Advertisement
E-Paper

বালির গাড়ি আটকানোয় মার গ্রামবাসীদের, নালিশ ওন্দায়

নিয়মের অতিরিক্ত পরিমাণ বালি নিয়ে যাওয়ায় রাস্তা ভাঙছে বলে অনেকদিন ধরেই বাসিন্দারা অভিযোগ তুলছিলেন। কিন্তু প্রশাসনের ভ্রূক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ তুলে সোমবার রাতে তাঁরা নিজেরাই সাতটি বালিবোঝাই ট্রাক আটকে দিলেন। সেই রাগে পুলিশের সামনেই কয়েক জন অবরোধকারীকে মারধর করা হল বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৫ ০১:১৭
এ  ভাবেই ওন্দার চাপড়াঘাট দ্বারকেশ্বর থেকে বালি তোলা হয়।— ফাইল চিত্র।

এ ভাবেই ওন্দার চাপড়াঘাট দ্বারকেশ্বর থেকে বালি তোলা হয়।— ফাইল চিত্র।

নিয়মের অতিরিক্ত পরিমাণ বালি নিয়ে যাওয়ায় রাস্তা ভাঙছে বলে অনেকদিন ধরেই বাসিন্দারা অভিযোগ তুলছিলেন। কিন্তু প্রশাসনের ভ্রূক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ তুলে সোমবার রাতে তাঁরা নিজেরাই সাতটি বালিবোঝাই ট্রাক আটকে দিলেন। সেই রাগে পুলিশের সামনেই কয়েক জন অবরোধকারীকে মারধর করা হল বলে অভিযোগ।

ওন্দার পাত্রহাটি গ্রামের ওই ঘটনায় পুলিশের অভিযোগ দায়ের করা হলেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত একজনকেও পুলিশ ধরতে পারেনি। তবে পুলিশ সাতটি গাড়ি আটক করেছে। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার অবশ্য পুলিশের সামনে মারধরের দাবি মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা দাবি, “ট্রাক আটকানোর জন্য গ্রামবাসীর সঙ্গে চালকদের বচসা হচ্ছিল। কয়েক জন গ্রামবাসীর সঙ্গে মারপিট হয়। পুলিশ গিয়ে গ্রামবাসীকে উদ্ধার করে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” তবে জেলা প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই দেখতে চাইছে। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়েছে জেলা প্রশাসনিক মহলে। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “পুরো ঘটনাটির প্রেক্ষিতে ব্লক প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছি।”

ওন্দার দ্বারকেশ্বর নদের চাপড়া এলাকার বালিঘাট থেকে বালি তোলাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই পাত্রহাটি, চাপড়া, বহুলাড়ার মতো বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে বালির গাড়ি চালকদের সংঘাত চলছে। অভিযোগ, ওই বালিঘাট থেকে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ বালি বোঝাই করে গ্রামের ভিতর রাস্তা দিয়ে চলাচল করে ভারী ট্রাক। এতে রাস্তা তো ভাঙছেই, আবার দুর্ঘটনাও ঘটছে। গ্রামবাসীর আরও অভিযোগ, সরকারি নিয়ম মেনে বালি তোলা হয় না ওই ঘাটে। নদীর বুকে মেশিন নামিয়ে পাড়ের সামনে থেকে বালি তোলা হয়। ফলে ধীরে ধীরে নদীগর্ভের কাছাকাছি চলে আসছে গ্রামগুলিও।

এই সব ঘটনার প্রতিবাদেই পথ অবরোধে নেমেছিলেন গ্রামবাসী। যার জেরে সাতটি বালি বোঝাই ট্রাক আটকে যায় রাস্তায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে পুলিশও যায়। আন্দোলনকারীদের মধ্যে পাত্রহাটির শুভাশিস হরকরা, রঞ্জিত লায়েকরা বলেন, “ভারী যান চলাচলের জেরে গ্রামের রাস্তার হাল বেহাল। পুলিশকে তা সচক্ষে দেখাতেই আমরা কয়েক জন গ্রামের ভিতরে নিয়ে যাচ্ছিলাম। পুলিশকর্মীরা নিরস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের হাতে লাঠি পর্যন্ত ছিল না।’’ তাঁদের দাবি, গ্রামের দিকে যাওয়ার পথে অন্ধকারে অতর্কিতে কয়েক জন তাঁদের উপর চড়াও হয়। তাদের মারে জখম হন শুভাশিসবাবু, রঞ্জিতবাবু, দিলীপ মণ্ডল, গঙ্গাধর ঘোষদের মতো কয়েকজন। শুভাশিসবাবুর অভিযোদ, “পুলিশের সামনেই আমাদের মারধর করা হল। কিন্তু হাতে লাঠিও ছিল না বলে পুলিশ কর্মীরা কিছুই করতে পারেননি।” যদিও পুলিশের সামনে গ্রামবাসীকে মারধর করা হয়েছে বলে অস্বীকার করেছে জেলা পুলিশ।

রাতেই জখম গ্রামবাসীকে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয় ওন্দা ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। রঞ্জিতবাবুকে সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা করানো হয়। গ্রামবাসীর ক্ষোভ, তাঁরা বহুবার গ্রামে ভারী যানবাহণ চলাচল হচ্ছে বলে প্রশাসনকে জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনও পদক্ষেপ করেনি। ওন্দা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ভবানী মোদকও স্বীকার করেন, “গ্রামের ভিতর দিয়ে ১০ চাকা গাড়ি চলবে না বলে ওন্দা ১ ও ওন্দা ২ গ্রাম পঞ্চায়েত নির্দেশ দিয়েছে মাসখানেক আগেই। অথচ তার পরেও ভারী যানবাহণ চলাচল করছে রাস্তায়।” তাঁরা কেন ব্যবস্থা নেননি। সদুত্তর মেলেনি তাঁর কাছে। তাঁর দাবি, ‘‘অবিলম্বে পুলিশকে এ সব রুখতে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকও স্বীকার করেছেন, “ওই বালি ঘাটটি বৈধ। তবে ওখানে সরকারি নিয়ম মেনে বালি তোলা হচ্ছে না। বৈধ ঘাটের পাশাপাশি একাধিক অবৈধ বালি ঘাটও আশপাশে চালু করা হয়েছে।’’

Onda Villager road police sand Bankura Bankura medical college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy