Advertisement
E-Paper

বন বাঁচাতে প্রাচীর হবে সোনাঝুরিতে

অনুমতি ছাড়াই বন দফতরের জমিতে সাত দিনই বসছিল হাট। তাতে শান্তিনিকেতনে বিপন্ন হচ্ছিল সোনাঝুরি বনের পরিবেশ। তাই এ বার বন বাঁচাতে ওই এলাকা প্রাচীর দিয়ে ঘেরার সিদ্ধান্ত নিল জেলার বন দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৫৩
নির্মাণ: সোনাঝুরিতে চলছে প্রাচীর তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র

নির্মাণ: সোনাঝুরিতে চলছে প্রাচীর তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র

অনুমতি ছাড়াই বন দফতরের জমিতে সাত দিনই বসছিল হাট। তাতে শান্তিনিকেতনে বিপন্ন হচ্ছিল সোনাঝুরি বনের পরিবেশ। তাই এ বার বন বাঁচাতে ওই এলাকা প্রাচীর দিয়ে ঘেরার সিদ্ধান্ত নিল জেলার বন দফতর।

বীরভূম বন বিভাগের বোলপুরের রেঞ্জার নির্মল কুমার বৈদ্য বলেন, “অভয়ারণ্য লাগোয়া জঙ্গলের পরিবেশ এবং সংরক্ষিত এলাকা যাতে স্বাভাবিক নিয়মে থাকে তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। শুক্রবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। চিহ্নিত বন দফতরের জায়গায়, বেড়া দেওয়ার কাজ হবে। আমাদের জমিতে কোনও বেআইনি নির্মাণ হয়েছে কিনা সেও দেখা হবে।” তবে সোনাঝুরি জঙ্গলকে ঘিরে খাস জমিতে বসা পুরনো হাটটি আগের মতোই বসবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। বন দফতর হঠিয়ে দেওয়ায় জঙ্গলে বসা হাটগুলি আপাতত রাস্তার ধারে পূর্ত দফতরের জায়গায় নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে।

শান্তিনিকেতনের বল্লভপুর অভয়ারণ্য ঘেঁষা এলাকায় রয়েছে সোনাঝুরি জঙ্গল। ওই জঙ্গলে দেড় দশকের বেশি বসছে হাট। বছর চারেক ধরে ওই হাটের পাশাপাশি আরও দুটি হাট বসছে। একরকম রোজই ওই হাটগুলিতে হাজার লোকের আনাগোনা। পাশাপাশি কয়েকশো গাড়ি আসাযাওয়া করে ওই এলাকায়। স্বাভাবিক ভাবেই অভয়ারণ্য এবং সংরক্ষিত এলাকার পরিবেশ দিনকে দিন বিঘ্নিত হচ্ছিল। বন দফতরের এক কর্তার কথায়, এমনও হয়েছে মাঝ রাতে বন দফতর এবং পুলিশ গিয়ে জঙ্গলের মধ্যে আলো এবং তারস্বরে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করেছে। বছর খানেক বন্ধ থাকার পর ফের রমরমিয়ে শুরু হয়েছে সংরক্ষিত এলাকায় সেই অত্যাচার। একইসঙ্গে বনকে ঘিরে নিত্য নতুন গজিয়ে উঠেছে লজ-হোটেল। এরপরেই মাঠে নামে বনদফতর।

প্রথমে অনুরোধ-আবেদনে কাজ না হওয়ায়, জমি চিহ্নিতকরার কাজ শুরু হয়েছিল মাস খানেক আগে। তাতে অবশ্য টনক নড়েনি। আর তাই বেদখল হওয়ার আশংকায়, নিজের জমি বাঁচাতে সরাসরি মাঠে নামে বন দফতর। সংরক্ষিত এলাকাকে ‘স্বাভাবিক’ রাখতে, শনিবার থেকে বন দফতরের জমিতে ঘেরা দেওয়ার কাজ শুরু হল। এলাকার পরিবেশ কর্মীদের একাংশের দাবি, সংলগ্ন একাধিক ঝিলে, ফি বছর পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা কমছে। তার অন্যতম একটি কারণ এখানকার কোলাহলের পরিবেশ। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বার কয়েক বন দফতরের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। বলছেন, ‘‘বন দফতরের জমি সংলগ্ন এলাকায় গড়ে ওঠা একাধিক হোটেল এবং লজ। স্বাভাবিক কারণে, ওই এলাকায় মানুষের পাশাপাশি বেড়েছে নানা যানবাহনের আনাগোনা। এতে বনের পরিবেশ আরও নষ্ট হচ্ছে।’’

শুক্রবার থেকেই জমিতে গড়ে ওঠা একাধিক বসার জায়গা ভাঙা থেকে শুরু করে জমির সীমানা চিহ্নিত করে মাটি কাটার কাজও শুরু হয়েছে। বন দফতরের এমন উদ্যোগে অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই খুশি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। এক কর্তার কথায়, “শনি এবং রবিবার ছাড়াও ফি দিন ওই এলাকায় যে হারে জন সমাগম হত, বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। এ বার অনেকটা রোখা যাবে।’’

সূত্রের খবর, বিধি মেনে ওই এলাকায় নির্মাণ কাজ হয়েছে কি না তাও তদন্ত করে দেখছে প্রশাসন। এ ব্যাপারে নানা অভিযোগ রয়েছে।

Sonajhuri forest Wall
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy