Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ইন্দিরা আবাসে ‘দুর্নীতি’

যার দরকার সেই গরিব মানুষটি পাচ্ছেন না। উল্টে উপযুক্তদের বঞ্চিত করে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে বেছে বেছে শাসক দলের সমর্থকদের ঘর পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। ওই অভিযোগ তুলে ঘটনার বিহিত চেয়ে মঙ্গলবার বিডিও অফিসে জমায়েত করে প্রতিবাদ জানালেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা।

ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক অফিসের সামনে বিক্ষোভ বিজেপির। ছবি: অনির্বাণ সেন।

ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক অফিসের সামনে বিক্ষোভ বিজেপির। ছবি: অনির্বাণ সেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০৩
Share: Save:

যার দরকার সেই গরিব মানুষটি পাচ্ছেন না। উল্টে উপযুক্তদের বঞ্চিত করে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে বেছে বেছে শাসক দলের সমর্থকদের ঘর পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। ওই অভিযোগ তুলে ঘটনার বিহিত চেয়ে মঙ্গলবার বিডিও অফিসে জমায়েত করে প্রতিবাদ জানালেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। ওই অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে পঞ্চায়েত ও ব্লকে ই-টেন্ডার চালু-সহ এগারো দফা দাবি জানিয়ে বিজেপি-র পক্ষ থেকে ময়ূরেশ্বর ১ বিডিও-কে একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হল। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিজেপি-র এই কর্মসূচিকে ঘিরে এ দিন ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক প্রশাসন চত্বরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল।

এ দিন বিজেপি কর্মীরা মল্লারপুর বায়না মোড় থেকে মিছিল করে ব্লক অফিস চত্বরে ঢোকেন। সেখানে কিছু ক্ষণ জমায়েত করে বিভিন্ন বক্তা তৃণমূল পরিচালিত ময়ূরেশ্বর ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। বিজেপি-র ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর মণ্ডল কমিটির সভাপতি অতনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে শুধুমাত্র রাজনীতি করে বেছে বেছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদেরই নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ‘পি-১’ ক্যাটাগরির পরিবারগুলিকে বঞ্চিত করে ‘পি-২’ তালিকাভুক্তদের নামে ওই প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে।” তাঁর অভিযোগ, শাসক দলে নিজের কর্মী-সমর্থকদের খুশ রাখতেই এমনটা করছে। এ দিনের কর্মসূচিতে হাজির বিজেপি-র কিসান মোর্চার জেলা সভাপতি ব্রজগোপাল মণ্ডলের অভিযোগ, নিজভূমি নিজগৃহ প্রকল্প, আমার ঠিকানা, গীতাঞ্জলি সমস্ত সরকারি প্রকল্পেই তৃণমূল উপভোক্তা নির্বাচনে দলবাজি করেছে। বিজেপি-র আরও অভিযোগ, ‘নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পে’ যাঁদের শৌচালয় নেই, তাঁদের কাছে প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছচ্ছে না। উল্টে যাঁদের ঘরে ইতিমধ্যেই শৌচালয় রয়েছে, তাঁদের ফের প্রকল্পের টাকা দিয়ে তৃণমূল টাকা নয়ছয় করছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

বিজেপি-র তোলা সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “১০০ দিন প্রকল্পে টাকার জোগান দিতে না পেরে শ্রমিকদের কাজের অধিকার খর্ব করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এর ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। উল্টে তাঁদের দলের নেতা-কর্মীরা যখন কিছু না বুঝেই স্মারকলিপি দেয়, তখন সেটা একটা হাস্যকর ব্যাপার হয়েই দাঁড়ায়।” তাঁর দাবি, সব রকমের সরকারি গাইডলাইন মেনেই পঞ্চায়েত সমিতির কাজ চলছে। এ ক্ষেত্রে কেবল মাত্র দক্ষিণগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ‘পি-২’ তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিকে ইন্দিরা আবাস যোজনায় টাকা দেওয়া হয়েছে। ধীরেন্দ্রনাথবাবু দাবি করেন, “দক্ষিণগ্রাম পঞ্চায়েতের আগের বিজেপি প্রধান জেলাপরিষদকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, এলাকায় আর ‘পি-১’ তালিকাভুক্ত পরিবার নেই। তাই তত্‌কালীন জেলাপরিষদের অনুমোদিত তালিকা নিয়ে ওই এলাকার ‘পি-২’ তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হচ্ছে।” এ ক্ষেত্রে কোনও রকমের ‘দলবাজি’ হয়নি বলেই তাঁর দাবি। এ দিকে, পঞ্চায়েতের আগের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অন্য দিকে, ময়ূরেশ্বর ১ বিডিও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, “স্মারকলিপিতে উল্লিখিত বিষয়গুলি বিস্তারিত ভাবে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে দুর্নীতির ক্ষেত্রে অভিযোগকারীদের সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ দিতে বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

indira awas yojna corruption mayureswar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE