প্রেমে অাপত্তির জেরে খুন হওয়া ছাত্রের পরিবারের পাশে গ্রামবাসী। শনিবারের মিছিল।— নিজস্ব চিত্র।
‘প্রেমের’ সম্পর্কের জন্য খুন হওয়া স্কুল পড়ুয়া মোমিন আলির খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবিতে শনিবার ফের মিছিল হল রাইপুরের খয়েরবনি গ্রামে। অন্যদিকে, এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ওই কিশোরীর তিন কাকা ইমতাজ আলি, মমতাজ আলি ও দিলশাদ আলিকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মোমিন খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ওই কিশোরীর মা-সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই গ্রামের বাসিন্দা হুরমত আলির বড় ছেলে একাদশ শ্রেণির ছাত্র মোমিনের সঙ্গে গ্রামেরই বাসিন্দা এক সহপাঠিনীর প্রেম ছিল। মেয়েটির পরিবারের তরফে সেই সম্পর্কে আপত্তি থাকায় বুধবার রাতে গ্রামে সালিশিসভা ডাকা হয়েছিল। সালিশিসভার মধ্যেই মোমিনের পিঠে ছুরি মেরে খুনের অভিযোগ ওঠে মেয়েটির দাদা-সহ বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় মেয়েটির বাবা নৌশাদ আলি, মা নাসিমা বেগম, দাদা তেজাব আলি-সহ ১১ জনের নামে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নিহতের বাবা হুরমত আলি। এই নৃশংস হত্যায় শুক্রবার বখরি ইদেও শোকে মুহ্যমান ছিল গোটা খয়েরবনি গ্রাম।
গ্রামের মসজিদে নমাজ পড়া হলেও কুরবানি হয়নি। এই খুনের প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের ধরে কড়া শাস্তি চেয়ে শুক্রবার গ্রামবাসী এলাকায় মিছিল করেন। শনিবারও ফের মিছিল করলেন খয়েরবনি, জয়নগর গ্রামের বাসিন্দারা। এ দিন সকাল ১০টায় নিহতের বাড়ির সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। খয়েরবনি থেকে বক্সি ফাঁড়ি পর্যন্ত দু’কিলোমটার দীর্ঘ এই মিছিলে নিহতের পরিবারের লোকজন, এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারা, মোমিনের স্কুলের পড়ুয়ারা সামিল হয়েছিল।
‘মোমিনের খুনি নৌশাদ আলিদের ফাঁসি চাই’, ‘মোমিনের খুনিদের গ্রেফতার ও কঠোর সাজা দিতে হবে’— এমনই সব লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে এই মৌনী মিছিল করা হয়। মিছিলে সামিল খয়েরবনি গ্রামের লক্ষ্মীমণি সোরেন, শেফালি মান্ডি বলেন, “সামান্য কারণে গ্রামের একটা তরতাজা ছেলেকে যারা এমন নৃশংস ভাবে খুন করল তাদের কঠোর শাস্তির দাবিতে আমরাও এই মিছিলে সামিল হয়েছি।” নিহতের বাবা হুরমত আলি বলেন, “আমার ছেলের খুনিদের গ্রেফতার ও তারা যেন কঠোর সাজা পায় তারজন্যই গ্রামের মানুষ মিছিল করেছেন। এই মিছিলে আমরাও হাজির ছিলাম।”
অন্যদিকে, মোমিনের খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত তার ‘প্রেমিকা’র কাকা ইমতাজ আলি, মমতাজ আলি ও দিলশাদ আলিকে শুক্রবার রাতে বক্সি এলাকা থেকে ধরা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “মোমিন খুনের ঘটনায় মেয়েটির মা ও তিন কাকা-সহ চারজনকে ধরা হয়েছে। তবে ওই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মেয়েটির দাদা তেজাব আলি-সহ বাকিরা এখনও পলাতক। তাদের ধরার জন্য সবরকম চেষ্টা চলছে। অভিযোগের তদন্ত চলছে।” শনিবার ধৃতদের খাতড়া আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ৭ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। উত্তেজনা থাকায় খয়েরবনি গ্রামে এ দিনও পুলিশ মোতায়েন ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy