জলাভাবের শহরে কাউন্সিলরদের অগোচরে পানীয় জলের পাইপ লাইন বসানো সহ পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে গুচ্ছ অভিযোগ তুলে নিজেদের দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিলেন তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর।
শনিবার দুপুরে পুরুলিয়া পুরসভার সৌন্দর্যায়নের দায়িত্বে থাকা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিভাসরঞ্জন দাস এবং কর বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদীপ দাগা পুরপ্রধানের কাছে গিয়ে নিজেদের ইস্তফাপত্র জমা দেন। দু’জনেই অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘পুরসভার কাজ নিয়ে মানুষজনের কাছে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। অথচ পুরসভার অভ্যন্তরে এ সব বলেও কোনও সুবিচার পাচ্ছি না। এই অবস্থায় পুরসভার ওই দুই পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা খোলা ছিল না।’’
এ দিন দুই কাউন্সিলর আচমকা ইস্তফা দেওয়ায় দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়ে যান পুরপ্রধান সামিমদাদ খান। তিনি তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানালেও দুই কাউন্সিলর তাঁদের সিদ্ধান্ত থেকে নড়েননি। যদিও দল সূত্রে খবর, শুধু পুরসভার কাজ নিয়েই নয়, দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়াও আছে এই ঘটনার নেপথ্যে। ১৯ এপ্রিল পুরপ্রধান চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল ঢেলে সাজানোর পরেই পুরসভার ক্ষমতাসীন লবির সঙ্গে একাধিক কাউন্সিলরের দূরত্বের সূত্রপাত।
আড়ালে আবডালে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও প্রকাশ্যে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা কিছু বলেননি। কিন্তু কিছুদিন আগে দেশবন্ধু রোডে পানীয় জলের নতুন একটি পাইপ লাইন বসানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই এই দূরত্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। শাসকদলের কাউন্সিলরেরাই প্রশ্ন তোলেন, কাদের জন্য তীব্র জলাভাবের সময়ে নতুন এই পাইপ লাইন গোপনে পাতা হচ্ছিল? ঘটনার তদন্তেরও দাবি ওঠে শাসকদলের অন্দরে। এরপরেই পুরসভা ওই পাইপ লাইন অবৈধ বলে ঘোষণা করে।
এ দিন বিভাসবাবু প্রশ্ন করেন, ‘‘পুরপ্রধান ওই পাইপ লাইন তুলে ফেলা হবে ঘোষণা করলেও এখনও তা খোলা হয়নি কেন? আমি পুরপ্রধানের কাছে ঘটনার তদন্ত চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি।’’ প্রদীপ দাগার দাবি, ‘‘দেখছি বিশেষ দু’-একজনই পুরসভার সমস্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তাহলে পদ আঁকড়ে থেকে লাভ কী? দায় তো পরে আমাদের উপরেও বর্তাবে।’’
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘আমি সৌন্দর্যায়ন ও কর বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত দুই কাউন্সিলরের ইস্তফার চিঠি পেয়েছি। কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। দলই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’’ তিনি জানান, ওই পাইপ লাইন শীঘ্রই খোলা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy