দমকল কর্মীদের তৎপরতায় বড়সড় অগ্নিকাণ্ড হওয়ার থেকে বাঁচল বিশ্বভারতী।
শুক্রবার রাতের ওই ঘটনার পরে ফের বেআব্রু হয়েছে অরক্ষিত বিশ্বভারতী। রবীন্দ্রভবন ও কলাভবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাঙ্গণের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ঘটেছে ওই অগ্নিকাণ্ড। মাকড়শার জালের মতো জড়িয়ে থাকা বিদ্যুতের তারে ওই আগুন মুহূর্তের মধ্যে আশপাশে ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অবিলম্বে আশ্রম এলাকায় মাটির নীচে বিদ্যুতের তার এবং সংযোগের ব্যবস্থা করুক বিশ্বভারতী, এমন দাবিতে সরব হয়েছে নানা মহল।
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অমিত হাজরা বলেন, “সাম্প্রতিক কালে ট্রান্সফর্মার থেকে বারবার আগুন ধরার ঘটনা ঘটছে। সেই কারণে আমরা ইতিমধ্যেই মাটির নীচে বিদ্যুৎ তারের ব্যবস্থার আর্জি জানিয়েছি। দ্রুত ওই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ রবীন্দ্রভবন ও কলাভবন লাগোয়া নাট্যঘরের পাশের ট্রান্সফর্মার থেকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। তা দেখে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। খবর যায় দমকলে। দমকল কর্মীরা এসে ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, শিক্ষকদের দাবি, দমকল কর্মীরা তৎপরতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে না আনলে ওই আগুন যে কোনও মুহূর্তে লাগোয়া রবীন্দ্রভবন ও কলাভবনের নন্দন গ্যালারিতে ছড়িয়ে যেতে পারত। বোলপুরের দমকল কেন্দ্রের ওসি শঙ্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “কোনও ভাবে তার পুড়ে গিয়ে ট্রান্সফর্মারটিতে আগুন ধরেছিল। সময়ে নেভানো সম্ভব হওয়ায় অঘটন এড়ানো গিয়েছে।’’
ঘটনা হল, লাগোয়া বোলপুরে মাটির তলায় বিদ্যুৎ তার বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। অথচ বিশ্বভারতীর বহু এলাকাতেই জালের মতো বিদ্যুতের তার ছড়িয়ে রয়েছে। ওই ঘটনাস্থল থেকে কোনও তার রবীন্দ্রভবন দিয়ে উত্তরায়ণ চত্বরে গিয়েছে, আবার কলাভবনের নন্দনেও গিয়েছে। বিশ্বভারতীর বহু ঐতিহ্যবাহী ভবন এবং দুর্মূল্য সম্পদ থাকা এমন একাধিক এলাকায় এ ভাবেই বিপজ্জনক ভাবে আছে কয়েকশো বিদ্যুতের খুঁটি, তার ও ট্রান্সফর্মা। সময় অসময়ে এমন ঘটনা ছাড়াও প্রায় প্রতি বছরই ঝড়-জলের সময়ে গাছ পড়ে বিশ্বভারতীর বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়। সাম্প্রতিক অতীতে দর্শন সদনের লাগোয়া এলাকা থেকে শর্ট সার্কিটের আগুন লেগে পুড়েছে পাশের জঙ্গল। আবার কখনও বিনয় ভবনের পাশ থেকে ট্রান্সফর্মারের আগুনে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের মধ্যে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। তাই দ্রুত মাটির নীচে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না হলে, বড়সড় বিপদের আশঙ্কা করছে বিশ্বভারতী নানা মহল।