পৌষমেলায় দূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তার জেরে ২০১৬ সালে মেলা হয় তিন দিন। সেই খবরে অনেক ব্যবসায়ীই পৌষমেলায় স্টল দেননি। প্রশাসনের হিসেবে, গত বছর সব মিলিয়ে স্টল হয়েছিল ৯২৭টি।
আইনি জটিলতা কাটিয়ে বিশ্বভারতীর আর্জি মতোই এ বারের পৌষমেলা ছ’দিনের। গত বছরের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে তৈরি হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার মেলায় স্টলের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০টি। ইতিমধ্যেই প্রায় ৯৫০টি স্টল বুক হয়ে গিয়েছে। কলকাতা, জিয়াগঞ্জ, নদিয়া থেকে বহু ব্যবসায়ী মেলার জন্য স্টল বুক করেছেন। পাশাপাশি থাকছে ভিনরাজ্যের স্টলগুলিও। ৩ শতাংশ জিএসটি লাগু হওয়ায় স্টল প্রতি কিছুটা টাকা বেশি লাগলেও মেলা কর্তৃপক্ষের তরফে স্টল ভাড়া বাড়ানো হয়নি বলে জানা গিয়েছে। তা রয়েছে আগের বছরের মতোই।
মেলা কমিটির আহ্বায়ক গৌতম সাহা বলেন, ‘‘এ বছর স্টল ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র হিসেবে আধার কার্ড দেখা হচ্ছে। তার পরই দেওয়া হচ্ছে স্টল। এ ছাড়াও আকস্মিক কোনও বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য থাকছে বিশেষ একটি দল।’’
এ বারের মেলা পরিবেশবান্ধব মেলা। দূষণ এড়াতে সচেতন থাকবেন মেলা কর্তৃপক্ষ। মেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মেলা প্রাঙ্গনে কোনও সমস্যা যাতে না হয় সে জন্য নিয়মের বেড়াজালে মুড়ে ফেলা হচ্ছে স্টলগুলিকে। কোনও স্টলের ভিতরে মাইক বা স্পিকার বাজানো, নেশাজাতীয় কিছু ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। যে কোনও মাংস ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কোনও স্টলই অতিরিক্ত জায়গা দখল করতে পারবে না। স্টলের বাইরে চেয়ার-টেবিল রাখা যাবে না।
পশ্চিমবঙ্গ দূষণ পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, প্লাস্টিকের জিনিস, থার্মোকল মেলা প্রাঙ্গনে ব্যবহার করা যাবে না। তার বদলে শালপাতার থালা, বাটি ব্যবহার করতে হবে। প্রত্যেক স্টলে ডাস্টবিন রাখা বাধ্যতামূলক। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সমস্ত নিয়ম মেনে স্টল তৈরি করতে হবে। নিয়ম মেনে স্টল তৈরি হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কড়া নজর রাখবেন।
পশ্চিমবঙ্গ অগ্নিবিধি অনুযায়ী, স্টলে ব্যবহৃত কাপড়ে অগ্নিনিরোধক রাসায়নিক লাগাতে হবে। খোলা জায়গায় আগুন জ্বালানো যাবে না। মেলা শেষ হওয়ার পর উনুন এবং খুঁটির জন্য হওয়া গর্ত সংশ্লিষ্ট স্টলের ব্যবসায়ীকে বুজিয়ে দিয়ে যেতে হবে। ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে স্টলের জায়গা খালি ও পরিষ্কার করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মেলায় আসা প্রত্যেক স্টল মালিকদের মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য আর্জি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ জানান, টানাপড়েনের জন্য এ বারে মেলা প্রাঙ্গনে স্টল বেশ কিছুদিন দেরিতে পাওয়া গিয়েছে। এখন স্টল
তৈরি থেকে সাজানোর কাজ জোরকদমে চলছে। দূষণের দিকগুলি সম্পর্কে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সচেতন করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy