বিশ্বের সর্বোচ্চ মোটরবাইক চলাচলের উপযোগী বলে পরিচিত গিরিপথ উমলিঙ লা। তা জয় করে ইন্ডিয়ান বুক রেকর্ডসে জায়গা করে নিলেন বাঁকুড়ার দুই কন্যা। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক সুনীতা বাগদী এবং বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা মুন্না পাল অন্য দুই সহযাত্রীর সঙ্গে এই গিরিপথ দখল করেন গত ১৬ অক্টোবর।
চলতি বছরের ৩ অক্টোবর বাঁকুড়া এক্সপ্লোরেশন নেচার একাডেমির সদস্য তথা বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা সুনীতা ও মুন্না অন্য দুই সহযাত্রী শেখ আলিমুদ্দিন (ব্যবসায়ী) ও সুকান্ত পাল(শিক্ষক)কে সঙ্গে নিয়ে আলাদা আলাদা করে বাইকে রওনা দেন উমলিঙ লা গিরিপথের উদ্দেশে। শ্রীনগর, কার্গিল ও লে হয়ে গত ১৬ অক্টোবর প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে বাইক চালিয়ে চার জনে পৌঁছে যান লাদাখের ১৯ হাজার ২৪ ফুট উচ্চতায় থাকা পৃথিবীর সর্বোচ্চ মোটরবাইক চলাচলের উপযুক্ত গিরিপথে। পথে সিয়াচেনের বেস ক্যাম্পও ছুঁয়ে যান তাঁরা। ১৪ দিনের দীর্ঘ বাইক যাত্রা শেষে গত ২৫ অক্টোবর ওই চার অভিযাত্রী সুস্থ শরীরে ফিরে আসেন বাঁকুড়ায়। যুগ্ম ভাবে প্রথম বাঙালি মহিলা অভিযাত্রী দু’চাকায় এই সাফল্য অর্জন করেছে জানতে পেরে এলাকার বাসিন্দারা খুশি হন। বাঁকুড়ার ওই দুই মহিলাকে এই সাফল্যের জন্য স্বীকৃতি দিল ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস। অতি সম্প্রতি তাঁদের কাছে এসে পৌঁছোয় স্বীকৃতিপত্র। এতে উচ্ছসিত দুই মহিলা ও তাঁদের পরিবার।
সুনীতা বলেন, ‘‘এর আগে ২০১৯ সালে পাহাড়ে ট্রেকিং করেছি। কিন্তু অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল বাইক চালিয়ে লাদাখে যাব। সেই সুযোগ আসতেই বাইক কিনে অভিযানে বেরিয়ে পড়ি। অভিযানের শুরুতে একটু ভয় করছিল। পরবর্তীকালে ভয়ের থেকে ইচ্ছা অনেক বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। দলের অন্যেরা প্রতি মূহুর্তে সাহস জুগিয়ে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত আমাদের অভিযান সফল হয়েছে। কোনও দিন ভাবিনি এই কাজের জন্য ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস স্বীকৃতি দেবে। সেই স্বীকৃতির আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। সুযোগ পেলে ভবিষ্যতেও আবার এই ধরনের অভিযানে বেরিয়ে পড়ব।”
আরও পড়ুন:
মুন্না বলেন, ‘‘এই জয় শুধু আমাদের বাঁকুড়ার মেয়েদের নয়, এই জয় সমগ্র রাজ্যের মেয়েদের। অভিযাত্রী দলের মধ্যে আমিই একমাত্র স্কুটার চালিয়ে উমলিঙ লা-তে পৌঁছেছিলাম। আমাদের দলের অন্যেরা সকলেই ছিলেন বাইকে। এক্সপ্লোরেশন নেচার একাডেমির সহায়তা এবং অভিযাত্রী দলের প্রধান আলিমুদ্দিনের উপযুক্ত পরামর্শ না থাকলে এই অভিযান কোনও ভাবেই সম্ভব ছিল না। আমার স্বামী ও ছেলে দু’জনেই এই অভিযানে উৎসাহ জুগিয়েছে। ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস আমাদের অভিযানকে স্বীকৃতি দিয়ে সাফল্যের আনন্দকে অনেকটাই বাড়িয়ে দিল।’’