Advertisement
E-Paper

কর্মী সঙ্কট জেলা কৃষি বিপণন দফতরে

দক্ষিণ পুরুলিয়ার থানাগুলি হয়ে ঝাড়খণ্ডে আলু পাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পাচারের অভিযোগে মাঝে মধ্যে আলু বোঝাই ট্রাকও আটক করছে পুলিশ-প্রশাসন। দিন কয়েক আগে আদ্রা ও সাঁওতালডিহিতে মোট ২৩টি আলু বোঝাই ট্রাক আটক করা হয়েছিল। এর আগেও অন্য এলাকায় বহু ট্রাক আটক করা হয়েছিল। তবে পাচার হওয়া গাড়ির তুলনায় তা শতাংশে আসে না বলে মনে করছেন অনেকেই।

সমীর দত্ত

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৪৪

দক্ষিণ পুরুলিয়ার থানাগুলি হয়ে ঝাড়খণ্ডে আলু পাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পাচারের অভিযোগে মাঝে মধ্যে আলু বোঝাই ট্রাকও আটক করছে পুলিশ-প্রশাসন। দিন কয়েক আগে আদ্রা ও সাঁওতালডিহিতে মোট ২৩টি আলু বোঝাই ট্রাক আটক করা হয়েছিল। এর আগেও অন্য এলাকায় বহু ট্রাক আটক করা হয়েছিল। তবে পাচার হওয়া গাড়ির তুলনায় তা শতাংশে আসে না বলে মনে করছেন অনেকেই।

সরকারি নিয়ম বলছে, আলুর ব্যবসাদাররা স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আলু এনে পুরুলিয়ার বাজারে বিক্রি করতে পারেন। তবে এ জন্য তাকে আগেই স্থানীয় থানায় জানিয়ে টোকেন নিতে হবে। আলু নিয়ে ফেরার পথে তাঁকে কোনও থানা আটক করলে তিনি টোকেন দেখাতে পারেন অথবা উল্লিখিত ঠিকানার থানাকে জানিয়ে ছাড় পেতে পারেন। সরকার নির্ধারিত আলুর দাম কেজি প্রতি ১৪ টাকা। বাজারে আলুর দাম ২০ থেকে ২৪ টাকা। আলুর ‘কালোবাজারি’ রুখতে নজরদারি চালান কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকেরা। পুলিশ কোথাও আলুগাড়ি আটক করলে আধিকারিকের পরামর্শ মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। ভুয়ো চালান অথবা ঠিকানায় গরমিল থাকলে সেই গাড়িকে হিমঘরের ঠিকানায় ফেরত পাঠানো হয় এটাই নিয়ম। কিন্তু দফতরের আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, ২০০ বস্তার একগাড়ি আলু লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের বাজারে পৌঁছতে পারলে আনার খরচ ও অন্যান্য হিসেব বাদ দিয়েও ২৫-৩০ হাজার টাকা লাভ থাকে। ঝাড়খণ্ডে বর্তমানে বিভিন্ন বাজারে ২৮-৩২ টাকা কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে। এই গাড়ি ওড়িশার বাজারে ফেলতে পারলে লাভ দ্বিগুন হয়ে যায়। ফলে একাংশ ব্যবসায়ী বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

পুরুলিয়া জেলা কৃষি বিপণন আধিকারিক সুধীর মাঝি অবশ্য বলেন, “বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়া ঢোকার সব পয়েন্টে নজরদারি চালানোর মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই। পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে হয়। জেলায় দফতরে আধিকারিক থাকার কথা ১৪ জন। সেখানে জেলা আধিকারিক-সহ মোট আধিকারিক রয়েছেন মাত্র ৫ জন। এ ছাড়া তিন জন করণিক আছেন।” বান্দোয়ান, বরাবাজার, বোরো, পুঞ্চা, কেন্দা এই থানাগুলির কৃষি বিপণন আধিকারিকের দায়িত্বে রয়েছেন দীনবন্ধু রুহিদাস। দীনবন্ধুবাবু বলেন, “আলু পাচার রুখতে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছি। মূলত বাঁকুড়া হয়ে এই থানা এলাকা দিয়ে ঝাড়খণ্ডের দূরত্ব কম হয়। বেশিরভাগ আলু পাচারকারী এই রাস্তা বেছে নিয়েছে।” দফতরের এক আধিকারিকের অভিযোগ, আলু পাচারে ব্যবসায়ীদের একাংশের সঙ্গে পুলিশের একাংশের যোগ রয়েছে। কোনও বাজারে যেখানে গড়ে মাসে ১০ থেকে ১২ গাড়ি (২০০ বস্তার) আলুর জোগান ছিল। ওই বাজারে এখন ব্যবসায়ীরা ৫০ থেকে ৬০ গাড়ি আলু আনছেন। থানায় চালান কাটার সময় তিনি আদৌ আলু ব্যবসা করেন কি না, করে থাকলে ইতিপূর্বে স্থানীয় বাজারে কত আলু আনতেন এগুলো দেখা হয় না। তিনি আরও বলেন, দেখা গিয়েছে, পুলিশ অফিসারকে আলুর কারবারে দুর্নীতি করার অভিযোগে কয়েক মাস আগে ক্লোজ করা হয়েছে। আবার থানায় দায়িত্বে এসে আটক হওয়া আলুর বিলি বন্টনের মূল দায়িত্ব সামলাচ্ছেন এমন নজিরও আছে। আলুর লাভে রাজনৈতিক দলের নেতার্মীরা পিছিয়ে নেই বলেও অভিযোগ উঠছে।

এ দিকে, ভিন রাজ্যে আলু নিয়ে যাওয়া আটকাতে টাস্ক ফোর্স গঠিত হলেও জেলার বাজারগুলিতে তাদের দেখা মেলে না বলে অভিযোগ। যদিও জেলায় ডিইবির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিই। কয়েকটি বাজারে অভিযান চালানো হয়েছে। সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে আমাদের আবেদন, আলু পাচার হলে আমাদের জানান। আমরা দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।”

district agricultural marketing staff crisis samir dutta manbajar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy