Advertisement
E-Paper

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত নানুর, পুড়ল বাড়ি

এমনিতে ওই গ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন ঘটনা নয়। আনারুল শেখ এবং হোসেন শেখ-এর গোষ্ঠী বিবাদে গোলাগুলির লড়াইয়ে ওই গ্রাম প্রায়ই তেতে ওঠে। বুধবার রাতে সেই আনারুলেরই বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:০২
ভস্মীভূত: আগুনে পুড়েছে আনারুল শেখের বাড়ি। নানুরে। নিজস্ব চিত্র

ভস্মীভূত: আগুনে পুড়েছে আনারুল শেখের বাড়ি। নানুরে। নিজস্ব চিত্র

কয়েক দিন আগেই এক পক্ষের বাড়ি পুড়েছিল। এ বার পুড়ল অন্য পক্ষের। আর তাই নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী বিবাদে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল নানুরের চণ্ডীপুর গ্রামে। এমনিতে ওই গ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন ঘটনা নয়। আনারুল শেখ এবং হোসেন শেখ-এর গোষ্ঠী বিবাদে গোলাগুলির লড়াইয়ে ওই গ্রাম প্রায়ই তেতে ওঠে। বুধবার রাতে সেই আনারুলেরই বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

দলীয় সূত্রের খবর, আনারুল দলের জেলা যুব সভাপতি গদাধর হাজরার অনুগামী হিসাবে পরিচিত। অন্য দিকে, হোসেন এক সময় দলের প্রাক্তন যুব নেতা কাজলের অনুগামী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের পরে কাজল নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় এলাকায় ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যের অনুগামীদের একটি গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। হোসেন শেখ সেই গোষ্ঠীতেই নাম লেখান বলে তৃণমূল সূত্রেরই খবর।

তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আনারুল আগে সিপিএমের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের পরে গদাধরের হাত ধরে তৃণমূলে ঢোকেন। তার সঙ্গে ঢোকেন সিপিএমের আরও বেশ কিছু কর্মী, সমর্থক। তাঁদের দাপটে হোসেন শেখ তথা আদি তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে উভয়পক্ষের বিবাদ প্রকট হয় বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। কারণ, সুব্রত অনুগামীদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে ওই গ্রাম থেকে আনারুলকে সংশ্লিষ্ট বড়া-সাওতা পঞ্চায়েতের প্রার্থী করে দল। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেও যান। তার পরে গোষ্ঠী বিবাদ প্রকাশ্যে এসে পড়ে। সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচন সংক্রান্ত রায় ঘোষণার দিন তা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

রায়ে জানানো হয় নতুন করে আর ভোট হচ্ছে না। এর পরেই ২৪ অগস্ট বিজয় মিছিল করাকে কেন্দ্র করে পুলিশের উপস্থিতিতে রাতভর উভয়পক্ষের বোমাবাজি চলে। ওই রাতে হোসেন শেখের অনুগামী হিসেবে পরিচিত হিঙ্গুল শেখের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আনারুল অনুগামীদের বিরুদ্ধে। তার পর থেকেই উভয় পক্ষের বেশ কয়েক জন গ্রামছাড়া ছিলেন। দিন তিনেক আগে পুলিশের হস্তক্ষেপে তাদের গ্রামে ফেরানো হয়। গ্রামে ফিরেই ফের আক্রমণের জন্য আনারুলের এক অনুগামীর বাড়িতে বোমা বাঁধা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীর দাবি, খবর পেয়ে পুলিশ রেড করে সেই বাড়ি থেকে কিছু মশলা এবং সুতলি উদ্ধার করে। পুলিশ অবশ্য রেড করার কথা মানলেও ওই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।

হোসেন অনুগামীরাই পুলিশকে ওই খবর জানিয়েছে বলে আনারুল অনুগামীরা ফের হোসেন অনুগামীদের উপরে চড়াও হয়। ফের উভয় পক্ষের বোমাবাজি হয়। তার জেরে রাত দু’টো নাগাদ আনারুলের বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। তার পর থেকেই উভয় পক্ষের পুরুষেরা ফের গ্রামছাড়া হয়ে পড়েছেন। সুব্রতবাবু এবং গদাধর হাজরা অবশ্য কেউই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানেননি। একই সুরে বলেছেন, ‘‘ওই ঘটনায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ কী কারণে ওই ঘটনা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। উত্তেজনা থাকায় গ্রামে পুলিশ টহল চলছে।

Group Clash TMC Nanoor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy