Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

গলা কেটে খুন নিখোঁজ বালককে

এক বালকের মুন্ডু ও ধড় আলাদা ভাবে উদ্ধার করল মানবাজার থানার পুলিশ। মানবাজার ও কেন্দা থানার সীমানায়, মানবাজারের পুটকাডি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে একটি শুকনো খাল থেকে রবিবার সন্ধ্যায় দেহটি উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত বালকের নাম গুরুপদ মাহাতো (১০)। বাড়ি বরাবাজারের বান্দোয়ান-বানজোড়া পঞ্চায়েতের কাঁদোয়া গ্রামে। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের দেহ ও মুন্ডু শনাক্ত করেন গুরুপদর বাবা হাসু মাহাতো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০০:৫৯
Share: Save:

এক বালকের মুন্ডু ও ধড় আলাদা ভাবে উদ্ধার করল মানবাজার থানার পুলিশ। মানবাজার ও কেন্দা থানার সীমানায়, মানবাজারের পুটকাডি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে একটি শুকনো খাল থেকে রবিবার সন্ধ্যায় দেহটি উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত বালকের নাম গুরুপদ মাহাতো (১০)। বাড়ি বরাবাজারের বান্দোয়ান-বানজোড়া পঞ্চায়েতের কাঁদোয়া গ্রামে। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের দেহ ও মুন্ডু শনাক্ত করেন গুরুপদর বাবা হাসু মাহাতো।

রবিবার বিকেলে এক বালকের দেহ জঙ্গলে পড়ে আছে বলে মানবাজার থানায় খবর আসে। থানা থেকে প্রায় ২৮ কিমি দূরে ওই গ্রামের উদ্দেশে পুলিশ রওনা দেয়। পুটকাডি গ্রাম থেকে বেশ খানিকটা দূরে জঙ্গলে ঘেরা জায়গায় দেহের হদিস মেলে। পুলিশ সূত্রের খবর, জঙ্গলের মাঝে জলের খাত। এখন সেখানে বড় বড় পাথরের চাতাল। একটি চাতালের উপরে গুরুপদর মুন্ডুহীন দেহ পড়েছিল। পরনে কালচে রঙের জিনসের প্যান্ট আর রঙ্গিন গেঞ্জি। সস্তার একজোড়া চপ্পল পড়ে পাশে। দেহ থেকে হাত দশেক দূরে ধুলোর মধ্যে পুলিশ মুন্ডু খুঁজে পায়। পুরো চাতাল জুড়ে শুকনো রক্তের দাগ। খানিকটা দড়িও ছিল। পুলিশের সন্দেহ, ওই দড়ি দিয়ে সম্ভবত বালকের হাত বাঁধা ছিল। দেহে পচন ধরেছে। তাই ছেলেটিকে অন্তত দু-তিন দিন আগে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান।

বরাবাজার থানা সূত্রের খবর, কাঁদোয়ার বাসিন্দা, পেশায় চাষি হাসু মাহাতো ১৮ মে লিখিত অভিযোগে জানান, ১৫ মে (বৃহস্পতিবার) থেকে তাঁর ছেলে গুরুপদর খোঁজ মিলছে না। তিনি বিকেলে কাজ থেকে ফিরে গুরুপদকে দেখতে পাননি। বাড়ির কেউ তার সন্ধান জানাতে পারেনি। শুক্র ও শনিবার দু’দিন বিভিন্ন আত্মীয় বাড়িতে খোঁজ চালিয়েও সন্ধান না মেলায় শেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন হাসুবাবু। পুলিশকে তিনি জানান, গুরুপদর নিখোঁজ হওয়ার পিছনে তাঁর বড় ছেলে গঙ্গাধরের হাত থাকতে পারে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বছর তেইশের গঙ্গাধর হাসুবাবুর প্রথম পক্ষের ছেলে। উনিশ বছর আগে প্রথম স্ত্রী সংসার ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলে হাসুবাবু দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর চার ছেলের মধ্যে গুরুপদ সেজো। গঙ্গাধর গুরুপদকে পছন্দ করে না। ছোটখাটো কারণেও ওই যুবক সৎ ভাইকে মারধর করত বলে পুলিশ জেনেছে।

গঙ্গাধরকে সন্দেহ করার কারণ হিসাবে হাসুবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, গঙ্গাধর টাটায় এক দোকানে অস্থায়ী কর্মীর কাজ করে। বৃহস্পতিবার অনেক রাতে সে বাড়িতে এসেছিল। শুক্রবার সকালে তাকে গুরুপদর বিষয়ে খোঁজ নিতে বললে সে তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে যায়। তারপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ। বরাবাজারের কাঁদোয়া গ্রাম থেকে মানবাজারের পুটকাডি গ্রামের দূরত্ব জঙ্গলপথে ৭ কিমি।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, এই হত্যাকাণ্ডে একাধিক লোকের হাত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রাম থেকে কী ভাবে গুরুপদকে তুলে আনা হয়েছে, খুনের উদ্দেশ্যই বা কী, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। সোমবার বাচ্চা ছেলেটির দেহের ময়না-তদন্তের জন্য মানবাজার থেকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ আশা করছে, গঙ্গাধরের খোঁজ মিললে অনেক তথ্য জানা যাবে। আপাতত বরাবাজার থানা একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “খুনের ঘটনায় এক জনের নাম পাওয়া গেছে। তার খোঁজ চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

manbazar mudder gurupada mahato
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE