প্যাচপ্যাচে গরমে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে শেষ দু’দিনের বৃষ্টি। তাতে করে আরও জমে উঠেছে শেষ বেলার চৈত্র সেলের বাজার। এমনিতে চৈত্র মাসের শুরু থেকেই বাঁকুড়ার চকবাজার সুভাষরোড এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণে নেমেছে পুলিশ। সন্ধ্যের পর থেকেই বাজারে দেখা যাচ্ছিল ঠাসা ভিড়। তবে চৈত্রের শেষ রবিবার নজির গড়ল।
এ দিন বিকেল থেকেই বাঁকুড়ার চকবাজারে ক্রেতাদের জমাটি ভিড় দেখা গিয়েছে। কোনও কোনও দোকানে ভিড়ের ঠেলায় ঢুকতে গিয়ে নাকানি চোবানি খেতে হয়েছে ক্রেতাদের। কেউ নববর্ষের কেনা কাটা, কেউ আবার বিয়ে বাড়ির কেনাকাটা সেরে ফেলেছেন সেলের বাজারে। সুভাষ রোডের একটি দোকানে ছোটদের জামা কাপড় কিনতে ঢুকে ঘেমে নেয়ে একসা হয়ে গিয়েছিলেন কাটজুড়িডাঙার বাসিন্দা প্রবাল পাল। তাঁর কথায়, “দোকানের ভিতরটা ভিড়ের ঠেলায় গুমোট হয়ে গিয়েছে। ভিড় হবে অনুমান করেই বিকেল বিকেল কেনাকাটা করতে এসেছিলাম। তাতেই এই অবস্থা!”
গরমে কষ্ট হলেও মুখে হাসি ফুটেছে বিক্রেতাদেরও। এমনিতে ফি রবিবার বাঁকুড়ায় দোকানপাট বন্ধ থাকলেও গত রবিবার থেকেই সেলের বাজার ধরতে বাঁকুড়ায় দোকান খুলে রাখছেন ব্যবসায়ীরা। রানিগঞ্জ মোড়ের রেডিমেড ব্যবসায়ী রামেলা চক্রবর্তীর কথায়, “গত বছর পুজোর সময়কার যে সব মালপত্র রয়ে গিয়েছিল, সেলের বাজারে তার সবই কাটতি হয়ে গিয়েছে। ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়েছি আমরা।” মাচানতলা মোড়ের রেডিমেড ব্যবসায়ী মধুসূদন চন্দ বলেন, “চৈত্রের শুরু থেকেই প্রবল গরম পড়ায় ক্রেতারা কিছুটা কম আসছিলেন। তবে দু’দিন বৃষ্টিতে গরমের তেজ নরম হওয়ায় ক্রেতদের ভিড়ও বেড়েছে।’’ বড়বাজারের রেডিমেড ব্যবসায়ী সুব্রত সেন জানান, এ দিন সকালে টুকটাক বিক্রি হলেও বিকেলে পর তাঁরা ভিড়ের ঠেলায় দম ফেলার ফুরসৎ পাচ্ছেন না।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তীব্র গরম থেকে বাঁচতে বেশির ভাগ ক্রেতাই সূতির জামাকাপড় কিনছেন। অল্পবয়সী মেয়েরা সূতি ও মলমলের কুর্তি এবং ছেলেরা ঢিলেঢালা হাফ হাতা টি-শার্ট বেশি কিনেছেন। কচিকাঁচাদের জন্যও সুতির জিনিসপত্র বেশি বিক্রি হয়েছে।
ফি বছর শহরের পাশাপাশি সংলগ্ন গ্রাম থেকেও ক্রেতারা সেলের কেনাকাটা করতে ভিড় জমান বাঁকুড়ার বাজারে। তবে দাবদাহের জন্য সেলের শুরুর দিকে গ্রামীণ এলাকার ক্রেতাদের অনেকেই বাজারমুখো হননি। যা নিয়ে চিন্তা ছড়িয়েছিল ব্যবসায়ী মহলে। শুক্রবার ও শনিবার দু’দিন বৃষ্টির জেরে তাপমাত্রা অনেকটাই কমেছে। রবিবার তাই সকালের দিকে শহর সংলগ্ন গ্রাম থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড়ই বেশি ছিল। বাঁকুড়ার পোয়াবাগানের বাসিন্দা সুনীল ধীবর বলেন, “চৈত্রসেলে গোটা পরিবার নিয়েই বাঁকুড়ায় বাজার করতে যাই। এ বার তীব্র গরমের জন্য প্রথম দিকে যেতে পারিনি। বৃষ্টি পড়ে তাপমাত্রা একটু কমতেই সকালে গিয়ে বাজার করে এসেছি।” সব মিলিয়ে শেষ রবিবার বাঁকুড়ায় সেলের বাজার দিনভর ছিল গমগমে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy