Advertisement
E-Paper

ময়ূরেশ্বরে নলি কেটে খুন তৃণমূল কর্মীকে

আসগর প্রায়ই পালপাড়ার মনিরুল শেখ ওরফে আপেলের স্টেশনারি দোকানে আড্ডা দিতেন। মাঝে মাঝে লাগোয়া ওই সেলুনেও বসতেন। শনিবার সকালে মনিরুলের দোকানের সামনে আসগরের বাইকটি পড়ে থাকতে দেখা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৭ ০০:৫৮
তল্লাশি:  ময়ূরেশ্বরের গ্রামে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

তল্লাশি: ময়ূরেশ্বরের গ্রামে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

এক তৃণমূল কর্মীর নলিকাটা দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। ময়ূরেশ্বরের বড়তুড়ি গ্রামের শুক্রবার রাতের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম আসগর আলি (৪৫)। বাড়ি মল্লারপুর-আন্দি সড়ক লাগোয়া আলচাপড়া মোড়ে। শুক্রবার বাড়ি থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে বড়তুড়ি গ্রামে পালপাড়ায় একটি সেলুনের পিছনে তার নলিকাটা দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসগর প্রায়ই পালপাড়ার মনিরুল শেখ ওরফে আপেলের স্টেশনারি দোকানে আড্ডা দিতেন। মাঝে মাঝে লাগোয়া ওই সেলুনেও বসতেন। শনিবার সকালে মনিরুলের দোকানের সামনে আসগরের বাইকটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। মনিরুলের অবশ্য দাবি, ‘‘শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ তাঁর দোকান থেকে বেরিয়ে যান আসগর। একে লোডশেডিং চলছিল, তার উপরে বৃষ্টি। তাই সকাল সকাল দোকান বন্ধ করে দিয়েছিলাম। খুনের বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ মুখ খুলতে চাননি সেলুন মালিক সৃষ্টিধর ভাণ্ডারীও।

শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, সেলুনের পিছনের গলিতে পড়ে রয়েছে আসগরের রক্তাক্ত দেহ। চারপাশে চাপ চাপ রক্ত। সেলুনের সামনে পড়ে রয়েছে কাদামাখা একজোড়া চামড়ার চটি। একজোড়া হাওয়াই চপ্পলও। গোটা এলাকা পুলিশ দড়ি দিয়ে ঘিরে রেখেছে। স্থানীয়দের দাবি মেনে বহরমপুর থেকে আনা হয় পুলিশ কুকুরকে। চটি শোঁকানো হয়। তারপরই কুকুরটি দুবার লাগোয়া মিয়াঁপাড়ার একটি ইলেকক্ট্রিক পোস্ট পর্যন্ত যায়। শেষে লাগোয়া একটি পুকুর ঘাটে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে।

ওই খুন ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, আসগরের নামে থানায় চুরি-ছিনতাই সহ নানা অসামাজিক কাজের অভিযোগ রয়েছে। এক সময় সে সিপিএমের ছত্রছায়ায় ছিল। ২০১১ সালের পরে দলবদলে তৃণমূলে ঢোকে। এলাকায় তাঁর দাপটও ছিল। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন ঠিকাদারির কাজও করত। পুলিশ জেনেছে, তার জেরে ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়েছিল তাঁর অনেক আগে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া তাঁরই নিকট আত্মীয়েরা। কারণ ঠিকাদারি
কাজের সুবাদে ওই আত্মীয়দের টেক্কা দিয়ে দলের উপরমহলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছিল আসগর। এ নিয়ে দু’পক্ষের ঠাণ্ডা লড়াই বেশ কিছু দিন ধরেই চলছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারাও জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের একাংশের আবার দাবি, মৃত্যু নিশ্চিত করতে আসগরকে গুলিও করা হয়।

আসগরের স্ত্রী সামিদাবিবি বলেন, ‘‘অন্য দিনের মতো রাত ৮ নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান উনি। রাতে ফেরেননি বলে দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম। ভোর বেলায় খারাপ খবরটা পাই। ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে এ টুকুই বলতে পারি।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তথা বিধায়ক অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘আসগর দলীয় কর্মী ছিল ঠিকই। কিন্তু ওই ঘটনার সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্পর্ক নেই।’’

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে কেন খুন তা জানতে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

tmc murder Police Investigation Mayureswar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy