Advertisement
E-Paper

রানিবাঁধে অভিষেক, মোড়ে মোড়ে পুলিশ

তিনি আসছেন বলে ক’দিন ধরেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি থামিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছিল। শনিবার সেই তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পথের একটি বড় অংশে মোড়ে মোড়ে দেখা গেল পুলিশের টহল। কালর্ভাট ও সেতুর নীচেও কড়া নজর রাখতে মোতায়েন ছিল পুলিশ। রাস্তায় ঘন-ঘন ছুটেছে পুলিশের টহলদারি গাড়ি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৫ ০২:২৫
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় মাঠ ছাপানো ভিড়। ছবি: উমাকান্ত ধর

তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় মাঠ ছাপানো ভিড়। ছবি: উমাকান্ত ধর

তিনি আসছেন বলে ক’দিন ধরেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি থামিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছিল। শনিবার সেই তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পথের একটি বড় অংশে মোড়ে মোড়ে দেখা গেল পুলিশের টহল। কালর্ভাট ও সেতুর নীচেও কড়া নজর রাখতে মোতায়েন ছিল পুলিশ। রাস্তায় ঘন-ঘন ছুটেছে পুলিশের টহলদারি গাড়ি।
বস্তুত শান্ত জঙ্গলমহল অনেকদিন পরে রানিবাঁধের রাস্তায় এত পুলিশ দেখল। এ দিন দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ সভামঞ্চে আসেন যুব তৃণমূল নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার অনেক আগে থেকেই হিড়বাঁধের গোবিন্দপুর, হাতিরামপুর প্রভৃতি মোড় থেকে রানিবাঁধের রাস্তায় কালর্ভাট ও সেতুর নীচে পুলিশ কর্মীদের পাহারায় দেখা যায়। সভাস্থলের দিকে যত এগোনো গিয়েছে, দেখা গিয়েছে ততই রাস্তায় পুলিশ দেখা গিয়েছে। প্রায় প্রতিটি মোড়ে পুলিশ কর্মীদের পাহারায় মোতায়েন করা হয়। জঙ্গলের পথে পাহারায় পুলিশ ছিল ঘন-ঘন। জেলা পুলিশেরই এক কর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘অভিষেকের গুরুত্বও তো কম নয়। মুখ্যমন্ত্রীর মতো ভিভিআইপি-দের জন্য এই সব এলাকায় যতটা নিরাপত্তা দেওয়া হয়, তার থেকে কিছুটা কম ছিল। কারণ এলাকা শান্ত হলেও, কখন কী ঘটে তার নিশ্চয়তা কোথায়?’’
অভিষেক এই প্রথম বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে সভা করতে এলেন। তাই তৃণমূল নেতা হিসেবে দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তাঁকে নিয়ে যেমন আগ্রহ ছিল, ততটাই মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো হিসেবে তাঁকে দেখার আগ্রহ ছিল সভায় আসা মানুষজনের মধ্যে।

রানিবাঁধের বারোগ্রাম মাঠ খুব একটা বড় না হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই ভিড় মাঠ ছাপিয়ে পাশের রাস্তায় গিয়ে পড়েছিল। এর জেরে আখখুট-রাইপুর রাস্তায় বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সভায় আসা লোকজনের গাড়ি অনেক আগেই আখখুট মোড়ে পুলিশ আটকে দিয়েছিল। সকালের দিকে বৃষ্টি হলেও সভার মাঝে অবশ্য বৃষ্টি নামেনি। কিন্তু আকাশের মুখ ছিল থমথমে। তাই জনতার ভিড় দেখে অভিষেক বলেন, “এত মানুষের সমাবেশ প্রমাণ করছে এলাকার মানুষ আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই আছেন। এলাকায় উন্নয়ন হচ্ছে। শান্তি বিরাজ করছে।’’

২১ জুলাই শহিদ স্মরণের প্রস্তুতি উপলক্ষে এ দিনের সভা। অভিযেকের সঙ্গে ছিলেন অভিনেত্রী তথা সাংসদ সন্ধ্যা রায়, রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়, শিল্পী ইন্দ্রনীল সেন। হিরণ বলেন, “আমরা কেউ রাজনীতি করতে চাই না। আমরা চাই উন্নয়ন। ৩৪ বছরে কোনও উন্নয়ন হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নের দিশারী।”

অভিষেক রাজ্য সরকারের উন্নয়নের তালিকা তুলে ধরার সঙ্গেই কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনার করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘সিবিআই দেখিয়ে বিজেপি ভেবেছিল জয়ললিতার মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জেলে পুরবে। কিন্তু ওরা জানে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য ধাতুতে গড়া। বিশুদ্ধ লোহা। তাঁকে যত তাতাবে, তত কঠিন হবে।” দলের এক শ্রেণির নেতা-কর্মীর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন এলাকায়। সেই কারণে যুব সভাপতি তাঁদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমাদের দলে একটাই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আমরা সবাই কর্মী। দল করে কী পাব এটা ভেবে দল করবেন না। গাড়ি, বাড়ি করার বাসনা থাকলে সিপিএম-বিজেপি করবেন।”

সভার জন্য রানিবাঁধ, রাইপুর, খাতড়া, হিড়বাঁধ, সিমলাপাল থেকে বাস, ছোট গাড়িতে করে লোক নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আদিবাসী মহিলাদের উপস্থিতি, লোকশিল্পীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। রানিবাঁধের লোকশিল্পী ভরত সিং সর্দার, শোভারানি সর্দার যেমন বললেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর আমরা দু’টাকা কেজি চাল পাচ্ছি। পরিচয়পত্র পেয়েছি। মাসে মাসে ভাতা পাচ্ছি। তাই তাঁর ভাইপো আসছেন শুনে সভায় এসেছিলাম।” মুখ্যমন্ত্রী ভাইপোর জন্যই বোধহয় এ দিন খাতড়ায় দলের দুই গোষ্ঠীর নেতা শ্যামল ওরফে বেনু সরকার ও জয়ন্ত মিত্রকে মাঠ ভরাতে একসঙ্গে কাজ করতে দেখা গেল। ছিলেন বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁয়েরাও।

Abhisekh Bandopadhyay trinamool tmc ranibandh police mamata bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy