Advertisement
E-Paper

বাজি দশটায় শেষ, প্রচারে জেলা পুলিশ

আদালতের নির্দেশ মতো সচেতনতা বাড়াতে আগেই পঞ্চায়েত সদস্য ও কাউন্সিলরদের থেকে সহযোগিতা চেয়েছিল পুলিশ। প্রচার জোরদার করতে এ বার সোশ্যাল মিডিয়াকেও হাতিয়ার করেছে জেলা পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
বার্তা: সোশ্যাল মিডিয়ায় জেলা পুলিশের প্রচার। নিজস্ব চিত্র

বার্তা: সোশ্যাল মিডিয়ায় জেলা পুলিশের প্রচার। নিজস্ব চিত্র

আটটার বাজি দশটায় শেষ, দীপাবলি কাটুক সবার বেশ...

বীরভূম পুলিশ কন্ট্রোল রুমের দুটি নম্বর দিয়ে নিজস্ব সাইট, ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পুলিশের তরফে যে প্রচার চলছে তার ক্যাচলাইন এটাই। সঙ্গে লেখা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, চলতি বছরের দেওয়ালিতে কেবল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত অনুমোদিত বাজি ফটানো যাবে। অন্যথা হলে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

আদালতের নির্দেশ মতো সচেতনতা বাড়াতে আগেই পঞ্চায়েত সদস্য ও কাউন্সিলরদের থেকে সহযোগিতা চেয়েছিল পুলিশ। প্রচার জোরদার করতে এ বার সোশ্যাল মিডিয়াকেও হাতিয়ার করেছে জেলা পুলিশ। তবে নিয়ম না মানলে শাস্তি যে অনিবার্য তা স্পষ্ট করেছেন জেলা পুলিশ সুপার কুণাল আগরওয়াল। তিনি বলছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় যে প্রচার চলছে, সেই একই কথা আমরা মাইকে এবং থানায় ফ্লেক্স ছাপিয়ে প্রচার করছি। নিয়ম ভাঙলে সত্যিই রেয়াত করা হবে না কাউকে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’’

ঘটনা হল, নির্দিষ্ট শব্দসীমার ঊর্ধ্বে শব্দবাজি আগেই নিষিদ্ধ করেছিল আদালত। দূষণ রুখতে বাজির ব্যবহারে বেশ কিছু বিধিনিষেধও আরোপ করেছে সর্বোচ্চ আদালত। বেঁধে দেওয়া হয়েছে বাজি পোড়ানোর সময়সীমা। আদালত বলেছে, কালীপুজো ও দেওয়ালিতে রাত আটটা থেকে দশটা পর্যন্তই অনুমোদিত বাজি পোড়ানো যাবে। পরে অবশ্য তামিলনাডু সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে শীর্ষ আদালত রায় কিছুটা সংশোধন করে। সময়সীমা না বাড়ালেও রাজ্যকে সময় পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কালীপুজো ও দেওয়ালি রাতে হওয়ায় এ রাজ্যে সময় পরিবর্তিত হয়নি।

তবে দুর্গাপুজোর তুলনায় কালীপুজোয় বাজি ফাটানোর হিড়িক জেলায় কিছুটা কম। তবে বিগত বছরগুলিতে কালীপুজো ও দেওয়ালির দিন দেদার শব্দবাজি ও আতসবাজি ফেটেছে। আদালতের নির্দেশ বা পুলিশের নজরদারি কারণ যাই হোক মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজির দাপট কিছুটা হলেও কম বলেই জেলাবাসীর একটা বড় অংশের মত। ‘‘সন্ধ্যা থেকে বেশ কিছু শব্দবাজির আওয়াজ কানে এলেও দুবরাজপুর ও সিউড়িতে সেটা তুলনায় কম’’— বলছেন এলাকাবাসীও।

একই অভিজ্ঞতা বাজি বিক্রেতাদেরও। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায় ২০ বছর ধরে বাজি বিক্রি করছেন সুবোধ সিংহ। তিনি বলছেন, ‘‘শব্দবাজি নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই চুরি করে বাজি বিক্রি করা ছেড়ে দিয়েছি। আদালত সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় বাজার এ বার ভাল নয়। শেষবেলায় কিছু আতসবাজি বিক্রি হয়েছে।’’ একই কথা বলছেন দুবরাজপুরের বাজি বিক্রেতা দুলাল দে। দুলালের সংযোজন, ‘‘ইতিমধ্যেই পুলিশ বার কয়েক আমার দোকানে টহল দিয়ে গিয়েছে। এত কড়াকড়ি থাকলে কী আর বাজি বিক্রি হয়।’’

রামপুরহাটেও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজির দাপট তেমন চোখে পড়েনি। তবে সকাল থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে ডিজে বক্স-এর দাপট শোনা গিয়েছে। একই ছবি ছিল বোলপুর শহরেও। জেলার এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘দুর্গাপুজোর সময় অনেক শব্দবাজি আটক হয়েছিল। কালীপুজোতে তল্লাশির পরেও সে রকম শব্দবাজি পাওয়া যায়নি।’’ মাইক ব্যবহারের বিষয়টিও নজরে রাখার কথা জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্তা। নলহাটি, রামপুরহাট শহরে শব্দবাজি সেই অর্থে না ফাটলেও গ্রামাঞ্চলে এখনও শব্দবাজির দৌরাত্ম্য আছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

যদিও ব্যবহারকারীদের একাংশ মানছেন, বাজি যে ফাটাবে সে আগেই কিনে রেখেছে। এঁদের এক জনের কথায়, ‘‘যত কড়াকড়ি থাকুক, সময় মেনে বাজি ফাটানো সম্ভব নয়। উৎসবের দিন একটু এ দিক ও দিক হতেই পারে।’’ আবার কারও আবার টিপ্পনি, ‘‘এখন তো সবে সন্ধ্যে। আস্ত রাত পড়ে আছে। দেখাই যাক কী হয়!’’

Bolpur Siuri Sound Crackers Pollution Diwali
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy