঙ্গীতকে বাঁচিয়ে রাখতে যাঁরা আজীবন লড়াই করেছেন, তেমনই দুই শিল্পীর পাশে দাঁড়াল বিষ্ণুপুর পুরসভা।’’ তিনি জানান, দুই শিল্পীকে আজীবন মাসিক সাম্মানিক দেওয়ার জন্য ইতিপূর্বে বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bishnupur Singers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE